পৃথিবীতে কেউ কারো নয় তবুও কোথায় যেন একটা বাঁধন থেকে যায়। পৃথিবী মানুষকে তখনই আপন করে নেয় যখন মানুষ সংগ্রামী হয়। বন্ধন ঠিক করার জন্য কিছু একটা করতে ,সভ্র সমাজ এটাকে আবার সৌজন্যতা বলে। কিছু সম্পর্কে আবার সৌজন্যতা না থাকলেও বন্ধন থেকে যায়। যেখানে সৌজন্যতা নেই সেখানে কর্তব্য এসে ভীর জআয়। জন্মদ্ত্রী হিসেবে আমি মাকে একটু ভালোবাসী। তার প্রতি ভালোবাসাটা একটু বেশী। কারণ হিসেবে বলা যায় কৈশোর সম্পূর্ণ না পেরূতেই বাবা ইন্তেকাল করেন। আর পিতা মহের নাম ছাড়া অন্য কিছু আমি জানি না। কবে সেই ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে গিয়েছিলাম আজ ভাসা ভাসা মনে পড়ে। কোন আত্মীয় স্বজনের আদরের কথা আমি বলতে পারি না। বলা যায় নিঃসঙ্গ অবস্থায় মাকে সঙ্গী করে নিয়েছি। সন্তান হিসেবে মা আমাকে একটু বেশী ভালোবাসেন। কিন্তু তার মনে একটা আশংকা আছে - এখন তাকে যেভাবে ভালোবাসি ,সময় দেই,রাতভর গল্প করি,অন্য কোন মেয়ের সাথে মিশলে তা আর করবো না। মা’র আশংকা অমুলক নয় কিন্তু আমি আর পাঁচ জনের মতো চলাফেরা করলেও মনের দিক থেকে সবসময় ষষ্ঠ জনকে অতিক্রম করতে চাই। এরই মধ্যে আর একজন প্রেমা এসে আমার বাঁক পরিবর্তন করে। কিন্তু মায়ের প্রতি আমার ভালোবাসার কিংবা সময় দেবার অভাব হয় না।
প্রেমার কথা মা জানতেই পারে না। কিন্তু মা মন খারাপ করতে লাগলো যখন শ্রাবণী আপাকে সময় দিতে লাগলঅম। আমার বেশ কয়েকজন রক্তের বোন আছে। তারা বাসায় কয়েকদিন রাখতে পারে,কিছু গিফট অথবা অর্থ হাতে দেয়। কিন্তু তাতে আমার মন ভরে না। কারণ আমি আদরের কাঙ্গাল। এটা আমি পারলে জোর করে আদাই করি। তাই তো শ্রাবণী আপাকে নিজের বোন করে নিলাম। দিনে দিনে তাকে সময় দেয়া বাড়িয়ে দিলাম। শ্রাবণী আপ জানে একদিকে মা আর এক দিকে তিনি। প্রেমার কথা জানলেও তিনি অতটা ভাবেন না। প্রেমা আমাকে একা করে দিয়ে একদিন চলে গেলো ভিন্ন অন্দরে। সে স্থান পূরণ করতে এলো কবিতা। কবিতা আমার পূর্ব পরিচিতা। সেও প্রেমার কথা জানতো। কবিতা নিজের চেষ্টায়,একাগ্রতায় আমাকে আপন করে নিলো। নিঃসঙ্গ নীল কষ্টের মনটা তাকে সমর্পন করলাম। তার স্লিকি লম্বা কেশে আমি বনলতাকে খুজে পেলাম। কবিতাকে নিয়ে কবিতা লিখতে লিখতে শ্রাবণী আপার কথা জানালাম। প্রথমে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করলো। পরে দেখলাম এক অন্যকে স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছে না। এমনকি আমার গর্ভধারীনি মা নিজেও। এটা সম্ভবত মেয়ে মানুষের ধর্ম। প্রত্যেকে নিজের টুকু আদাই করতে চায়। তাদের তিন জনেরই ধারনা- যদি ।ন্য জনের সাথে মিশতে দেই তবে তার প্রতি ভালেঅবাসা কমে যেতে পারে!
ওরা যে সময় নিজেদের অবহেলার কথা ভাবছে সে সময় আমি নিজের অক্ষমতা খোজার চেষ্টা করছি। কারণ এই অক্ষমতা অনুষন্ধানে ব্যর্থ হলে চিত্তের কষ্ট বেড়ে যাবে। কেন আমাকে প্রেমা গ্রহন করলো না ?তাকে আর পাবো না ধ্রুব সত্য। তাই বলে কবিতাকে তো ঠকাতে পারবো না। গর্ভধারনীকে কিংবা শ্রাবণী আপকে অবহেলঅ করতেও পারবো না। প্রেমাকে না পাওয়ার ব্যর্থতায় আমকে নতুন গ্রহের পথের সন্ধান দিয়েছে। এদের সাথে আমার সাধারণ সম্পর্ক প্রেম নয় স্রোতস্বিনী হৃদয়ের ধ্রুব সম্পর্ক।