: বেপারী, কামটা বালা করতাছো না।
: আমি কি কইছি কামটা বালা করতাছি- তালি বাজায়া নাচো!
: আমি পোলাপানগো হাতে দইরা কাম শিখাই। তুমি তাগো ভাগায়া লিয়া যাও।
: আমি ভাগামু, তুমি হালায় কিমুন ওস্তাদ অইলা যে তাগো আটকায়া রাখতে পারো না!
: বেপারী, খোচা দিতাছো! দাও।
: দিমুনা কেলা! কও! আপন বায়েরা তোমার ভিটি বাড়ি দখল কইরা লিলো। মাগার কিচ্ছু কইলা না। জোয়ান বয়সে বাচ্চা হইতে গিয়া বৌটা মইরা গেলো। পোলার কথা চিন্তা কইরা আবার বিয়া করলা না। ঐ পোলা অহনে তোমার খোজ খবর'ভি লয় না।
: বেপারী, এই সব গান্দা প্যাচাল বাদ দাও। চা খিলাও।
: বাদ দিমু কেলা! মালাই মারা চা খিলামু আর ঝালাই মারা কথা শুনামু।
: বেপারী, নতুন কি আর শুনাইবা কও!
: ওস্তাদ, তুমি হালায় মুক্তিযুদ্ধ করলা। মাগার যুদ্ধের থেকা ফিরা একটা বাড়ি'ভি দখল করলা না। রেডকরসের দুধ, রেসনের চিনি ব্লাক কইরা কালাবাজারে বেচলা না। মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকিট'ভি লিলা না। অহনে চোখে টিনের চশমা পিন্দা সারটিফিকিট দিয়া চাল্লু ব্যাবসা করতে পারতা।
: বেপারী, চ্যাতো কেলা! তুমিওতো যুদ্ধ করছো- সারটিফিকিট লিছো!
: আমার কথা বাদ দাও। সারটিফিকিট দিয়া আমি বাল কি করমু! খাট্টা খামু!!
: এইবার লাইনে আইছো। বেপারী, এমুন দ্যাশের লেগা কি যুদ্ধ করছিলাম! পোলাপানগো কুন দোজগে রাইখা যাইতাছি। আরেকবার অস্ত্র লয়া আগাছাগুলিরে পরিসকার করা দরকার। হাতটা উসপিস উসপিস করে।
: ওস্তাদ, উসপিস করলে'ভি উপায় নাইক্যা। আমরা মইরা গেছি। মরা ঘোড়ারে যতই পোন্দাও লৌড়াইবোনা।
: বেপারী, তেইলে চলো জিতা জিতা ঘোড়াগুলিরে পোন্দাই। জিতা ঘোড়ার পালরে না পোন্দাইলে দোজগের আগুন নিভবো না।
কাপের চা শেষ হয়ে আসে। দুজনে দু'টা গোল্ডলিফ ধরান। সিগারেটের ধোয়া পাক খেয়ে খেয়ে ধোলাইখালের বাতাসে মিশে যেতে থাকে। জিতা ঘোড়ার পালকে 'পোন্দানো'র আশায় জ্বলজ্বলিয়ে ওঠে দু'জনের ঘোলা চোখ, জীর্ণ চামড়াবৃত হাতের পেশী আর সাহসী আত্না। প্রতিদিনের মত সাবুদ্দীন বেপারীর দশ ফিট বাই আট ফিট কারখানায় মনু ওস্তাদের শিষ্যের দল থেমে থেমে ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করে যায়। ওয়েল্ডিংয়ের আলোতে দুই প্রাক্তন যোদ্ধার মুখে আলোর আভা খেলা করে, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুনের ফুলকি।
Comments (1)
বাহ দারুন কবি, শরৎ ভালোবাসা!!