Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

জনপ্রিয় টিভি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের নন্দিত উপস্থাপক ফজলে লোহানীর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

সাংবাদিক, লেখক, চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক ফজলে লোহানী। সাংবাদিক-সাহিত্যিক-চলচ্চিত্র প্রযোজকের পরিচয় ঢাকা পড়ে গিয়েছিল তার উপস্থাপিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের আড়ালে। বাংলাদেশের টেলিভিশনের প্রথম জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান যদি কিছু মনে না করেন এর সফল উপস্থাপক তিনি। বলা হয়ে থাকে টিভি মিডিয়ার ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের জনক তিনি। কথা বলার অসাধারণ অঙ্গভঙ্গি আর অভিব্যক্তি তাকে অসাধরণ করে তুলেছিলো। মিডিয়ায় তার গড়ে তোলা ট্রেন্ডের মাঝে আজও ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সব ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান। টিভি ব্যক্তিত্ব ফজলে লোহানীর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮৫ সালের ৩০শে অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরন করেন। মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। 

জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফজলে লোহানী ১৯২৮ সালের ১২ মার্চ সিরাজগঞ্জ জেলার কাউলিয়া গ্রামে এক শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবু লোহানী ছিলেন সেই সময়ের সুপরিচিত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক এবং মা ফাতেমা লোহানী ছিলেন কলকাতা করপোরেশন স্কুলের শিক্ষিকা। ফজলে লোহানী সিরাজগঞ্জ বিএল স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তিনি সমমনা কয়েকজনের সাথে ঢাকা থেকে সাপ্তাহিক পূর্ববাংলা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের সাথে যুক্ত হন। ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে এমএসসিতে ভর্তি হন ফজলে লোহানী তবে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেননি তিনি। এরপর ১৯৪৯ সালে তাঁর সম্পাদনায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় উন্নতমানের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা ‘অগ্যতা’। পঞ্চাশের দশকে তিনি ইংল্যান্ডে যান এবং বিবিসিতে কাজ করেন। লেখক হিসেবেও তিনি যথেস্ট খ্যাতিমান ছিলেন। ষাটের দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে ফিরে এসে ফজলে লোহানী সাংবাদিকতা ও লেখালেখিতে আত্মনিয়োগ করেন। এ সময় মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন এবং মওলানা ভাসানীর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পেনশন নামে একটি চলচ্চিত্রও প্রযোজনা করেন । 

১৯৭৭-১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে টেলিভিশনে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান যদি কিছু মনে না করেন উপস্থাপনা ও পরিচালনা করেন। এই অনুষ্ঠানে শেষ অংশে থাকতো একটি করে টিভি রিপোর্টিং। আশির দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে টিভি রিপোর্টিং এর প্রবর্তন ঘটানোর মতো যুগান্তকারী কাজ তিনি করেছেন। বিশ্বখ্যাত টিভি রিপোর্টারদের মতোই গভীর অভিব্যক্তি নিয়ে হৃদয়ছোঁয়া ভঙ্গিমায় তার করা টিভি রিপোর্টিং মানুষকে কখনো হাসাতো, কাঁদাতো, কখনোবা করে তুলতো বেদনা ভারাক্রান্ত কিংবা ক্ষুব্ধ। ফজলে লোহানীর এই টিভি রিপোর্টিং দেখার জন্য লক্ষ লক্ষ টিভি দর্শক বিপুল আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতো। অনুষ্ঠানটি ১৯৭৯ সালে থেকে তার মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত ছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে। প্রসঙ্গতঃ তার বড় ভাই ফতেহ লোহানীও ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা, আবৃত্তিকার, চিত্রপরিচালক, সাহিত্যিক, অনুবাদক ও বেতার ব্যক্তিত্ব। 

(ফতেহ লোহানী)

ফজলে লোহানী ১৯৮৫ সালের ৩০ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৮ বছর বয়সে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন । আজ তাঁর ২৮তম মৃত্যুদিন। যদি কিছু মনেনা করেন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানের জনক ফজলে লোহানীর মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।

০ Likes ১ Comments ০ Share ৯৭৬ Views