Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

১০ বছর আগে

প্রেমিকার কাছে খোলা চিঠি

জান আমার, কলিজা আমার- তুমি কেমন আছো গো ? মাঝে মাঝে তুমি আমাকে একটুও বুঝতে চাও না। তখন খুব কষ্ট হয়। হুকুম এবং দাবী একটাই আমাকে একটু বুঝতে চেষ্টা করো। পকেটে টাকা না থাকলে- কি করে তোমার সাথে দেখা করতে যাই? কিভাবে তোমাকে জুটকটন শাড়ি কিনে দেই ? মাঝে মাঝে মনে হয় যারা দুর্নীতি করে, নিজের জন্য করে না। বৌ এর জন্য করতে বাধ্য হয়। বৌ এর চাহিদা মিটাতে গিয়ে দুর্নীতি করে বা অসৎ ভাবে টাকা ইনকাম করে। আমি তো এসব পারবো না। দয়া করে খারাপ কিছু করতে আমাকে বাধ্য করো না। তুমি একটা ব্যাপার বুঝ না কেন- সুখের থেকে স্বস্তিতে থাকা অনেক ভালো।

দরকার নেই আমাদের গাড়ি বাড়ি। হারামের পথে আরাম ভালো না। আমরা দু'জন ডাল ভাত ভর্তা খেয়ে একটা জীবন পার করে দিব। আমার আয় খুব সামান্য ( পুরোটাই সৎ পথে ) এই সামান্য আয় দিয়েই তোমাকে চলতে হবে। সত্যি কথা বলতে- তোমাকে নিয়ে কখনও বড় বড় রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেতে পারবো না কিন্তু রাস্তার পাশের দোকান থেকে চা বিস্কুট খাওয়াতে পারব। বসুন্ধরা মার্কেট থেকে কেনা কাঁটা করতে পারবো না। দামী শাড়ি গহনা দিতে পারব না। এমিটেশনের গহনা দিব। টাঙ্গাইল শাড়ি দিব বছরে দুইটা। দুই ঈদেও বিশাল অংকের টাকা তোমাকে দিতে পারব না কেনাকাটা করার জন্য।

আর সত্যি কথা বলতে, কি বিলাস বহুল জীবন যাপন আমার পছন্দ না। একদম ছোটবেলা থেকেই বিলাসিতা করা আমার অপছন্দ। বিয়ের পর যেন কোনো ঝামেলা না হয়- এজন্য তোমাকে আগেই সব জানিয়ে রাখলাম। তোমার কাছে কি টাকা পয়সা বড় না তোমার ভালোবাসার মানুষটা বড় ? জাঁকজমক পূর্ণ বিয়ে আমাদের হবে না। নো নেভার। ঘরোয়া ভাবে আমাদের বিয়ে হবে। বিয়ে নিয়ে নানান রঙ ঢং আমি করতে পারব না। আমার কাছের আত্মীয় স্বজন নিয়ে তোমার বাসায় যাবো- তারপর তিন বার কবুল বলে তোমাকে নিয়ে আসবো সিএনজি'তে করে। ঝামেলা শেষ।

ছোট্র একটা ঘরে আমাদের সংসার জীবন শুরু হবে। আমি জানি শুরুতে মানিয়ে নিতে তোমার খুব কষ্ট হবে। কিন্তু কয়েক মাস পর তুমি সব কিছু গুছিয়ে নিতে পারবে। যেহেতু আমার অনেক টাকা পয়সা নাই- তাই আশা করি- তুমি অনেক রকম বায়না- আবদার করবে না। তবে তোমার ছোট ছোট আবদার আমি অবশ্যই রাখব। যেমন রিকশায় করে ঘুরাঘুরি, ফুচকা আইসক্রিম, কাঁচের চুড়ি, কপালের টিপ, চোখের কাজল- এই সব পাবে। আমার ভাগ্য ভালো যে আমি তোমাকে পেয়েছি- অন্যসব মেয়েদের নানান রঙ চং মাখতে হয়- তারপর তাদের সুন্দর দেখায়- আর আল্লাহর রহমতে তোমাকে শুধু চোখে কাজল আর কপালে টিপ এ দেবী প্রতিমার মতন লাগে। পার্লারে গিয়ে ভ্রু প্লাক করাটাও আমার পছন্দ না।

