Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

বুড়ো সবসময় ঠিক কাজটি করে

হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এন্ডারসন

রুপান্তরঃ এই সব দিন রাত্রি

আজ তোমাদের একটা গল্প শোনাবো। আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম তখন আমার মা আমাকে এই গল্পটা বলেছিল। যখনই আমি গল্পটা নিয়ে ভাবি তখনি এটা আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে আমার কাছে। কিছু কিছু গল্প আসলে কিছু বিশেষ মানুষের মত, যত পুরোনো হয়; তত তার আকর্ষণ বাড়তে থাকে!

তোমরা গ্রামের বাড়িতে কুঁড়েঘর নিশ্চয়ই দেখেছ; ঐ যে খড়ের চালা, শোলার বেড়া, চালের উপর  লতাপাতার জঙ্গল! তার মধ্যে বাসা বেধে থাকে একটা বক! কুঁড়েঘরের সাথে একটু বাড়তি অংশে ঘেরা দেয়া মাটির চুলো। পুরো ঘরটার উপরে ছায়া হয়ে বেড়ে ওঠা ছাতিম গাছ। কোনে একটা ছোট্ট পানির আধার, মা হাঁস তার বাচ্চাদের নিয়ে যেখানে আনন্দে সাতার কাটে! লালু নামের একটা কুকুর; সে কুঁড়েঘরের সামনের উঠোনে বসে থাকে, আর কেও বাসায় এলেই চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় তোলে! অনেক অনেক দিন আগে, ঠিক এই রকম একটা কুঁড়েঘরেই থাকত এক বুড়ো কৃষক আর তার বউ! বুড়োর নিজের কোনও জমি ছিল না। জোয়ান বয়সে অন্যের জমি চাষ করে সে দিন চালাত। বুড়ো বুড়ির কোনও সন্তান ছিল না, কিন্তু এ নিয়ে তাদের তেমন কোনও আক্ষেপ করতে কেও দেখেনি। আসে পাশের সবাই তাদেরকে সুখী দম্পতি হিসেবে জানত। তাদের নিজের বলতে ছিল একটা ঘোড়া। ঘোড়াটাকে বুড়ো ঠিক মত খাবার দিতে পারতনা । রাস্তার পাশের ঘাস লতা পাতা খেয়ে কোনমতে বেঁচে থাকত বেচারা। বুড়ো ঘোড়ার পিঠে চড়ে এদিক ওদিক যাওয়া আসা, বাজার সদাই এইসব কাজ সারত। প্রতিবেশিরা মাঝে মাঝে বুড়োর কাছে থেকে ঘোড়াটা ধার নিত; বিনিময়ে তারা বুড়োর টুকটাক কাজ করে দিত। কিছুদিন পর কৃষক দম্পতি ভাবল ঘোড়াটা শুধু শুধু না পুষে বিক্রি করে দিলে যদি হাতে কিছু টাকা আসত তবে মন্দ হত না। অথবা বিক্রি না করে কোনও কিছুর সাথে যদি বদলে নেয়া যেত, তাহলেও বা দোষের কি? কিন্তু, কিসের সাথে বদলে নিলে ভালো হবে?

-ও বউ, বলতো, এই ঘোড়াটা বদলিয়ে কি নেয়া যায়?

-তুমিই ভালো জানো প্রিয়তম; আজকে তো হাঁটবার। ঘোড়াটা নিয়া যাও, বিক্রি করতে পারো, অদলবদলও করতে পারো। তোমার যেটা ভালো মনে হয়, আমার কোনও আপত্তি নাই! আমার বিশ্বাস তুমি ভুল কিছু করবে না।

সেটাই ঠিক হল, বুড়ো হাঁটে যাবে ঘোড়াটাকে নিয়ে। বুড়ি অনেক খুঁজে বুড়োর একমাত্র ফুটো ছাড়া জামাটা বের করলও। এই জামাটা পরেই বুড়ো বিয়ে করতে গিয়েছিল; সেই কবেকার কথা। বুড়ির চোখে পানি আসে। এতগুলো বছর তারা একসাথে। বুড়োকে ছাড়া খুব বেশি সময় একলা থাকতে বুড়ির মন সায় দেয় না।  চোখ মুছে সে বুড়োর জামার বোতাম গুলো লাগিয়ে দেয়।

বুড়ো ঘর থেকে বের হবার সময় বলে, আসি!

