Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ভূতের আছড়

১০ বছর আগে

তোমারে বধীবে যে গোঁকুলে বাড়িছে সে...

মুসা (আঃ) -এর সময় যে ফেরাউন ছিল তিনি ১৮ তম রাজবংশের, তার নাম ‘কাবুস’ বলে উল্লেখ করা হয়। সে যুগে ফেরাউন হতো মিসরের সম্রাটের খেতাব। ফেরাউন যখন স্বপ্নে দেখলেন যে, বনী-ইসরাঈল বংশে জন্মগ্রহণকারী এক পুত্রসন্তান কর্তৃক তিনি বিতাড়িত হবেন। তার রাজত্বের অবসান ঘটবে এবং তার প্রবর্তিত দ্বীনের পরিবর্তন হবে। তখন তিনি তার পারিষদবর্গকে এ বিষয় অবিহত করলেন এবং এর ব্যাখা জানতে চাইলেন। হামান ছিলেন ফেরাউনের মন্ত্রী তাদের স্বপ্নের ব্যাখার ভিত্তিতে ফেরাউন শাঙ্কিত হয় এবং তার প্রতিকার হিসেবে তিনি ফরমান জারি করেন যে, বনী-ইসরাঈলের কোন নবজাতক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করলেই যেন তাকে হত্যা করা হয়।
এত নিরাপত্তা এত পুত্র শিশু হত্যার পরেও সেই ফেরাউনের গৃহেই বড় হয় শিশু মুসা। ঠিক এই ঘটনার সাথে সনাতন ধর্মের মহা মানব শ্রী কৃষ্ণ এর জীবনের বেশ মিল পাওয়া যায়। সম্ববত শ্রী কৃষ্ণকে নিয়ে এমন মন্তব্য “তোমারে বধীবে যে গোঁকুলে বাড়িছে সে” করেছিলেন তখনকার জ্যোতিষগন। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় এই দুইজন একই ব্যাক্তি কিনা। শুধু কালের প্রবাহে পরিমার্জন পরিবর্ধন হতে পারে। আমার সীমিত জ্ঞানের ধারনা মাত্র হতে পারে পুরোটাই ভুল বা সঠিক। তবে এখনো জানার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এরকম মিল পাওয়া যায় খ্রিষ্টান ধর্মের আব্রাহাম, সনাতন ধর্মের ব্রহ্মা, ইসলামের ধর্মের ইব্রাহীম (আঃ), এই তিনজনের জীবনের সকল কাহিনী একই রকম। স্ত্রী পূত্র সহ সব কাহিনী একই রকম।

যাক ধর্মীয় আলোচনা না করে জাগতিক আলোচনা করাই ভালো। না হলে কে আবার কোন ফতোয়া দিয়ে দিবে। কারণ ইদানীং ভার্চুয়াল মুফতি মাওলানার প্রাদুর্ভাব খুব বেশি । তার চেয়ে যে ঘটনা গুলোর ভিতরে ধর্মীয় ঐ ঘটনাগুলোর মতই শিক্ষা রয়েছে বুদ্ধিমানদের জন্য সেগুলো নিয়ে কথা বলি।

আমরা যদি জুলিয়াস সিজারের পালক পূত্র ব্রুটাসকে দেখি। ব্রুটাস তুমিও! এই কথাটি বলেছে তার বাবা সিজার। কারণ যখন বিশ্বাস ঘাতকরা তার বুকে ছুরি চালালো তাতে তার ছেলেও অংশ নিলো। আসলে প্রকৃতির প্রতিশোধ বড়ই নির্মম, কাউকে ক্ষমা করেনা। সে তার আপন মহিমায় প্রতিশোধ নিয়ে নেয় যা আমরা বুঝিনা বা মনে রাখিনা।
বেনিতো মুসোলিনি তাকেও হত্যা করে কৃষকরা রাস্তার মোড়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে। কত অপমানজনক মৃত্যু।

হিটলার …তিনি স্বপ্ন দেখতেন সারা দুনিয়ার বাদশাহি করবেন। নির্মান করলেন অকল্পনীয় নিরাপত্তা বাঙ্কার যেখানে বোমা মারলেও কিছু হবেনা। অথচ নিজ প্রেমিকাকে নিয়ে নিজেই আত্নহত্যা করতে বাধ্য হন। লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যার নির্মম পরিণতি এটাই হয়তো। যদিও ৬ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ হত্যার সুত্রধরের মাত্র একবার আত্মহত্যা যথার্ত কিনা এটি আমার প্রশ্ন রয়েই গেছে। দ্বিতীয় বার মরার সুযোগও নেই।