আমাদের বিয়ের পর বাচ্চা হলেও আমরা বাচ্চার জন্য বিলাসিতা করবো না। ধরো, ঘটা করে বাচ্চার জন্মদিনও পালন করবো না। আদিখ্যাতা ভালো লাগে না। দরকার নেই বাচ্চাকে ইংলীশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করানো। সরকারী একটা স্কুলে ভর্তি করাবো। বাসায় বাচ্চার জন্য কোনো টিচার রাখব না। আমাদের বাচ্চাকে তুমিই পড়াবে। নেপোলিয়ান বলেছেন- বাচ্চাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক হচ্ছে  তাদের 'মা' । আর আমাদের বাচ্চা তোমার কাছে লেখা-পড়া শিখলে আমি একেবারে নিশ্চিন্ত। আর একটা কথা বিয়ের পর কিন্তু তুমি ঘন ঘন বাপের বাড়ি যেতে পারবে না। খুব কম যাবে। সবচেয়ে ভালো হয় বছরে দুই একবার গেলে। ধরো, দুই ঈদে চান্দে গেলে। একবেলা থেকে চলে আসলে। 

ও...আমার রাজকুমারী আর একটা দরকারী কথা বলতো ভুলেই গেছি। আমাদের সংসারে আমরা কোনো কাজের বুয়া রাখব না। অযথা টাকা নষ্ট করে লাভ কি ? আমাদের ছোট্র ঘর আমরা দু'জন মানুষ- ঘরে তো খুব বেশী কাজও নেই। আমি মনে, করি এতটুকু কাজ তুমি একাই করতে পারবে। অপচয় আমার একেবারে অপছন্দ। আমি জানি, তুমি অবশ্যই আমার পছন্দ-অপছন্দের খেয়াল রাখবে? তাছাড়া তোমার সংসারের সব কাজ তো তোমারই করা উচিত। আমি ১০০% নিশ্চিন্ত তুমি যদি লক্ষ্মী মেয়ের মত আমার সব কথা মেনে চলো- তাহলে আমরা সুখী দম্পতি হবো। আমাদের দেখে- অন্যরা বললে- ওদের টাকা নেই, তারপরও ওরা কত সুখী। বেবি, সত্যিকারের সুখ টাকা পয়সায় হয় না, মনের সুখই আসল সুখ।

তবে আমরা একটা বিষয় নিয়ে বিলাসিতা করবো। অবশ্যই করবো। তা হচ্ছে বই। আমাদের ঘরে এসি থাকবে না কিন্তু বইয়ের সেলফ থাকবে। থাকে থাকে সাজানো থাকবে অনেক বই। আচ্ছা, এখন চিঠি শেষ করছি- পরে আবার লিখব। আরোও কিছু বিষয় বাকি আছে। যথা সময়ে তোমাকে জানাবো। তুমি ভালো হয়ে থাকো। সুন্দর ভাবে থাকো। আর বেশী দিন তোমাকে বাপের বাড়ি থাকতে হবে না। আমি নিয়ে আসব আমার কাছে। আমি তোমাকে এক বস্ত্রে তোমাদের বাসা থেকে তোমাকে বিয়ে করে নিয়ে আসবো। নো যৌতুক । আমি দরিদ্র হতে পারি কিন্তু লোভী নই। তুমি তোমার অবস্থান থেকে- তোমার দায়িত্ব সুন্দর ভাবে পালন করবে। তোমার ভাই বোন এবং বাবা যেন তোমার উপর কখনও বিরক্ত না হয়। তাদের আমার সালাম দিও।

অনেক আদর ও ভালোবাসা।   

০ Likes ৩ Comments ০ Share ১৪৫১ Views

Comments (3)

  • - মাসুম বাদল

    পাগলের টাকা চাওয়াতে কি আবেগ থাকতে নাই !!!! 

     

    আমরা চাই এই কন্ঠে মানুষ আবেগ তাড়িত হোক

    আমরা চাই মানুষ বিবেক তাড়িত হোক 

    আমরা চাই বন্ধ হোক কৃপা জাগানিয়া এই কন্ঠ-

    আমরা চাই আর একটি হাতও যেন মানুষ হয়েও

    মানুষের কাছে হাত পেতে না বলে-

    " আব্বা , কয়টা টাহা দেন "! 

    • - জাওয়াদ আহমেদ অর্ক

      অবশ্যই , বাদল ভাই , এমনটাই প্রত্যাশা আছে আমারও । 

    • Load more relies...
    - চারু মান্নান

    বাহ সুন্দর কবি,
    মাঘের শীতে বাঘ কান্দেরে,,,,,

    • - জাওয়াদ আহমেদ অর্ক

      ধন্যবাদ । 

    - ইকবাল মাহমুদ ইকু

    ভালো লাগলো 

    • - জাওয়াদ আহমেদ অর্ক

      ধন্যবাদ ।