-এসো!

বুড়ো ঘোড়ার পিঠে চড়ে হাঁটের উদ্দ্যশ্যে রওনা হল। যতক্ষণ দেখা যায়, বুড়ি তাকিয়ে রইল বুড়োর পথের দিকে।

আকাশে গন গনে সূর্য, মেঘের ছিটেফোটা নেই কোথাও। রাস্তায় অনেক ধুলো। অনেক মানুষ হাঁটে যাচ্ছে আজ; কেউ হেঁটে, কেউ গরুর গাড়িতে! সূর্যের তীক্ষ্ণ উত্তাপ থেকে রেহাই ছিল না কারোই। এর মাঝেই ক্লান্ত বিধ্বস্ত একজন একটা গরু নিয়ে হাঁটের দিকে যাচ্ছিল। গরুটা দেখতে খুবই সুন্দর, অন্য যেকোনো গরু থেকে একেবারেই আলাদা। 

বুড়ো নিজের মনেই বলে উঠল, গরুটা নিশ্চিত অনেক দুধ দেবে। এটার সাথেই ঘোড়াটাকে অদলবদল করতে পারলে বেশ হত।

-এই যে ভাই, শুনছেন!

-আমাকে বলছেন দাদু!

-হ্যাঁ। আপনাকেই বলছি; আমি জানি একটা ঘোড়ার দাম গরুর চেয়ে বেশি। কিন্তু গরুটাই আমার বেশি কাজে লাগবে। আপনি রাজি থাকলে আসুন আমরা অদল বদল করে ফেলি!

-এত খুবই ভালো প্রস্তাব দাদু, আমার কোনও সমস্যা নেই!

গরুওয়ালা খুশি মনে বুড়োকে গরু বুঝিয়ে দিয়ে ঘোড়া নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। বুড়োরও ফেরা উচিৎ ছিল। কারণ যে ব্যাবসা করতে বুড়ো বের হয়েছিল, সেটা তো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বুড়ো বাড়ি থেকে মনস্থির করে এসেছিল, আজ হাঁটে যাবেই। গরুটাকে নিয়ে বুড়ো আবার হাঁটতে লাগল। অল্প কিছুক্ষণ পরে বুড়ো দেখল একটা লোক একটা মোটাসোটা ভেড়া নিয়ে যাচ্ছে। ভেড়াটার শরীর ভর্তি পশম।

বুড়ো নিজের মনেই বলল, আরে, এই ভেড়াটাই তো দরকার! আমাদের বাড়ির পেছনে প্রচুর ঘাস রয়েছে। ভেড়াটার জন্যে আলাদা করে খাবার কিনতে হবে না। আর শীতের সময় এটাকে ঘরের ভেতরেও রাখা যাবে। গরুটার জন্যে একটা গোয়াল ঘর বানাতে হত! গরুর চেয়ে ভেড়া রাখাটা বেশি লাভজনক হবে। অদল বদল করেই ফেলব কি? একটু দোটানায় পরে গেল বুড়ো।

শেষমেশ বুড়ো গরুটার বদলে ভেড়াটাকেই নিল। ভেড়ার মালিক বেশ খুশি মনে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। বুড়ো মনে মনে ভাবল, বুড়ি বেশ খুশি হবে ভেড়াটা পেলে।

বুড়ো হাঁটছে, হাটের রাস্তা আর ফুরায় না। কিছুক্ষণ পর বুড়ো দেখল মাঠ থেকে একটা লোক একটা রাজহাঁস কোলে নিয়ে রাস্তায় উঠছে।

-ও ভাই, আপনার রাজহাঁসটাতো বেশ নাদুস নুদুস। কত সুন্দর পালক। ঘরের সাথে বেধে রাখলেও ভালো লাগবে। কিংবা বাসার ধাঁরে যে ছোট্ট জলাশয়টা আছে সেখানে রাজহাঁসটা যখন সাঁতরে বেরাবে, খুব সুন্দর লাগবে নিশ্চয়ই। বুড়ি তো কবে থেকেই বলছিল, একটা রাজহাঁস যদি থাকত আমাদের! এখন তো সুযোগ আছে, আসুন না, আমার ভেড়াটার সাথে আপনার রাজহাঁসটা বদল করি।

রাজহাঁসের মালিক নিজের খুশি চেপে রাখতে পারছিল না। সে বলল এত খুবই ভালো প্রস্তাব দাদু। আসুন এখুনি অদল বদল করে ফেলি।

রাজহাঁসের মালিক রাজহাঁস বুঝিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে ভেড়া নিয়ে বাড়ি ফিরে গেল। বুড়ো রাজহাঁসটাকে বগলদাবা করে হেঁটে চলল হাঁটের দিকে। হাঁটের কাছাকাছি পৌছাতে বুড়ো দেখল আস্তে আস্তে ভিড় বড় হচ্ছে। এই ভীরের একটু পাশেই একজন লোক একটা মুরগী নিয়ে বসেছিল। বাহারি পালক তার গায়। মাথার ঝুটিটা বেশ রাজকীয় ভঙ্গিতে আধো ভাজ হয়ে আছে। মাঝে মাঝে বেশ আয়েশ করে ডাক ছাড়ছে, কক কক কক! আর এদিক ওদিক চাইছে জ্ঞ্যানীর মত।

মুরগীটা তখন কি ভাবছিল তা আমি জানিনা, তবে বুড়োর চোখ আঁটকে গেল। ‘এত রূপের মুরগী কি কারও আছে?’ পাশের বাড়ির মিশেলের মুরগীটা, যেটা নিয়ে তার বেশ অহঙ্কার, সেটাও এর কাছে কিছুই নয়। মুরগীটা নিতেই হবে যেকোনো ভাবেই হোক। মুরগী পালাও বেশ সহজ, উঠোন থেকে এটা সেটা খেয়ে দিন পাড় করে দেবে, বেশি যত্ন আত্মিরও দরকার পড়েনা। রাজহাঁসটা বদলে যদি এটা  পাওয়া যায়, মন্দ কি! অদল বদল কি করেই ফেলব?

যেই ভাবা সেই কাজ, রাজহাঁসের বদলে মুরগীটাকে নিয়ে খুশি মনে বুড়ো হাঁটের ভেতর ঢুকল। দীর্ঘ পথ হেঁটে এসে বুড়ো ক্লান্ত আর ক্ষুধার্ত। একটা সরাইখানায় গিয়ে কিছু খেয়ে নেবে ভাবল। সরাইখানার ঢোকার মুখেই এক আস্তাবলের সহিসের সামনে পরে গেল বুড়ো। সহিসের কাঁধে বেশ বড়সড় একটা ঝোলা। বুড়ো বেশ কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলও, ঝোলায় কি বাছা?

-পচা আপেল দাদু; ঘোড়াকে খাওয়াবো।

-এত গুলো আপেল!

-কি করবও বলুন, পচে গিয়েছে যে!

-আমাদের বাড়ির পাশে আপেল গাছটায় গতবার মাত্র একটা আপেল ধরেছিল। আমার বউ সেই আপেলটাকে আগলে রেখে দিয়েছিল ঘরে; পচে গিয়েছে তবু ফেলেনি। ও বলেছিল এটা একটা সম্পদের মত তার কাছে; আর তোমার কাছে এক ঝোলা ভর্তি ‘সম্পদ’; বুড়ি দেখলে খুবই খুশি হত!

-আমি আপনাকে আপেল গুলো দিতে পাড়ি দাদু, বিনিময়ে কি পাব?

-আমার মুরগীটা রেখে আপেলের ঝোলাটা দাও!

সহিস কিছুক্ষণ অবাক হয়ে বুড়োর দিকে তাকিয়ে থেকে আপেলের ঝোলাটা দিয়ে মুরগীটা নিয়ে গেল।

বুড়ো মনের আনন্দে সরাইখানায় ঢুকল। সরাইখানার ভেতরে হাঁটের বিভিন্ন ব্যাবসায়িরা বসে আড্ডাবাজি করছে। বুড়ো একটা চুলোর পাশে সাবধানে আপেলের ঝোলাটা  নামিয়ে রেখে খেতে বসলো। চুলোটা আসলে বেশ গরম ছিল, কিন্তু বুড়ো সেটা খেয়াল করেনি। সরাইখানার ভেতরে তখন বসে ছিল ঐ এলাকার দুজন ধনী ব্যবসায়ী। আপেল গুলো আগুনের আঁচে যখন পুড়ে গন্ধ ছড়াতে শুরু করল, ঐ দুজনের একজন বলে উঠল, “চুলোর পাশে কি এটা”

বুড়োর এতক্ষনে টনক নড়ল। ততক্ষনে আপেলগুলো সব সেদ্ধ হয়ে গিয়েছে। বুড়ো সবাইকে খুলে বলল পুরো ঘটনা; ঘোড়া থেকে শুরু করে পচা আপেল পর্যন্ত।

-দাদু, তোমার বউ তো আজকে তোমাকে আর বাড়িতে ঢুকতে দেবে না; মুচকি হেসে উক্তি করলও ধনী দু’জনের একজন।

-কি যে বল বাছা; বুড়ি আমাকে আদর করে ঘরে বসিয়ে বলবে, ‘বুড়ো যা করে, ঠিকই করে!’

-আমি বাজি ধরে বলতে পারি আজ তোমার কপালে দুঃখ আছে দাদু! হো হো করে হেসে উঠে বলল ধনী ব্যাবসায়িটি।

-বাজী ধরলে তোমায় হারতে হবে বাছা; মৃদু হেসে বলল বুড়ো।

-ঠিক আছে, যদি আমার কথা ভুল হয়, তবে আমি তোমাকে একমন স্বর্ণ মুদ্রা দেব।

-উহু, আমি বিনিময় করতে চাই আমার আপেলের সাথে, সেটা এক কেজির বেশি হবে না।

-ঠিক আছে তাই সই। চল দাদু, তোমার বাড়ি নিয়ে চল।

সরাইখানার সামনে রাখা ঘোড়ার গাড়িতে চেপে বুড়ো আর দুই ধনী ব্যাবসায়ি বুড়োর বাসার দিকে চলল।

অল্প কিছুখনের ভেতরেই তারা বুড়োর কুঁড়েঘরের সামনে এসে থামল। বুড়ি দরজা খুলেই বুড়োকে দেখে খুশি হয়ে উঠল; তুমি এসেছ!

-হ্যা বউ, আমি ঘোড়াটার বদলে অন্য জিনিস নিয়ে এসেছি।

-আচ্ছা, নিশ্চয় তুমি ভালো কিছুই বদলে এনেছো। বুড়ি বুড়োকে জড়িয়ে ধরলো। অন্য দু’জন ব্যাবসায়ির দিকে বুড়ির কোনও মনোযোগই নেই, এমনকি ঝোলাটার দিকেও না। সারাদিন আজ  সে অধীর আগ্রহে বুড়োর পথ চেয়ে ছিল।

- আমি ঘোড়াটা বদলে একটা গরু পেয়েছি বউ।

-তাই নাকি, তাহলে তো খুবই ভাল হল, এবার থেকে আমরা অনেক দুধ পাবো। আমি তোমাকে মাখন আর পনির বানিয়ে খাওয়াতে পারব প্রতি রাতে। খুবই ভালো হয়েছে।

- হুম, কিন্তু আমি গরুটা বদলে একটা ভেড়া নিয়েছি!

- আহ, তাও ভালো। তোমার সবসময় সবদিকে খেয়াল থাকে। আমাদের যে ঘাস লতাগুলো জন্মেছে বাড়ির চারপাশে ওগুলো খাইয়েই ভেড়াটা পালা যাবে। গরুর জন্যে তো আলাদা করে খাবার কিনতে হত! আর ভেড়াও তো দুধ দেবে, সেটা দিয়েও আমরা মাখন পনির বানাতে পারব, ভেড়ার পশম দিয়ে তোমাকে এই শীতে একটা সোয়েটার বানিয়ে দেয়া যাবে! তুমি সব কিছু এত খেয়াল রাখ কিভাবে বলোতো!

-হুম, কিন্তু আমিতো ওটা বদলে একটা রাজহাঁস নিয়েছি!

