Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

পথের বাঁকে


একটানা অনেকক্ষণ হাঁটবার পর, সামনের পথ কিছুটা ঢালু হয়ে এসেছে, অনুভব করল আমান। দু'পাশের 'অ্যাকাশিয়া' (আকাশী)' গাছগুলোর সৃষ্ট টানেলটি- মায়াবি সবুজ! দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। ভালোলাগাদের চোখের পাঁপড়িতে  মৃদু কম্পন ওঠে। সময় যেন পলকের তরে থেমে যায়।

কলেজ ফিল্ডে তিন যুবক। ফাঁকা গোলপোষ্টের পেছনে গোল হয়ে বসা। আমানকে দেখে ঘোলা চোখে একপলক তাকায়। সিগ্রেট মিশ্রিত মারিজুয়ানার হাল্কা মিষ্টি ঘ্রাণ বুকে নিয়ে নেচে আসা দমকা হাওয়া, আমানের নাসারন্ধ্রে ঝড় তোলে। ওর দৃষ্টির প্রখরতা ছেলেগুলোর নির্লিপ্ত চাহনির সামনে কেমন নিস্প্রভ হয়ে আসে।

স্মৃতির চড়ুইগুলো কি আরো ধুষর ছিল?
আমান হাটে আর ভাবে। একজন পরাজিত মানুষ। যার স্মৃতির চড়ুইগুলো কেবলই ধুষর থেকে ধুষরতর।
আমান। একজন অতি সাধারণ মানুষ। অন্তর্মুখী জীবনে অভ্যস্ত একজন পলাতক মানব। পলাতক সময়ের বুকে হারিয়ে আছে।

সময় কত বদলে গেছে এখন। ইচ্ছে-অনিচ্ছের গন্ডি নূণ্যতম মূল্যবোধেরও 'থোরাই কেয়ার' করে।
বড্ড বোবা সময় এখন।
চোখে ঘষা কাচের দৃষ্টি। আর ব্রেইনে কিছু Pre-Arranged Instructions নিয়ে বেচে থাকা রোবট মানুষগুলোর, অনুভূতি ক্রমেই শুণ্য হয়ে আসছে।
অনুভূতিহীন ভালোবাসায় ওদের হৃদয় একদিন ঠিকই মরে যাবে। এখন প্রয়োজন অনুভূতির ব্যবচ্ছেদ।

শুণ্য অনুভূতি নিয়ে যে পৃথিবীতে ভালোবাসা ধুঁকে মরে, কেমন সেই পৃথিবী?
একটু থমকে দাড়ায় আমান। সামনের সবুজ টানেলটিকে এখন কালচে লাগছে।

ভালোবাসাহীন সেই পৃথিবীর শেষ মানুষ দুজন যদি ওরা হত! সে আর তার প্রিয়দর্শিণী। মৃত হৃদয়কে জাগিয়ে তুলতে সে সক্ষম ছিল। এক পলাতক চাঁদের পিছু ধেয়ে, সেই যে চলে গেল.....
আমান হাঁটে আর ভাবে,
'পলাতক রাত বিরহী চাঁদের টানে সব সময়েই কি ফিরে? আপন নীড়ে?

এক সন্ধ্যায়- যে সন্ধ্যায় আলো সবুজ, পথ সবুজ- এমনই পথে নিজের চোখের আলোয় জ্বলে উঠে, এক প্রিয়দর্শিনী, আমানের হাত ধরে হাঁটবে বলেছিল। আর আমানও হাঁটতে চেয়েছিল।
এখনো আমান একাই পথ হাঁটছে। চরম শুণ্যতায় ডুবে থাকা নি:সংগ প্রহরগুলোই এখন আমানের বন্ধু। ছায়াসংগী!

এই ছায়াসঙ্গীদেরকে সাথে নিয়ে আজো আমান অপেক্ষায় তৃষ্ণাতুর! অনুভূতিতে বেদনাবোধ বড্ড তীব্র অনুভূত হয়। আমানের পথগুলো এখন কালো, আঁধারে ঢাকিয়াছে বিশ্বচরাচর।  ধারেঅন্ধকারে  নিরন্তর এক সুপ্ত আশায় আমান পথ চলে। ওর অনুভবে কল্পনায়, সেই আঁধারকে ভেদ করে, সবুজ ব্যান্ড মাথার এক প্রিয়দর্শিনী, হাজার বছর পথ চলার ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে ওর সামনে এসে দাঁড়ায়। একটু হাসে। আমানের হাত ধরে, সবুজ টানেলের ভিতর দিয়ে ওকে জীবনের  পথে নিয়ে যায়!

কিন্তু প্রিয়দর্শিনীরা একবার চলে গেলে কখনো ফিরে কি?
১ Likes ২ Comments ০ Share ৪৮৮ Views

Comments (2)

  • - মাসুম বাদল

    পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম... 

    • - প্রলয় সাহা

      অপেক্ষা......