Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

nushrika mahdeen

১০ বছর আগে

জয়া আহসানের সাক্ষাতকার

জয়া আহসান, একাধারে মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি অভিনয় জগতে এসেছিলেন টিভি মিডিয়ার মাধ্যমে। অসংখ্য নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। গত কয়েক বছরে তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। হাতেগোনা কয়েকটি সিনেমাতে কাজ করে জিতে নিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তিনি নাসির উদ্দীন ইউসুফের চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’য় অভিনয় করে ২০১১ সালের সেরা অভিনয় শিল্পীর খেতাব পান। ২০১২ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকাতেও তার নাম আছে একই ক্যাটাগরিতে। চোরাবালি’ সিনেমায় অভিনয় করে তিনি এই গৌরব অর্জন করেছেন। এদিকে চলতি বছরে জয়া প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ধারার কোনো সিনেমায় অভিনয় করেছেন। পূর্ণ দৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি’ শিরোনামের সিনেমাতে তিনি অভিনয় করেছেন শাকিব খানের বিপরীতে। এই ঈদে দেশের বেশকিছু প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে। এই সিনেমায় তার কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং চলচ্চিত্র ও টিভি মিডিয়া নিয়ে তার মতামত দিয়েছেন এই সাক্ষাতকারে।

প্রশ্ন: পূর্ণ দৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি’তে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
জয়া: কিছুটা নতুন অভিজ্ঞতা তো ছিলই। এ ধরনের সিনেমায় প্রথম কাজ করলাম। তাই এই পরিবেশ আমি বেশ উপভোগ করেছি। এখানে কাজের ক্ষেত্রে এক ধরনের ধারাবাহিকতা থাকে। ধরে ধরে কাজ করতে হয় এখানে। আমি সচরাচর সংলাপ মুখস্থ করে ফেলতাম। এটা যেহেতু একটি ফরমেটিভ সিনেমা, এখানে সিক্যুয়েন্সগুলো ধারণের সময় বাইরে থেকে উচ্চস্বরে সংলাপ বলে দেন কেউ একজন। আরও নানা ধরনের আয়োজন থাকে। সব আয়োজনই বিশাল বিশাল। সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার।

প্রশ্ন: এই সিনেমায় জয়াকে নতুন রূপে দেখা যাবে। নিজেকে এভাবে বদলে ফেলার অনুভূতি কেমন?
জয়া: এই সিনেমাতে আমি সেইসব পোশাক পরেছি, যা চরিত্র এবং সিক্যুয়েন্স ডিমান্ড করেছে। আমরা শতভাগ বিনোদননির্ভর সিনেমা করতে চেয়েছি। এখানে ঝকমারি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। একজন শিল্পীর তো তাই করা উচিত, যা তার চরিত্র ডিমান্ড করে।
 
প্রশ্ন: সিনেমার গানে আপনাকে নাচতেও দেখা গেছে। এ জন্য কি কোনো প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
জয়া: সিনেমার গানের কোরিওগ্রাফিতে অল্পকিছু মুদ্রার ব্যবহার আছে। গানের সঙ্গে নাচের যে বিষয়টি, সেটা কোরিওগ্রাফার যেভাবে বলেছে সেভাবে করেছি। এটা যে কোনো শিল্পীর জন্য তেমন কষ্টসাধ্য নয়। আমাকে যেভাবে বলেছে আমি সেভাবেই পারফর্ম করেছি।

প্রশ্ন: শাকিব খানের সঙ্গে প্রথম বারের মতো কাজ করলেন। সহশিল্পী হিসেবে শাকিব খান কেমন?
জয়া: শাকিব খান যখন কাজ করেন, খুবই আন্তরিকভাবে করেন। কাজে ঢুকে গেলে তিনি একদমই অন্য মানুষ। এই সিনেমাতে তিনি নিজেকে নতুন করে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। অনেক পরিশ্রম করেছেন শাকিব। কস্টিউম থেকে শুরু করে চলনে বলনে নিজেকে ভাঙার চেষ্টা করেছেন। আমরা এই কাজটির জন্য অনেক শ্রম দিয়েছি। শাকিব খুবই অভিজ্ঞ অভিনেতা। এই সিনেমায় তার অনেক ইনপুট আছে। সবার সঙ্গেই বিভিন্ন কিছু শেয়ার করেছেন তিনি। অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন। অনেক পরামর্শও দিয়েছেন। খুবই কোঅপারেটিভ একজন মানুষ।
 
প্রশ্ন: এই সিনেমাতে আরেফিন শুভও আপনার সহশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। শুভ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
জয়া: আমি শুভর সঙ্গে এর আগে একটি টিভি প্রযোজনায় কাজ করেছিলাম। আমিও যেমন টিভি থেকে এসেছি, শুভও তাই। সেক্ষেত্রে শুভর সিনেমায় অভিনয় শুরু করার বিষয়কে আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই অ্যাপ্রেসিয়েট করছি। সিনেমার জন্য শুভ খুবই পারফেক্ট। এ সিনেমাতেও তিনি খুব ভালো করেছেন। তিনি যেভাবে কাজ করেন এবং করছেন সেক্ষেত্রে সিনেমার জন্য তিনি খুব ফিট। আমার বিশ্বাস শুভ সিনেমায় অনেক ভালো কিছু করবেন। এই সিনেমায় শুভর সঙ্গে কাজ প্রসঙ্গে বলব, তার সঙ্গে আমার বোঝাপড়া আগে থেকেই ভালো। এখানেও আমাদের বোঝাপড়া অটুট ছিল।

প্রশ্ন: এই সিনেমাতে আপনি শাকিব খান ও শুভ দুজনের সঙ্গে কাজ করেছেন। আপনার মতে কার সঙ্গে কেমিস্ট্রিটা ভালো ছিল?
জয়া: এই সিনেমাতে শুভর সঙ্গে আমার খুব একটা দৃশ্য নেই। শাকিবের সঙ্গেই ওর বেশি দৃশ্য। তবে দুজনই আমার সহশিল্পী। আমরা একটা টিম হয়ে কাজ করেছি। আর আমাদের কেমিস্ট্রির বিষয়ে আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আর বলবেন দর্শকরা।

প্রশ্ন: আপনি পরপর দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন। এই সিনেমা নিয়েও কি সে ধরনের প্রত্যাশা আছে?
জয়া: প্রথমত এই সিনেমাটি আমরা করেছি দর্শককে আনন্দ দেওয়ার জন্য। সে জন্য ভালো একটি কাহিনি দরকার ছিল। সেই কাজটি করেছেন রুম্মান রশিদ খান। ভালো কিছু গানের প্রয়োজন ছিল সেটি লিখেছেন কবির বকুল। শওকত আলী ইমন গানগুলোর সংগীতায়োজন করেছেন। কণ্ঠশিল্পীরাও ভালো গেয়েছেন। আমরা সবাই মিলে একটা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছি। সম্পূর্ণ বিনোদননির্ভর একটি সিনেমা তৈরি করাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। পুরো কাজটিই হয়েছে ফরমেটিভ ওয়েতে। তার মধ্যেই প্রথাগত গল্প থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা আমাদের ছিল। এরপরেও যদি কোনো পুরস্কার পেয়ে যাই তাহলে সেটি হবে বোনাস পাওয়া।

প্রশ্ন: এই সিনেমার পরে কোন ধরনের কাজের পরিকল্পনা করছেন?
জয়া: আমি কখনও পরিকল্পনা করে কোনো কাজ করিনি। ভবিষ্যতে কোন ধরনের কাজ করব তা নিয়েও কোনো আগাম ভাবনা নেই। আমার করতে ভালো লাগবে এ ধরনের যে কোনো কাজই আমি করতে চাই। সেটা হতে পারে কোনো জীবনঘনিষ্ট কাজ। আবার বাণিজ্যিক ধারার ভালো কাজ পেলেও আমি করব।

প্রশ্ন: টিভি পর্দার জন্য কাজ করবেন না আর?
জয়া: অনেকদিন হল টিভির জন্য কোনো কাজ করছি না। ওখানে খুবই জীর্ণদশা। যেসব কাজ হচ্ছে তা নিয়ে আমি খুবই হতাশ। এভাবে কাজ চলতে থাকলে আমি আর কাজ করতে চাই না। একমাত্র আমার পছন্দসই কাজ পেলেই হয়তো টিভি পর্দার জন্য অভিনয় করব।