লর্ড ক্লাইভ ইংল্যান্ডের সব চেয়ে বখাটে অফিসার তাকে পাঠাণো হলো এই বাংলায়
শোষণ করার জন্য। নিচ ও ষড়যন্ত্রকারী, শঠ ও প্রতারক হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। লর্ড ক্লাইভ ভারতবর্ষের দায়িত্ব পালন শেষে ফিরে যান লন্ডনে। সেখানে তিনি নিঃসঙ্গ অবস্থায় অবসর জীবনযাপন করেন। ওই নিঃসঙ্গ সময়ে বিগত জীবনের সমুদয় নিচুতা, অতীতের গ্লানি ও পাপ চিন্তায় তার মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ভারতবাসী বিশ্বাস করত, ক্লাইভের পাপই তাঁকে অসুস্থ করে দেয়। এবং পাপ চিন্তায় জর্জরিত ও অভিশপ্ত লর্ড রবার্ট ক্লাইভ ১৭৭৪ সালের ২২ নভেম্বর স্বীয় গৃহে নিজ পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেন। এটাও কত নির্মম পরিণতি।


মীর জাফর এর জীবনের দিকে তাকান কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৪ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। কত নির্মম জীবন ও মৃত্যু।
জুলফিকার আলি ভূট্ট তার আস্থাভাজন অফিসার দুর্ধষ জিয়াউল হককে চার জন সিনিয়র অফিসার ডিঙিয়ে পদন্নতি দিয়ে সেনা প্রধান বানান। পরিশেষে সেই জিয়াউল হকই ভূট্টকে ফাসিতে ঝুলিয়ে ঋণ শোধ করেন। এভাবেই ইতিহাস রচিত হয়। শুধু শিক্ষা নেইনা।

আমাদের দেশের দিকে যদি তাকাই সেখানেও সেই একই প্রতিচ্ছবি, সিনিয়র অফিসার বাদ দিয়ে তৎকালীন সরকার প্রধান আস্থাভাজন মঈন উদ্দিনকে সেনা প্রধান করে। কিন্ত ইতিহাসের শিক্ষা অনুযায়ী এখানেও কোনো হেরফের হয়নি সব চেয়ে মরণ কামড় তখনকার প্রধান মন্ত্রীকেই দেয়। পূত্রকে মেরুদণ্ডহীন করে দেয় অমানুষিক টর্চার করে। নেত্রিদ্বয়কে দেয় জেলে। মূল কারণ হচ্ছে আমরা পড়াশুনা করিনা আর ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেইনা। আর এ দেশে মূর্খ্য না হলে রাজনীতিতে ভালো করা যায়না। তাই পড়াশুনার প্রয়োজনও নেই। অথচ ইতিহাস বড়ই নির্মম সব কিছু ধ্বংস করে দেয়। রক্তের ঋণ রক্ত দিয়েই শোধ করতে হয়। জীবনের ঋণ জীবন দিয়ে।


শুধু কি এখানেই শেষ? না তা নয়। আমরা ভুল থেকে শিক্ষা নেইনা একই ভুল বার বার করি। বর্তমান সরকার প্রধানও সেই পথে হাঁটছে। আমার জানা মতে কিছু অফিসার যারা এখন মেজর জেনারেল হওয়ার কথা তাদের যোগ্যতানুযায়ী।অথচ, তাদের কর্নেল পর্যন্ত হয়ে হালিশহর থেকে বিভিন্ন গুরুত্বহীণ এলাকায় কর্মহীণ করে রেখে দেয়া হয়েছে আর কম যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তিদের পদন্নতি দিয়ে ক্ষমতার চূড়ায় আহরণ করানো হচ্ছে। তাহলে ইতিহাস এখানে ব্যাতিক্রম কোনো শিক্ষা দিবে নাকি রচিত হবে চিরায়ত সেই শিক্ষা মূলক ইতিহাস?

• যেকোনো ধরনের গালি বা বিতর্ক পাঠানোর জন্য বার্তা ব্যাবহার করুন। এতে পরিবেশ সুন্দর থাকবে।
• আমি বলিনা আমার চিন্তাই সঠিক হতে পারে আপনার চিন্তাই সঠিক।

মে ০৬, ২০১৩

১ Likes ৬ Comments ০ Share ৭২০ Views

Comments (6)

  • - ইসমাইল হোসেন

    বুদ্ধিজীবিরা রাজনীতির নামে অনেক ক্ষতি করতেছে।

    - নীল সাধু

    সুবিধাটা সকল তরফেরই। মুখস্ত বিদ্যার মত বুদ্ধিজীবীতায় বরং ভয় বেশি। 

     

    সার কথা।

    ধন্যবাদ এম রহমান। শুভেচ্ছা সালাহ উদ্দিন শুভ্রের জন্য!