Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ছেলেদের কসমেটিক্ ও একটি আর্থনৈতিক ভাবনা

 

বয়সন্ধিরপরথেকে, ছেলেদেরজীবনে এক যন্ত্রনা যুক্ত হয়।যন্ত্রনার নাম দাড়ি কাটা! প্রথম শেভ করার ঘটনা, সব ছেলের সারা জীবনের মনে রাখার মত ঘটনা। প্রথম শেভ করার পর সেকি এক অদ্ভুত কিম্ভুত কিমাকার অনুভূতি! মুখটাকে ঢেকে রাখতে পারলে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচা যেত!

মনে আছে প্রথম কেনা শেভিং ফোম‍ ছিল ওল্ড স্পায়িস। লাল রঙের ক্যানের উপর পালতোলা জাহাজের ছবি। এখন তেমন একটা চোখে পড়েনা। জিলেটে ছেয়ে আছে বাজার। ফোম, জেল, রেজর, ব্লেড, আফটার সেভ কি নায় প্রোডাক্টলিস্টে? ছেলেদের এখন রং ফর্সাকারী ক্রিমও পাওয়া যায়!!!

কিছুদিন আগের কথা। জিলেট ফোমের বোতল যে শেষ হয়ে গেছে খেয়াল ছিল না। সপ্তাহে সেভ করি দু-দিন, এবং প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে। আমার ভিনদেশি বস তার জন্যে কম কথা বলেনি। আমিও হাল ছাড়িনি। রোজ রোজ সেভ করা আমার দ্বারা সম্ভভ না।

গত বৃহ:স্পতি বারের কথা। আনেক টিপে টুপে সামান্য ফোম দিয়ে সারা গেল সেভ। খালি ক্যানটা সেদিন ফেলে দিয়েছিলাম। আজ সেভ করতে গিয়ে পড়লাম বেকায়দায়। কি করা যায়? থেমে গেলে তো চলবেনা?

সাবান ঘসতে শুরু করলাম মুখে। সাথে সামান্য একটু শ্যাম্পুও যোগ করা হল। শেভ করতে যেয়ে পুরায় টাসকি। জিলেট ফোমের চেয়ে কোন আংশে কম যায় না। মাথায় আসল অন্য ভাবনা। একটা নতুন ‍সিদ্ধান্ত। একটা নতুন ভাবন। একটা ভিন্ন সম্ভবনা।

কেনা কাটার তালিকা থেকে ফোম বাদ।দামি রেজর বাদ।আফটার সেভ লোশন বাদ। আমার বাপ-দাদারা এগুলা ছাড়ায় জীবন পার করেছে। আমার সমস্যা কোথায়। একটা ওয়ানটায়িম রেজর ব্যাবহার করা যায় ৩ থেকে ৭ বার; দাড়ির ধরন বুঝে। ২ মাসে সাধারন ব্লেড আর সাবান শ্যাম্পু খরচ খুব বেশি হলে ১০০টাকা। আর এতদিন লাগত ১০০০টাকা। চিন্তাকরাযায়!!!

বিদেশি পণ্যে ছেয়ে গেছে ‍দেশ। যা কিছু আমাদেরকে কিনতে প্ররোচিত করা হয়, তার একটা বিশাল আংশ অপ-প্রয়োজন। মূলত বিলাসিতা তার নিমিত্ত। এ ধ্যান-ধারনা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। ৯০% লোক যে দেশে ভাতের নিশ্চয়তার জন্যে ব্যায় করে সারাটা জীবন, সে দেশের লোকের বিলাসিতা মানায়না। ১৯০টাকা দিয়ে একটা ব্রয়লার মুরগির ঠ্যাং এর চিকেন ফ্রায় খাওযার সময় একবার ভাবা উচিত্ ১৯০ টাকায় একটা আস্ত মুরগি কিনতে পাওয়া যায়। ফাস্ট ফুড আমাদের কালচার নয়। ওতে অভ্যস্ত হওয়ারও দরকার নায়। টাকাতো যাবে, সাথে শরীরের বাজবে বারটা।