প্রশ্ন: বর্তমানে আমাদের দেশের সিনেমা যে পথে আছে সেটা কি সঠিক বলে মনে করেন? এ দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে আপনার ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাই।
জয়া: আমাদের দেশের সিনেমায় কিছুটা পরিবর্তন তো এসেছেই। আগে দর্শকরা গোলাপী রংয়ের সিনেমা দেখত। সেখানে এখন দর্শক ঝকঝকে সিনেমা পাচ্ছে। একটা সময় অশ্লীল সিনেমা তৈরি হত। এখন সেটা একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কিছুকিছু সামাজিক সিনেমা হচ্ছে। দর্শকও হলে ফিরতে শুরু করেছে। আমাদের এই সিনেমাও তারই অংশ। সম্পূর্ণ ঝকঝকে বিনোদনমূলক সিনেমা নিয়ে আমরা দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছি।

দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে তখনই পরিবর্তন আসবে, যখন প্রচুর সিনেমা তৈরি হবে। বাজার অনেক বড় হবে। সিনেমা প্রদর্শনের জন্য অনেক সিনেমাহল থাকবে। এগুলো একটার সঙ্গে আরেকটা সংযুক্ত। ভালো গল্প, রুচিশীল নির্মাণ, প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার হলে এমনিতেই আমাদের সিনেমার ইতিহাস বদলে যাবে। আমরা শুধু দেশেই নয়, সারাবিশ্বে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নিজেদের তুলে ধরতে পারব। আর একটা বিষয় না বললেই নয়, যখন আমরা চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সমাজ গঠনে, জীবন গঠনে ভূমিকা রাখতে পারব, তখনই আমাদের চলচ্চিত্র স্বার্থক।

এখন আমাদের যুবকদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বিনোদনের কোনো মাধ্যম নেই। তারা প্রায় সকলেই কম্পিউটারকেন্দ্রিক জীবনযাপন করে। ফলে আমরা সবদিক থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন প্রয়োজন। সিনেমায় পরিবর্তন হলে বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। কেননা চলচ্চিত্র এমন একটি মাধ্যম যেখানে শিল্পের সকল শাখাকে কাজে লাগানো যায়। সংগীত, চিত্রকলা, নৃত্য, সাহিত্য, মাইমআর্ট, অভিনয় প্রভৃতির সমন্বয় হয় এই মাধ্যমে।

প্রশ্ন: আপনার নতুন সিনেমার খবর কী?
জয়া: সামনে দুটি সিনেমার কাজ করব। তবে সিনেমা দুটির নাম এখনই বলতে চাই না। ভারতের কলকাতাতেও একটির কাজ শুরু করব।

প্রশ্ন: আপনার অভিনীত ‘পারলে ঠেকা’ সিনেমার কী খবর?
জয়া: আমার সময় স্বল্পতার কারণে সিনেমাটির শুটিং শুরু করতে পারছি না। সিনেমাটির একটি গানই শুধু শুটিং করেছি।

প্রশ্ন: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
জয়া: আপনাকে এবং পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

০ Likes ৪ Comments ০ Share ৭০৭ Views

Comments (4)

  • - নীল সাধু

    শুভেচ্ছা আপনার জন্য!

    আমার কাছে লেখাটি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে। সুন্দর থাকুন।

    • - ইঞ্জিঃ আহম্মেদ রফিক

      আপনার জন্য শুভকামনা । ভালো থাকবেন আপনিও ।

    - ঘাস ফুল

    আপনার কোন লেখা মনে হয় এই প্রথম পড়লাম। খুব ভালো লিখেছেন রফিক ভাই। নিজের প্রতি বিশ্বাসই কেবল আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারে। ধন্যবাদ ভাই।  

    • - ইঞ্জিঃ আহম্মেদ রফিক

      শুভেচ্ছা নেবেন । আপনার মন্তব্য আমাকে অনুপ্রাণিত করলো । আমার এক ভাই আছেন কাজি উনিও লিমেরিক লিখেন । ভালই হল এখানেও লিমেরিক ।

       

    - সনাতন পাঠক

    সুন্দর লিখেছেন

    • - ইঞ্জিঃ আহম্মেদ রফিক

      আপনাকে শিউলি ফুলের শুভেচ্ছা ।

    Load more comments...