Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

নীলখামের সেই চিঠি-[অভ্র] (প্রতিযোগিতা/২০১৬) ক্যাটাগরী-২ পর্ব-৪

অভ্র, মাঘের সন্ধ্যায় জানাচ্ছি হৃদয় নিংড়ানো অফুরন্ত শুভেচ্ছা। ভাল আছ নিশ্চয়ই!! আশা করছি কিছুদিন আগের বিষন্নতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছ!! তবে আমার অবাক লাগে অভ্র তুমি বিষন্ন ছিলে... শুভ্র অভ্র তুমি কালো অভ্রতে পরিণত হয়ে পড়ছিলে। গলে গলে পড়ছিল তোমার কষ্টগুলো আর সেই কষ্টগুলো আমার হৃদয়ে চুয়ে চুয়ে পড়ছিল। অবাক এজন্য যে তোমার কষ্টগুলো অন্য কারো কাছ থেকে পাওয়া!!

 

তোমার হৃদয়বাড়ি সুনামি বয়ে গিয়ে তোমাকে তছনছ করে দিলো অথচ সেই কারণ আমি আজও জানতে পারিনি। অভ্র আমি তোমার কাছের কেউ হতে পারিনি তাইনা?? কেনো অভ্র!! তুমি তো আমার মনের আকাশের শরতের অভ্র ছিলে!! নীলের মাঝে পেঁজাতুলো অভ্র। ভেসে বেড়াতে নির্দ্বিধায়। বিশাল আকাশে ছিল তোমার অবাধ বিচরণ... আমি শুধু অপলক তোমাকে দেখেই যেতাম। ছুঁতে যাইনি হাত বাড়িয়ে পেতে চাইনি মন বাড়িয়ে!!

 

কল্পনায় ভেসে বেড়াতাম তোমার ডানায় চড়ে। অভ্র তুমি আমার স্বপ্ন হতে অথৈ ঘুমঘোরে... সবই ত অস্পৃশ্য থেকে করেছি.. তোমায় বিরক্ত করতে যাইনি পাছে তুমি ভেসে ভেসে আমার আকাশ ছেড়ে চলে যেতে পারো অন্য কারো আকাশে তাই!!

 

অভ্র আমার আকাশ ছেড়ে সেইতো চলে গেলে। আচ্ছা কার আকাশটা আমার আকাশের চেয়ে বড় বল দেখি?? সেই আকাশ বুঝি আমার আকাশের চেয়েও বেশি শুভ্রনীল?? আমি রোদ্দুর হয়ে তোমার পিছু নিয়েছি সেই কবে থেকেই... ভোরের রোদ্দুর হয়েছি কভু তোমাকে স্নিগ্ধ আভাসে ভিজিয়ে দিতে..... কভু হয়েছি বিকেলের মিষ্টি রোদ্দুর যাতে তুমি সেই মিঠে রোদের স্নেহ দেহে নিয়ে হাঁটতে পারো সীমাহীন মেঠোপথ ধরে।

 

অভ্র তুমি ভেসে বেড়াতে বিকেলের মিঠে রোদ মাথায় নিয়ে... তুমি ভাবতেও পারনি রোদ্দুর তোমায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে।হাত বাড়ালেই ছুঁতে পারতে আমায়। কারণ তুমি জানতেই না রোদ্দুর তোমার মাথায় ছাতা হয়ে ছায়া বিলাচ্ছে.. তুমি যখন বিষন্নতার সাগরে ডুব দিয়েছিলে অভ্র, রোদ্দুর তখন মধ্যাহ্নের ঝাঁঝাল রোদ্দুর হয়ে নিজের মাঝেই নিজে পুড়তে থাকে নিরবে নিভৃতে!!

 

পুড়ে ছাই হয়ে রোদ্দুর নিথর হয়ে ভুতলে লুটিয়ে পড়েছিল। জীবনের ছন্দগুলো হয়ে পড়েছিলো এলোমেলো। জীবনকাব্যের মাত্রা তাল লয় সকল ভুলে রোদ্দুর ঠাঁই নিয়েছিল আঁধার ঘরের এককোণে!! তুমি অনুভব করতে পারনি তখন রোদ্দুরের পুড়ে যাওয়ার অস্ফুট নিনাদ!!

 

তখন তুমি অন্যের আকাশে বসন্তের অভ্র হয়ে ভেসে বেড়াচ্ছিলে মনের আনন্দে তাই না অভ্র!! রোদ্দুর বহু কষ্টে উঠে দাঁড়িয়েছে আজ শরতের অভ্র ছাড়াই... রোদ্দুর জানে অভ্র কখনো ছোঁয়া যায় না,ধরতে গেলেই অভ্র গলে যায়। অভ্রকে শুধু মনের শাটারে ক্লিকের পর ক্লিক দিয়ে ফটো করে রাখা যায় অথবা অনুভূতির তুলির আঁচড়ে মন ক্যানভাসে জলরঙের ছবি এঁকে রাখা যায়।

 

অভ্রকে হাতের মুঠোয় বন্দি করা যায় না যেমন যায়না রোদ্দুরকেও মুঠোয় পোরা। অভ্র রোদ্দুর পাশাপাশি থাকে কিন্তু কেউ কারো বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে না!! কি আশ্চর্য্য তাইনা!! কেউ কাউকে ছুঁতেও পারে না!! রোদ্দুর ছুঁলে শুভ্র অভ্র কালো হয়ে যাবে আবার অভ্রকে ছুঁলে বৃষ্টি হয়ে অভ্র ঝরে পড়বে, রোদ্দুরের চোখের কোণে নদী হবে। রোদ্দুর তা হতে দেবে না... কারণ রোদ্দুর অভ্রকে বড্ড ভালবাসে। তার চেয়ে রোদ্দুর অভ্র গা ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাক পাশাপাশি। শরতের অভ্র হয়ে অভ্র ভেসে বেড়াক রোদ্দুরের মনাকাশের নীলে।

 

অভ্র রোদ্দুর চোখে চোখে তাকিয়ে থাক অনন্তকাল কাল ধরে। সকল চাওয়া পাওয়ার উর্ধ্বে অভ্র রোদ্দুর বন্ধু হয়ে থাকুক জীবনের গোধূলী লগ্ন পর্যন্ত এই আশা ব্যক্ত রেখে আজকের মত চিঠির সমাপ্তি টানছি..... ইতি... গ্রীষ্মের রোদ্দুর।

 

বি:দ্র-১: চিঠির উত্তর ত আশা করতেই পারি তাইনা!! অগুছালো লেখাগুলো নিজের মত করে গুছিয়ে পড়ে নিয়ো প্লিজ। মনের মাঝে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব রেখোনা। অভ্র আমাদের জীবনই এমন সব ভুলে যেতে হয়,ভালবাসা ভুলে আগাতে হয় নিজের জন্য। অভ্র আর রোদ্দুরের ভালবাসাও তেমন।

 

বি:দ্র-২: অভ্র এই চিঠিখানি অভ্র'র ঠিকানায় নীলখামে ভরে ঘুড়ির সাথে বেঁধে দিলাম । তুমি হাতে পেয়ে উত্তর দিয়ো কিন্তু।

 

২ Likes ২ Comments ০ Share ৪০৪ Views