একটু চেষ্টা করতে দোষ কি? বিলাসিতার লাগাম টেনে টাকা যদি কিছু বেঁচে যায়, তাতে তো আমদেরয়ি লাভ।

ষোল শতকের শুরুতে যখন ভার্জিনিয়ায় প্রথম বসতি গড়ে উঠেছিল তখন তার ভিত্তি ছিল তামাক। ৩০০ বছর ধরে তামাক ছিল আমেরিকার ক্যাশ ক্রপ। সারা পৃথিবী জুড়ে আমেরিকা তামাক ছড়িয়ে দিয়েছে নিজেদের ব্যাবসায়িক স্বার্থে। প্রথম দিকে তামাক কে গ্রহন এবং জনপ্রিয় করা হয়েছিল, তামাকের ভেষজ গুনের বয়ান দিয়ে।

আজ আমরা জানি তামাকের আসল রুপ। কিন্তু আভ্যাস রয়ে গেছে। সিগারেট আমরা যে ব্রান্ডের-য়ি কিনি না কেন টাকা বৃটিশ আমেরিকার তবিলে যায়। আমি নিজেও বৃটিশ আমেরিকার গোল্ডলিফ খায়।একটাও দেশি ভাল মানের সিগারেট পাওয়া যায় না। নেভি হল সর্বোচ্চ। আজ দেখি একটা নেভি ট্রায় করব। এত ভাল খুঁজে কি হবে। ৯০% নিম্ন আয়ের মানুষ ১/২টাকা দামের সিগারেট খেতে পারলে আমিও পারব।

আমি সাধারন মানুষ। কোন বড় পরিবর্তন ঘটানোর সাধ্য আমার নায়।যারা পারেন, এক দিন নিশ্চয় ঘুম ভাংবে তাদেরা। একদিন হয়ত এমন পরিবেশ আসবে যেদিন বিদেশি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের কবল থেকে মুক্তি পাবে আমাদের অর্থনীতি। ভুলে গেলে চলবেনা গত কয়েক শতক ধরে অর্থনীতি চালাচ্ছে সভ্যতার চাকা।

 

পুন:শ্চ: নেভি সিগারেট খেয়ে দেখলাম। চলে তো! ধুমপান ক্ষতিকর। আরও ক্ষতিকর যখন ধুমপানের দ্বারা ‍বিদেশি কোম্পানির পকেট ভারি হয়। নীতি নির্ধারকরা দয়া করে এ বিষ পান থেকে আমাদের বিরত থাকার সুযোগ করে দিন। মার্কেটে সিগারেট না থাবলে কেও সিগারেট খাবে না। সচেতনতা বৃদ্ধির ভড়ং হল অর্থনীতির চক্ষু পরিষ্কারের হাতিয়ার। ওসব ভন্ডামোতে কাজ হবে না। সরাসরি নিয়িদ্ধ করতে হবে তামাক। তবে কাজ হবে। আর যে কৃষক তামাক চায় করে, সে তামাক বাদ দিয়ে খাদ্য শষ্য চাষ করলে আরও সমৃদ্ধ হবে আমাদের কৃষি।

১৯ নভেম্বর ২০১৩/ ৫ অগ্রহায়ন ১৪২০

০ Likes ৬ Comments ০ Share ৭০৩ Views

Comments (6)

  • - লুৎফুর রহমান পাশা

    আঁধারের সেই রাতে কুয়াশা মিশেছে তার সাথে
    দু'হাত দূরে ধোঁয়াশা স্বপ্নেরা দূরের পরে দূরে
    আলোঘর ভেঙ্গে পড়ে, প্রতিদিন কষ্টের নদীতে
    স্রোতেরাও থেমে যায় চাঁদে মলিন মুখ দেখে ।

     

    ভাল লেগেছে

    • - লিপু রহমান

      ধন্যবাদ, কবিতা ভালো লেগেছে বলে ।

    • Load more relies...
    - লুব্ধক রয়

    শুভেচ্ছা আপনার জন্য।

    কবিতা ভালো লেগেছে।

    - সনাতন পাঠক

    সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ।