নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরী, এই একনামে যার দেশব্যাপী পরিচিতি। একটা সময় ছিল যখন সৃজনশীল নাটক মানেই আতিকুল হক চৌধুরীর নাটক। তারঁ নাটক সব সময়ই শৈল্পিক ও নান্দনিকতায় ভাস্বর। ৫০ বছরের সুদীর্ঘ নাট্যজীবনে তিনি অগণিত নাটক লিখে প্রযোজনা করেছেন, প্রযোজনা করেছেন অন্যের নাটকও। শরৎচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, টলোস্টয়ের মতো নন্দিত লেখকদের বহু গল্প-উপন্যাসের স্বার্থক নাট্যরূপ দিয়ে তিনি দর্শক নন্দিত হয়েছেন। উপহার দিয়েছেন অনেক নতুন নাট্যকার, অনেক নতুন মুখ, যাঁরা বর্তমানে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের আকাশে এক একটি উজ্জ্বল তারকা হিসেবে অবস্থান করছেন। তাঁর নিজের লেখা অনেক কালজয়ী নাটকের মধ্যে 'বাবার কলম কোথায়?', 'দূরবীন দিয়ে দেখুন', 'সার্কাস দেখুন', 'নীল নকশার সন্ধানে', 'নিঝুম দ্বীপের সন্ধানে', 'অন্বেষণ', 'জুলেখার ঘর', 'সভাপতির অভিভাষণ' 'জলাশয় কত দূর' মামার বালিশ কোথায়, উল্লেখযোগ্য। বিশিষ্ট এই নাট্যকার, পরিচালক, নাট্যশিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীর ৮২তম জন্মদিন আজ। জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।
আতিকুল হক চৌধুরী ১৯৩১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তাঁর মাতুলালয়ে বরিশালের বাটামাড়া সৈয়দ বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশাল জেলার প্রসিদ্ধ উলানীয়া জমিদার বাড়ির সন্তান। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রী অর্জন করার পর তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল রেডিও পাকিস্তানের নাটক বিভাগের অনুষ্ঠান প্রযোজক হিসেবে। তারপর পাকিস্তান টেলিভিশনে ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে উপ-মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের বর্ণাঢ্য ও কর্মবহুল জীবনের ইতি টেনে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটক ও নাট্যত্বত্ত বিভাগে যোগদান করেন। এখানে তিনি দীর্ঘ ১০ বছর শিক্ষকতা করেন। এর পরে যোগদান করেন একুশে টেলিভিশনের 'পরিচালক অনুষ্ঠান' হিসেবে। সেখান থেকে নবারূন মাল্টিমিডিয়ার চেয়ারম্যান ও সিইও পদে নিযুক্ত থাকার পর তিনি আবার একুশে টেলিভিশনের উপদেষ্টা পদে অধিষ্ঠিত হন।
খ্যাতিমান নাট্যকার আতিকুল হক চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৭ই জুন মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পযর্ন্ত তিনি একুশে টেলিভিশনের উপদেষ্ঠা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ কর্মবহুল জীবনে রেডিও ও টেলিভিশনে তিনি তিন শতাধিকের উপর নাটক পরিচালনা করেছেন। তাঁর হাত ধরেই আমাদের সংস্কৃতি অঙ্গনে শতাধিকের উপর নাট্যশিল্পীর আগমন ঘটে। যে কারনে তাকে বলা হয়ে থাকে, তারকা আবিস্কারের উজ্জল তারকা। বাবার কলম কোথায়, দুরবীন দিয়ে দেখুন, নীল নকঁশার সন্ধানে, জুলেখার ঘর ইত্যাদী তাঁর লিখিত ও পরিচালিত জনপ্রিয় ও বিখ্যাত সব নাটক। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন।
জনপ্রিয় এই নাট্যব্যক্তিত্বের আজ ৮২তম জন্মদিন। সকলের শ্রদ্ধেয় নাট্যব্যক্তিত্ব আতিকুল হক চৌধুরীর জন্মদিনে আমাদের শুভেচ্ছা ও ভালবাসা।
Comments (5)
গল্প ভাল লাগল। ধন্যবাদ
ভাল লেগেছে জেনে ধন্যবাদ।
বেশ মর্মস্পর্শী গল্প। অসময়েরই বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। দ্রিমিতা কতগুলো ভালো বন্ধু পেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের সব স্বপ্নকে গুঁড়িয়ে দিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলো। আমাদের সমাজে ভালোর সাথে মন্দ এমনভাবে মিশে গেছে যে, মানুষ এখন কোনটাকেই বিশ্বাস করতে পারে না। তাই কেউ ভালো কাজ করতে গেলেও মানুষ সেখানে খারাপ উদ্দেশ্য খুঁজে। কেউ মানবতার হাত বারালে ভাবে কোন অসৎ চিন্তা আছে। টাকা তোলার সময় দ্রিমিতার বন্ধুরা এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে। দ্রিমিতা আর শিহাবের মধ্যকার ভালোবাসার গভীরতাটাও গল্পে একটু তুলে ধরেছেন। তাইতো শিহাব, দ্রিমিতার চলে যাওয়াকে মেনে নিতে পারছে না। হাসপাতালের শয্যায় দ্রিমিতার চোখের জলেই শিহাবের জন্য ভালোবাসার কবিতাটি লিখা ছিল। ভালো লাগলো গল্প সুমন ভাই। বন্ধুত্ব, ভালোবাসা আর আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার ব্যাপারগুলো সুন্দর বর্ণনায় তুলে ধরেছেন।
আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়া বরাবরের মতোই আপ্লুত করলো। গল্পের চিত্রকল্প যথার্থই এঁকেছেন। শুভেচ্ছা জানবেন প্রিয় ঘাসফুল।
ঘাস ফুলের সাথে একমত।
পাঠের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ভাল থাকুন।