- আরেব্বাস! তাহলে এ বছর আমরা রাজহাঁসের রোস্ট খেতে পারব, কি মজা! প্রিয়তম, তুমি সবসময় আমাকে খুশি করতে চাও। আমরা হাঁসটার পায়ে দড়ি বেঁধে রাখব, ওটা হেঁটে চলে বেড়াবে আর আরও মোটাসোটা হবে, চর্বি হবে গায়ে। রোস্ট করে খেতে বেশ মজা হবে, কি বল!

-কিন্তু আমি যে ওটা বদলে একটা মুরগী নিয়েছি!

-মুরগী! কি বলছ তুমি! মুরগীটা নিশ্চয়ই অনেক ডিম দেবে। সেই ডিম ফুটে অনেক গুলো মুরগী হবে! আমরা একটা মুরগীর খামার করতে পারব। ওহ! আমিতো এরকম একটা স্বপ্নই দেখছিলাম, তুমি কিভাবে জানলে?

-হুম, কিন্তু আমি যে মুরগী বদলে এক ঝোলা পচা আপেল নিয়েছি!

 -কি বললে, বুড়ির চোখ ছলছল করে উঠল। প্রিয়তম, তোমাকে আমার জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে ইচ্ছে করছে। শোন তবে; তুমি চলে যাবার পর, আমি ভাবছিলাম, তুমি যখন হাট থেকে ক্লান্ত হয়ে রাতে ফিরবে, তোমাকে কি খেতে দেয়া যায়। বাসায় ডিম আর রুটি ছিল, আমি ভাবলাম ওটার সাথে যদি একটু সব্জি হত তাহলে বেশ হত তোমার খাওয়াটা। ঘরে সব্জি ছিলোনা দেখে আমি মিশেলদের বাড়ি গিয়েছিলাম কিছু সব্জি ধার করতে। ওর বাগান ভর্তি সব্জি; কিন্তু আমি ধার চাইতেই সে বলল, “আমার কাছে ধার দেবার মত কিছু নেই দাদী!” আমাদের বাগানে এবার কিছুই ধরেনি, এমনকি একটা পচা আপেলও তোমাকে আমি ধার দিতে পারছিনা। আমার এত ছোট লাগছিল নিজেকে! আমি প্রচণ্ড অপমানিত বোধ করেছি । কিন্তু এখন আমি চাইলে ১০ টা পচা আপেল ওকে ধার দিয়ে আসতে পারি, চাইলে পুরো ঝোলা সুদ্ধ ওকে দিয়ে আসতে পারি! চিন্তা করতেই আমার ভালো লাগছে, তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দেব বলোতো প্রিয়তম!

এরপর বুড়ি বুড়োকে জড়িয়ে ধরে পরম উষ্ণতায় চুমু খেল দু’গালে।

এই প্রথমবার দুই ধনী ব্যাবসায়ি একসাথে বলে উঠল, অনেক হয়েছে দাদু! আমাদের আর কিছু দেখার নেই। যতই দুঃসময়ে তলিয়ে যান, আপনারা একজন আরেকজনকে ঠিকই টেনে তুলবেন, এটা দেখাতেও আনন্দ আছে! আপনি বাজী জিতে গিয়েছেন দাদু, এই নিন আপনার জেতা টাকা! এই বলে তারা বুড়োর হাতে এক ঝোলা স্বর্ণ মুদ্রা ধরিয়ে দিল।

কি ভাবছ? বুড়ো আজ বেশ কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাই না? কিন্তু বুড়োর প্রতি বুড়ির অবিচল আস্থা বুড়োকে ঠিকই জিতিয়ে দিল।

বুঝেছতো, যদি দম্পতির মাঝে ভালো বোঝাপড়া থাকে, তবে সেটা সবসময় কাজে দেয়।

এই গল্পটা আমি শুনেছিলাম আমার ছেলেবেলায়, এখন তুমি শুনলে। এবং জানলে “বুড়ো যা করে, সবসময় ঠিকই করে”।

০ Likes ২ Comments ০ Share ৮৫৯ Views

Comments (2)

  • - প্রবাসী একজন

    emoticons