যেকোনো ব্লগার বা লেখকের পোস্টে পাঠকের প্রাসঙ্গিক গঠনমূলক বা বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য এবং লেখকের উত্তর কীভাবে পরস্পরের জন্য টনিক হিসাবে কাজ করে, তা এই ধারাবাহিকের প্রথম পর্বেই বলেছিলাম। আজ আপনাদের জন্য পাঠকের কিছু চমৎকার মন্তব্য তুলে ধরছি। পোস্টের লিংক সাথে দেয়া রইলো, ইচ্ছে করলে লেখকের বা ব্লগারের উত্তরটাও দেখে নিতে পারবেন। কোন ধরণের পরিবর্তন ছাড়াই মন্তব্যগুলো হুবহু এখানে তুলে ধরা হল। চলুন পড়া যাক মন্তব্যগুলোঃ
জুলিয়ান সিদ্দিকী মন্তব্য করেছেনঃ
উদ্যোগটা ভালো সন্দেহ নাই। আজকাল এমন ব্যাপারগুলো নাই বলতে গেলে। সাহিত্য বা সৃজনশীল আড্ডা বা পাঠচক্র এমন কি পাঠাগার ব্যাপারগুলোও খুব অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে মানুষের কাছে। কিন্তু একটা ব্যাপার আমরা অনেকেই হয়তো স্বীকার করবো নির্বিশেষে সব আড্ডা সব সমাবেশই খারাপ নয়। আজকাল এমন সৃজনশীল সমাবেশের তেমন কোনো ব্যাবস্থা নেই আর থাকলেও সীমাবদ্ধতা বেশি বা সবার প্রবেশাধিকার থাকে না, যে কারণে গুটিয়ে যাচ্ছে আমাদের মানসিকতা, হয়ে পড়ছি আত্মকেন্দ্রিক। চিন্তা-ভাবনার দিক দিয়েও হয়তো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একপেশে। ফলে আমরা হয়ে উঠছি স্বার্থপর, আঞ্চলিকতার নোংরামীতে আচ্ছন্ন।
এ ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে মানসিক বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। গোষ্ঠিবদ্ধতার হীনতা থেকেও মুক্তি দিতে পারে। পারস্পরিক সৌহার্দ্য বাড়াতেও বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে এমন আয়োজনের বিকল্প নেই বলেই মনে করি। আর এর ভেতর দিয়েই একজন নিজের যাবতীয় ত্রুটি সম্পর্কেও সচেতন হয়ে উঠতে পারে। এটি সামাজিক যোগাযোগেরও একটি মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। আজকাল ভারচুয়াল যোগাযোগ সহজ হলেও কেন তাতে সত্যতা আর আন্তরিকতার অভাব বেশি তার মূলে মুখোমুখি আলাপ আলোচনা দেখা সাক্ষাতের অভাবেই হচ্ছে। আশা করি আপনাদের সদিচ্ছা আপনাদের সম্পর্ক আর জানা শোনার পরিধিকেও বড় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আপনাদের জন্য আগাম শুভ কামনা থাকলো।
পোস্টের নাম এবং লিংকঃ নতুন বছরেই নক্ষত্রের নতুন সংযোজন- "নক্ষত্র পাঠচক্র"
গল্পের শুরুতেই প্রথম অনুচ্ছেদে একটু হোঁচট খেলাম! প্রথম, দ্বিতীয় লাইনের পর তৃতীয় লাইন একটু অসম্পূর্ণ লাগছে। কিছু একটা বাদ পড়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে।
“আব্দুস সালাম। একজন দরিদ্র রিকশাচালক। জীবিকার জন্য বেছে নেয়া তার একমাত্র পথ।”
এ অনুচ্ছেদে বারবার ‘তার’ বিশেষণের ব্যবহার বর্ণনাকে দুর্বল করে দিয়েছে বলে আমার মনে হল। দেখুন-
“আব্দুস সালাম। একজন দরিদ্র রিকশাচালক। জীবিকার জন্য বেছে নেয়া তার একমাত্রপথ। ভালোই ছিল তার সাদামাটা জীবন যাপন। দুই ছেলে, এক মেয়ে আর তার বউ, এইনিয়ে তার সংসার। মা-বাবা গত হয়েছেন অনেক আগেই। রিকশার চাকার মতোই তারজীবনের চাকাটাও প্রতিনিয়ত ঘোরে। কখনো সুখ, তো কখনো দুঃখ। তারপরেও সুখে ছিলসালামের পরিবার।”
বোল্ড করা ‘তার’ তিনটি উঠিয়ে পড়তে আরও ভাল লাগবে বলে মনে হচ্ছে।
দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে এসে জানলাম আব্দুস সালাম নামটি কী করে বদলে ‘বাতাস হয়েছিল। অবশ্য এ অনুচ্ছেদটি এভাবে পড়তে ভাল লেগেছে-
