আমাদের দেশের অনেক অনেক ছেলে-মেয়ে বলিউডের ভালো রকমের অনুসারী।
অনুসারী বলতে সেখানে যা যা হচ্ছে সেটাকে একটা ট্রেন্ড হিসেবে গ্রহণ করাটা তাদের এক রকমের ফ্যাণ্টাসি!
এটার একটা প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারি আমাদের ঈদের বাজারগুলোকে।
বিগত বছরগুলোতে যে এই ট্রেন্ড চালু হয়েছে সেটা বলা যাবে না। ভারতীয় পণ্যের মার্কেট আমাদের মাঝে প্রবেশ করেছে আরো আগেই। যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম স্টারপ্লাসে আমার চাচী সিরিয়াল দেখতো। তখন উনার কাছে শুনেছিলাম তিনি নাকি রোজার ঈদে কিনেছেন "পার্বতী" শাড়ী। আর এরপরের কুরবানীর ঈদের জন্যে উনার প্ল্যান হচ্ছে "পল্লবী" শাড়ী কেনা।
যারা কিছুটা জানেন তাদের বলার আর প্রয়োজন নেই যে পার্বতী এবং পল্লবী হচ্ছে তখনকার এক জনপ্রিয় হিন্দি সিরিয়ালের মেইন ক্যারেক্টার এবং ভিলেন ক্যারেক্টারের নাম।
এই সিরিয়ালের পাশাপাশি বলিউডের নামি-দামী ব্যবসা সফল ছবিগুলোএর নায়িকার পরিহিত কাপড় হয়ে উঠেছে ব্যাবসার মূল বিষয়।
রিসেণ্ট দিনগুলোতে বেবী ডল কিংবা চেন্নাই এক্সপ্রেসের বাজার কাটতি দেখলে এই বিষয়ে কোন সন্দেহ অবশিষ্ট থাকে না। এসব বিষয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। আলাদা করে আমার কিছু লিখতে যাওয়ার আর প্রয়োজন দেখছি না।
কিন্তু আজকে যেটা লিখছি সেটা একটু অন্য দিকের। শুরুতে যে বললাম ইয়াং জেনারেশন বলিউড নিয়ে ফ্যাণ্টাসিতে ভোগে, সেটা অস্বীকার করার কিছু নেই। সেখানকার নায়ক-নায়কারা যেমন পোষাক পরিধান করে সেই রকম পোষাক কেনার জন্যে যেমন ছেলে-মেয়েদের আগ্রহের কমতি নেই, তেমনি তাদের জীবন ধারনের পদ্ধতিও যে আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা অনুসরণ করবে না সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না।
কিছুক্ষণ আগে এই নিউজটা দেখলাম।
http://www.bd-pratidin.com/entertainment/2014/10/17/37313
এমন খবর দেখলে এমনিতেই খারাপ লাগে, তা সে যেকোন দেশেরই হোক না কেন। সামাজিক দিকট আভাবতে গেলে ঘৃণা চলে আসে তাদের প্রতি। আর উপরে যেটা বলেছি সেসব দিক মাথায় রাখলে আমার ভয়টা আরো বেড়ে যায়।
ভারতের তারকারা যে ভয়ংকর জীবন পদ্ধতি অবলম্বন করছে সেটা আমাদের যুব সমাজের কাছে কোনদিন না তথাকথিত ফ্যাশনে পরিণত হয়ে যায়!
কিছু বছর আগে দেখেছিলাম আরেক খ্যাতনামা পরিবারের সদস্য সোহা আলি খান তার ছেলে বন্ধুর সাথে লিভ-টুগেদার করছে। এ নিয়ে তাকে যখন প্রশ্ন করা হয় তখন তার জবাব টা ছিলো অনেকটা এমন যে, "আমার কাছে বিয়ের চেয়ে দু\'জনের আন্ডারস্ট্যান্ডিং টা ইম্পরট্যান্ট।"
এক্ষত্রে সাংবাদিক অন্য কোন প্রশ্ন করেছিলেন কিনা জানা নেই। কিন্তু আমার মনে হয়েছিলো একটা প্রশ্ন করার, যদি এতো ভালো অন্ডারস্ট্যান্ডিং-ই থেকে থাকে দু'জনের মাঝে যে লিভ-টুগেদার করতে কোন সমস্যা হচ্ছে না; তাহলে বিয়েটা করে ফেললে সমস্যাটা কোথায় ???
এর পরের ঘটনা উনার ভাই সাইফ আলি খানকে নিয়ে। এই নবাব সাহেব অনেক ঘটা করে বিয়ে করেছেন কাপুর কণ্যা কারিনাকে। নামের বিয়ে মাত্র, সেটা বুঝতে কারোই কোন কষ্ট হওয়ার কথা না। আর যদি কষ্ট হয়েও থাকে তো এক্ষেত্রে কারিনার উক্তিটুকু দিলেই কাজ সেরে যায়। সে বলেছে, "সাইফের সাথে আমার বিইয়েটা কাগজের কিছু স্বাক্ষর মাত্র। সামাজিকতা রক্ষা করার স্বার্থে।" - এই বিয়েও আসলে লিভ-টুগেদার ছাড়া আর কিছুই নয়া।
আর আজ দেখলাম ক্যাটরিনা আর রনবিরের এই ঘটনা। একে অবশ্য পারশিয়াল লি-টুগেদার বলতে আমি অধিক আগ্রহী। যেহেতু তারা সাপ্তাহে ২/৩ দিনের বেশি থাকছে না ;)
কিন্তু এসব আলোচনার উদ্দেশ্য কি ? অথবা টাইটেলে যে "আমরা" ব্যবহার করেছি সেটাই বা কেন ? আমরা আসলে স্বাক্ষি গোপালের মতো হয়ে গেছি। যা হচ্ছে হোকনা ! কেউ অল্প-সল্প প্রতিবাদ করতে চাইলেও মুখ ভেংচি দেই। আবার বেশিরভাগই আমরা আমিত্ব নিয়ে পড়ে আছি। আমি যা ইচ্ছে করবো , তাতে কার কি ??
এই চিন্তা থেকে আমাদের বের হওয়ার পথ খুঁজতে হবে। আর, হ্যাঁ, এই রকম অনেকেই লিখে। কিন্তু ঐ লিখাতেই ক্ষান্ত! প্র্যাক্টিক্যালি কেউ কিছু করার চিন্তাও করে না। কীবোর্ডে যে যত ঝড় তুলতে পারে সে ততো বড় সেলিব্রেটি :-/
Comments (1)
হা হা হা হা হা
কবে আসবে বসন্ত
কোকিল করবে মুখস্থ
কবিতা আর যত ছড়া
উপহার তাকে ফুলগুলো মোড়া।
"কবে আসবে বসন্ত
কোকিল করবে মুখস্থ
কবিতা আর যত ছড়া
উপহার তাকে ফুলগুলো মোড়া।"
অপেক্ষার পালা, যদি অনন্ত কালও অপেক্ষা করতে হয়, করতে হবে।
ভালো লাগলো কবিতার কথামালা। শুভেচ্ছা জানবেন ভালো থাকবেন।