Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

নাট্যমঞ্চ (প্রতিযোগিতা ২০১৬ - ক্যাটাগরি-০২, অনুগল্প, পর্ব-২)



কলাম করা একটি চারা গাছ এনেছিলাম। সময়টা শুধুই মনের দাবি। কখন, কোনদিন, কোন বার, কোন সময়ে? আকাশে কালমেঘ যখন স্বচ্ছ আকাশটাকে আধা জ্বলন্ত চুল্লির ধোয়ায় চোখে জল নিয়ে আসে ঠিক তেমনি। চোখের জল ছাড়া কিছুই বলতে পারি না। মনেও পড়ে না। শুধু বেদনার জল, স্মৃতির ছলছলানির কথাই স্মরণ হয়।

মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম কলামের চারা থেকে ফল আহরন করবো না। যেদিন পরিপক্কতা পাবে কিংবা যেদিন ফল দিয়ে সে তৃপ্ত হবে সেইদিন নেব। চারা গাছে একদিন মুকুল এলো এর পর ফলের পথে পথ চলতে শুরু করলো। একদিন ফল পরিপক্কতার রূপ ধারন করলো। লোভ সামলানোটা কষ্টের রুপে বেদনা হয়ে উপস্থিত হলো। সকল বেদনার অবসান ঘটিয়ে মনকে সান্ত্বনা দিয়েই অপেক্ষায় রাখেছি।

ফলের ঘ্রাণে চারদিক মৌ মৌ সুগন্ধি। গাছের নিকট যাই আর ফলের পানে চোখ মেলে তাকাই। মাঝে মাঝে হাত বুলিয়ে দেই। একদিন ভাবতে থাকলাম। ফল পূর্ণতা পেয়ে গাছের নিচে পড়ুক। কলামের চারা নয় নাড়ীর চারা নিয়ে অন্য কোথাও বপন করবো।

দিন গেলো মাস গেলো। চারা গাছের নীচে চারার চারা দেখতে পেলাম। কি সতেজ চারা গাছের পাতা, কাণ্ড। খুব মায়া হলো মাটির বুক চিরে কিভাবে চারাটি অন্য স্থানে স্থানান্তর করি। দিনে দিনে মায়া বেড়েই চললো। আর হলো না চারা গাছটি উত্তোলন করে অন্যত্র বপন করা।

দিন,মাস, বছর পেরিয়ে চারা আর চারা নেই যৌবনের জোয়ারে ভাসছে। যার নিকট থেকে তার বেরিয়ে আসা আজ সে তার থেকেও অনেক অনেক বড় হতে চলেছে। কলামের সেই গাছটি আজ চারা গাছের আড়ালে খাবারের অভাবে শুকিয়ে গেছে। কোন মায়া মমতাই নেই। হায়রে চারা বৃক্ষ, যেখান থেকে তোর আসা সেই রাস্তাকে এভাবেই তিলেতিলে ধবংস করে দিলি।

একদিন কলামের গাছটির পাতা,মূল,কাণ্ড টলতে শুরু করেছে। অবহেলা অযত্নে আর কতদিন। খাবারের অভাবে আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এতো গুলো ফল জন্ম দিয়েও আজ সে খাবারের অভাবে ঠিক ফাঁস দেয়া মানুষের মতো শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। সেদিন রোদ-বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করে কি লাভ হলো। যেই রক্ষক আজ তাকেই ভোগ করে নিলো।

সৃষ্টির সৃষ্টতা সত্যই বড় অদ্ভুদ। একদিন সেও হয়তো এভাবেই কারো না কারো ভোগের সামগ্রী হয়ে পৃথিবীকে বিদায় জানাবে। আসলে ভবিষ্যত নিয়ে কেউ ভাবে না। বর্তমানকেই স্বর্গ ভেবে ভুলে যায় সৃষ্টির রহস্য। সৃষ্টি মাঝেই যে ধবংস সে কথা ভুলে যায় ক্ষণিকের আহলাদে, স্বার্থে। সত্য এটাই চলে যেতে হবে সবার। জীবনটা নাট্যমঞ্চের চেয়েও কঠিন নাট্যঙ্গায়ন।

জন্মিলে মরিতে হবে রে, জানে তো সবাই
তবু মরণে মরণে অনেক
ফারাক আছে ভাই রে, সব মরণ নয় সমান।।
”— প্রতুল মুখোপাধ্যায়

২ Likes ২ Comments ০ Share ৩৯৯ Views

Comments (2)

  • - গোখরা নাগ

    কম্পিউটারের ডিলিট অপশনের মতো একটা অপশন মস্তিষ্কে বড্ড প্রয়োজন।

    • - মেঘা নওশীন

      খুব ভাল লিখেছেন... emoticons