“এলাকার সবাই সালামকে বেশ ভালোভাবে চিনে। এমনকি আশে পাশের আরও দু-চারটেগ্রামের অনেক মানুষও। সদালাপী আর ভদ্রতার জন্য সবাই তার রিকশায় চড়ে যাতায়াত করে।যারা করে না, তারা ভয় পায়খুব দ্রুত রিকশা চালায় বলে। একবারমোটরসাইকেলের সাথে পাল্লা দিয়ে তার রিকশাপ্রতিযোগিতায় জিতেছিল। সেদিন যেনবাতাসেরমতো রিকশা চালিয়ে ছিল। সেই থেকে তার নাম হয়ে যায় বাতাস। আর বাতাসেই উড়েগেলো তার আব্দুস সালাম নামটি। ”
এরপর গল্পের ভেতরে দ্রুত ঢুকতে শুরু করলাম এবং খুব দ্রুতই থামতে হল! কেন জানি মনে হল গল্প দাঁড়িয়ে যেতে যেতে আবার বসে পড়েছে! শুরুতে মনে হয়েছিল বড় কোন গল্প হবে। কিন্তু বাতাসের গল্প পড়তে পড়তে হঠাৎ কাশেমের আগমন এবং জুটমিলের নোংরা রাজনীতির কারণে তার খুন হওয়ার মধ্যে দিয়ে শেষ হয়ে যাওয়া গল্পে বাতাসের গল্প দাঁড়ালো না কিন্তু তার যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল তার নাম হবে ‘অবিচার’!
এই আপ্ত বাক্যে খুঁজে পাওয়া তার জীবনের নির্মম সত্য টুকু- ‘‘কিন্তু জীবনের গতিটা পুলিশেরইন্টারোগেট সেলে রেখে এলো।”
তারপরও বলতে হয়, গল্পের মধ্য দিয়ে গল্পকার যে দিক গুলো সচেতন ভাবে তুলে ধরলেন তা- আইনের অবিচার, চিরায়ত নোংরা রাজনীতির নির্মমতায় একটি জীবনের গতি থেমে যাওয়া, যাকে গল্পকার তুলনা করেছেন ‘রিকশার চাকা’র সাথে।
পাঠক অভিমত, ভুল হতেও পারে। সেক্ষেত্রে লেখকের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি কামনা করি।
ভাল থাকুন ঘাসফুল ভাই। অনন্ত শুভ কামনা।
পোস্টের নাম এবং লিংকঃ বাতাসের গল্প
তাহমিদুর রহমান মন্তব্য করেছেনঃ
পাশা ভাই,
শুভেচ্ছা নিবেন। গল্পটিতে আমার প্রধান সমস্যা মনে হয়েছে ছোট বাক্য এবং বাক্য গঠন।
১। ছোট ছোট বাক্য করে সাজালে পড়তে পাঠক বাধা পায় ফলে বিরক্ত হয়। আপনার এই গল্পটিতে এটির পরিমাণ বেশি।
২। বাক্য গঠন- যদি "আমি খাই ভাত" না লিখে যদি লিখি "আমি ভাত খাই " তবে পড়তে ও শুনতে বেশি ভাল লাগে।
আমি জানি আপনি এ ব্যাপারগুলো খুব ভালভাবেই জানেন। তবুও ধরিয়ে দিলাম পথ চলার সাথী হিসেবে। ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা।
পোস্টের নাম এবং লিংকঃ বিদেশী গল্প (অভিযোগ)
গল্পটা ভালো।
কিন্তু আমি একটা খারাপ মানুষ মনে হয় তাই এই মন্তব্য করছি। বিনয়ের সাথে নেবেন প্লীজ।
যদি সাহিত্যের আমেজ নিয়ে গল্প হিসেবে পড়ি তবে বেশ কয়েক জায়গায় ধাক্কা খেয়েছি। কয়েকটা শব্দের অনিয়মিত ব্যাবহার আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। কয়েকটা ইংরেজি শব্দের ব্যবহারও ধাক্কা দিয়েছে, কারন ওই শব্দ গুলোর বাংলা অর্থ গুলো আরও যুতসই হতো হয়তো। যদিও শব্দের ব্যবহার লেখকের ব্যক্তিগত ব্যাপার। নাকি এই প্রথম আপনার লেখা পড়ছি বলে আমি তালগোল পাকাচ্ছি জানিনা। (আমি নগণ্য, মোটেও বেশী বুঝিনা, একজন পাঠক হিসেবে শুধু এগুলো মনে হল তাই বললাম, আর কিছুই নয়। ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী।)
আর যদি শুধু একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অথবা চলমান মজার ঘটনা হিসেবে দিয়ে থাকেন তাহলে আমার লেখা উপরের কথা গুলো গুরুত্ব দেয়ার কিছুই নেই।
ভালো থাকবেন।
পোস্টের নাম এবং লিংকঃ "এক পলকের সেই দেখা...."
