Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

তাইবুল ইসলাম

৯ বছর আগে

বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্য এবং একটি ব্যাক্তিগত পর্যালোচনা – ইতিহাস

বাংলা ভাষায় ইসলামি সাহিত্য ফারসি ও উর্দু ভাষা হতে অনুপ্রাণিত , সরাসরি আরবি থেকে নয় ।

এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ অঞ্চলের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ইসলামি সাহিত্যকে নানান ভাবে প্রভাবিত করেছে । তবে এ সম্পর্কে অধিকাংশ ইতিহাসবিদদের আলোচনা বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বিধায় নিজে থেকে সকল আলোচনার বিষয়কে একসাথে ও ক্ষুদ্র পরিসরে এনে ইসলামি সাহিত্যের কিছুটা স্বরূপ তুলে ধরার এক প্রয়াস করেছি হল মাত্র ----

 

আনুমানিক ১৪ শতক ১৭৫৭ সালঃ

বাংলা ভাষার ইসলামি সাহিত্য সম্পর্কে অনুসন্ধানে দেখা যায় , এই ধারার শুরু হয়েছে আনুমানিক ১৪ শতক থেকে অর্থাৎ বাংলা সাহিত্যের প্রেক্ষাপটে মধ্যযুগ থেকে । এ সময়কার প্রাচীন কবি হচ্ছেন শাহ মুহাম্মদ সগীর আর তার লেখা ইউসুফ-জোলেখ সম্ভবত প্রথম পুঁথিগ্রন্থ । এই সময়কার মুসলিম সাহিত্যিকরা বাংলাভাষায় পুঁথি নামের এক নতুন কাব্যধারার সূচনা করেন , যার আবৃত্তির ঢং অনেকটা কোরআন থেকে নেয়া (অর্থাৎ একসুরে কিন্তু বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার ছাড়া ) ।

মূলত ইসলামি শাসনাধীনে থাকা এই বাংলায় , তৎকালীন সময়ে ইসলামি সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী হওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক ; হয়েছিলও তাই কিন্তু বাংলাভাষায় না । বাঙালি মুসলিম সাহিত্যিকদের এই মাতৃভাষার প্রতি অনাগ্রহ কবি আব্দুল হাকিম তার বঙ্গবাণী কবিতায় অতি দারুনভাবে তুলে ধরেছিলেন ।

রাজভাষা ফারসি অথবা উর্দু হওয়ার সুবাদে এই অঞ্চলের মুসলিমরা নিজের মাতৃভাষার প্রতি তেমন একটা আগ্রহী ছিল না । তবে এই ক্ষেত্রে আরাকান রাজসভাকে ইতিহাসে অনেক উদার দেখতে পাওয়া যায় । যার কারনে মধ্যযুগের অধিকাংশ বাঙালি মুসলিম সাহিত্যিকদের সন্ধান মেলে চট্টগ্রাম অঞ্চলে । এদের মধ্যে রয়েছেনঃ দৌলত উজির বাহরাম খান (আনুমানিক ১৬শ শতক),মুহম্মদ কবির (১৬শ শতক),সাবিরিদ খান (১৬শ শতক),কোরেশী মাগন ঠাকুর (১৭শ শতক), নওয়াজিশ খান (১৭শ শতক) , দৌলত কাজী বা কাজী দৌলত (১৭শতক)  মহাকবি আলাওল , রহিমুন্নিসা (প্রথম মুসলিম নারীকবি)  প্রমুখ । আর এই সময়কালীন যত সাহিত্যকর্ম পা্ওয়া যায় তার অধিকাংশই ছিল অনুবাদ এবং ইসলামি স্তুতি সমৃদ্ধ ।

 

১৭৫৭ ১৯৪৭ সালঃ

এই সময়কালের একেবারেই গোড়ার দিকে  বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্যের  তেমন উল্লেখযোগ্য কাজ পাওয়া যায় না । কিছু সংখ্যক পুঁথি সাহিত্যের সন্ধান মেলে যার প্রতিটিই মূলত স্তুতি সমৃদ্ধ , সম্ভবত স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলাটা তখন অনেকের দ্বারাই উপলুব্ধ হয়নি ।কারণ ক্ষমতার রদবদল একটা নিত্য ঘটনার অংশ ছিল এই অঞ্চলের জন্য । গোড়ার দিকের কবিদের মধ্যে সৈয়দ শাহনূর (জন্মঃ ১৭৩০- মৃত্যু ১৮৫৪),কাজি হাসমত আলী (১৮৩২)  অন্যতম ।

আবার হঠাৎ করে ক্ষমতা হারানো এই মুসলিম জাতি নব ক্ষমতাসীন শাসকশ্রেণীর সাথে তাল মেলাতে ব্যর্থ হয়েছিল প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই । একদিকে সুযোগ-সুবিধা হারানো এবং অপরদিকে নতুন চালু করা গণমাধ্যমে নিজেদেরকে যুক্ত করতে না পারার কারনে তাদের মধ্যে স্বদেশপ্রীতির উদ্ভব ঘটে এবং মধ্যযুগের থেকে বেড়িয়ে এসে নিজ মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগী হয় ।

যার কারনে এই সময়ের মাঝদিকে এসে বাংলাভাষার ইসলামি সাহিত্য অনুবাদ ও স্তুতি ছাড়াও নিজস্বতা লাভ করে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে । আর তার পথে যুক্ত হয় নাটক , গল্প ও উপন্যাস ।

এইসময়কালের শেষের দিকে এসে ভারতের মুসলমানদের মধ্যে স্ব-জাতি চিন্তার আলাদা বিস্ফোরন ঘটে দ্বি-জাতি ত্বত্ত এর মাধ্যমে । যার কারনে মুসলিম মানসিকতার পূর্ণ ছাপ পড়ে নানান ভাষার মুসলিম সাহিত্যিকদের কলমে । আর বাংলা ভাষায় তার অন্যতম উদাহরণ পাওয়া যায় এই সময়কালের অন্যতম ইসলামি সাহিত্যিক কাজী নজরুল ইসলামের লেখায় ।

অর্থাৎ, একথা বলা যায় যে , বাংলাভাষায় ইসলামি সাহিত্যের এ পর্যায়ে ধর্মের সাথে সাথে মুসলিম জাতিস্বত্তা ও দেশপ্রেমের সন্ধান পাওয়া যায় ।  

 

১৯৪৭ ১৯৭১ সালঃ


পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম এ ভারতের মুসলামনদের জন্য আশার চাবিকাঠি হলেও, এই বাংলাভাষী অঞ্চলের মুসলিমরা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পতিত হয় । দুই পাকিস্তানের উদ্ভবই যখন মুসলিম জাতিস্বত্তার উপর ভিত্তি করে ঠিক তখন বাংলাভাষী হওয়ার কারনে শাসকগোষ্ঠী শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় । যা বাংলা ভাষায় ইসলামি সাহিত্যের সকল ধারার মাঝে এক নতুন ধারার জন্ম দেয় , যার নাম  
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ

এ সময়কালের ইসলামি সাহিত্যে তাই পূর্বকালের ইতিহাস , ঐতিহ্য - এর পাশাপাশি নব জাতীয়তাবাদ সূচনা দারুনভাবে উঠে আসে । এ সময়ের উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিকদের মধ্যে রয়েছেনঃ  ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ , ফররুখ আহমদ , মুনীর চৌধুরী প্রমুখ ।

 

১৯৭১ সাল বর্তমানঃ


১৯৭১ সালে (বঙ্গঅঞ্চলের একাংশ যা পূর্ববাংলা নামে সুপরিচিত) পূর্ব পাকিস্তান হতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম ঘটে । এবং প্রায় দুইশত বছরের অধিক দীর্ঘ এই পরাধীনতা থেকে মুক্তি বাংলাদেশের সকল ধরনের সাহিত্যেই এক ইতিবাচক স্থিতিশীলতার জন্ম দেয় ।

যার কারনে বর্তমান বাংলা ভাষার ইসলামি সাহিত্যের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় ধর্মীয় স্ততি ও আলোচনা , ইতিহাস , ঐতিহ্য , মুসলিম জাতিয়তা , স্বদেশ প্রেম অর্থাৎ প্রায় সকল কিছুই ।

এসময়কার কয়েকজন উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক হচ্ছেন আব্দুল মান্নান সৈয়দ , সুফিয়া কামাল, সিকান্দার আবু জাফর , মতিউর রহমান মল্লিক প্রমুখ ।

 

তথ্যসূত্রঃ

১. বাংলাপিডিয়া

২. উইকিপিডিয়া

৩. A History of Bangladesh, William Van Schendel

. Bangladesh: politics, Economy and Civil Society, David Lewis   

০ Likes ২ Comments ০ Share ৫৩৭ Views

Comments (2)

  • - রব্বানী চৌধুরী

    কবিতায় চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে ঘরে ফিরার আগে বৃষ্টি মালার জন্য ভোগান্তি, তবুও খুব ভালো লাগে বৃষ্টিকে।

    চমৎকার কথামালা লেখা কবিতা ভালো লাগলো, শুভেচ্ছা জানবেন, ভালো থাকবেন।  

    - বিষ পিঁপড়ে / <u>তাইবুল ইসলাম</u>

    আসলেই ভালো লাগলো কবিতাটা

    emoticons

    - ফাতিন আরফি

    পদ্যে আঁকিবুঁকি ভালো লাগলো। 

    Load more comments...