আপনার লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। আপনার বক্তব্যের সাথে আমি একমত। আপনার অনেক গুলো লেখায় তুলনায় বেশ সুলিখিত ও সুচিন্তিত।
আমরা এখনো স্বাধীনতা স্বাদ পাইনি এটা যেমন সত্য পাশাপাশি একথাটাও সত্যি যে আমরা হয়ত স্বাধীনতা চাইনি যা বঙ্গবন্ধু আমাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়েছে নয়তো আমরাও চেয়েছি ঠিকই পাওয়ার পর তার মানে বুঝতে পারিনি। পাওয়া স্বাধীনতাকে আমরা ধরে রাখতে পারিনি। কেন পারিনি তা এখন, স্বাধীনতা কিভাবে অর্জিত হয়েছিল তার বেশী গুরুত্ব পুর্ন গবেষনার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
একথা বলতে দ্বীধানেই আজও যদি পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হয় তাহলে আমরা আসলেই পিছিয়ে রয়েছি। একটুও আগাতে পারিনি।
আমি একটা বিষয় বিশ্বাস করি শত্রু শত্রুই। তার কাজই আমার ক্ষতি করা। আমরা বেশীর ভাগ সময়ই তাদের কুকর্ম নিয়ে গবেষনায় সময় নষ্ট করি। অথচ এই সময়টাই আমরা নিজেদের শক্তিশালী করার কাজে ব্যয় করতে পারতাম। আমরা কিন্তু তা করছিনা। তারা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আজ চারিদিকে বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। যদি স্বাধীনতার ৪২ বছর পরেও স্বাধীনতা কাংখিত লক্ষ্য অর্জন তো দুরের কথা প্রতিদিন আতংক নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে, হতাশা নিয়ে ঘরে ফিরতে হয় তাকে আর যাই বিজয় বলা চলেনা। আমি সেইখানে কোন আনন্দ পাইনা। ণীতিনির্ধারকদের স্মরন করা উচিত আমরা কোথাও ভুল করছি। নইলে ভবনে ছাদে বট বৃক্ষ গজাচ্ছে কিভাবে?
পোস্টের নাম এবং লিংকঃ "বিজয়" ৭১ থেকে ২০১৩। অক্ষমদের আবার "বিজয়" কি?
(বিঃদ্রঃ পুরনো পোষ্ট ঘেঁটে ঘেঁটে এই ধরণের মন্তব্য বের করা নক্ষত্রব্লগে কিছুটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আশা করছি নুতন ভার্সনে এই সমস্যা থাকবে না। এই সীমাবদ্ধতা নিয়েই এই পর্বটি পাঁচটা মন্তব্য দিয়ে সাজিয়েছি। যদি এই ধরণের গঠনমূলক কিংবা বিশ্লেষণধর্মী আরও কোন মন্তব কারো চোখে পড়ে, কষ্ট করে এই পোস্টের মন্তব্যে লিংক দেয়ার জন্য অনুরোধ রইলো, যা পরবর্তী পর্বে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। একটি কথা না বললেই নয়, মন্তব্যগুলো আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বাছাই করেছি। তাই সকলের মতামতের সাথে নাও মিলতে পারে। ধন্যবাদ সবাইকে)
Comments (105)
পইড়া মন্তব্য করুম
ধন্যবাদ, মোস্তফা। নববর্ষের শুভেচ্ছা।
২০১৪ নববর্ষের শুভেচ্ছা
প্রিয় আলমগীর সরকার লিটন, নববর্ষের শুভেচ্ছা। আগামী বছর আপনার জীবন আনন্দময় হোক।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে
প্রিয় তাহমিদুর রহমান, আপনাকে ধন্যবাদ। নববর্ষের শুভেচ্ছা।