Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

৮ বছর আগে

ছাত্রলীগের কাজ টা কি?

আমি শুধু জানতে চাই- বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কাজটা কি? অনেকের কাছেই জানতে চাইলাম- তারা নানান রকম কথা বললেন। একজন বললেন, সময়ের মেধাবী ও সাহসী সন্তানেরা ছাত্রলীগ করে। নেট ঘাটাঘাটি করে জানতে পারলাম- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষাপ্রাতিষ্ঠানিক অঙ্গ সংগঠন হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ মুজিব বাহিনী গঠন করে, যুদ্ধে অংশগ্রহন করে এবং বাংলাদেশ বিজয় লাভে ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এগুলোতো অতীত ইতিহাস, বর্তমানে তারা কি করছে অথবা গত দশ বছরে তারা কি কি কাজ করেছে?

পত্রিকা পড়ে জানতে পারলাম- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছায়ায় গড়ে ওঠেছে ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপ। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত নেতাকর্মীদের বাঁচাতে সাবেক ছাত্রনেতা ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেন। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ বলেছেন, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজিসহ কোন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের ছাত্রলীগে ঠাঁই নেই। যদি কেউ সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকে, তাদের ব্যবস্থা নিতে কোন ধরনের বিলম্ব হয় না। ছাত্রলীগে নিষ্ঠাবান ও মেধাবীদের একমাত্র স্থান বলে তিনি জানান। মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব, জন্তু-জানোয়ার নয়। বন্য পশুদের মত আচরণ না করে আমাদের মানুষের ভাষায় কথা বলতে হবে, কোনো সহিংস বা জন্তু জানোয়ারের মতন হুংকার না করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মতন আচরণ করতে হবে।

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে কোনভাবেই ছাত্ররাজনীতির প্রয়োজন নেই। কত মেধাবী ছাত্রের জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে শুধুমাত্র ছাত্ররাজনীতির বাকেঁ পরে। ছাত্রলীগ চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে দিনে দুপুরে বিশ্বজিৎকে...। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেপরোয়া সবচেয়ে বেশি ছাত্রলীগ। অনেকে মনে করেন, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তারা। ছাত্রলীগ আজ আর ছাত্রদের নেই। দেশের ছাত্র রাজনীতিই আজ আর ছাত্রদের হাতে নেই। ছাত্র রাজনীতির নামে কায়েম হয়েছে এক ধরনের তষ্করতন্ত্র। আমাদের নেতানেত্রীরাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দখলে রাখার জন্য আন্দোলনের নামে রাস্তায় গাড়ী ভাঙ্গা আগুন জ্বালানো পুলিশের সাথে ইটাইটি করানোর জন্য গুন্ডা পান্ডা মাস্তান সন্ত্রাসীদেরকে ছাত্র সাজিয়ে যার যার ছাত্র অঙ্গ সংগঠন সাজিয়েছেন। দুই নেত্রীর যিনিই ক্ষমতায় যান এই তষ্করদেরকে পালেন।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দলীয় সংগীত হচ্ছে ‘কাঁপিয়ে তুলবো সারা চরাচর কাঁপাবো দিগি¦দিক’। সত্যিই তাদের দলীয় সংগীতের মত আজ প্রতিটি জনপদ ছাত্রলীগের ভয়ে কাঁপছে। কিন্তু পত্রপত্রিকায় দেখি- সরকার দলের সুবিধা নিয়ে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করে যাচ্ছে ছাত্রলীগের নেতারা। আমি মাঝে মাঝে দেখি বেশ কিছু ছাত্রলীগের পোলাপান বিকট শব্দে রাস্তার উলটো পাশ দিয়ে হোন্ডা চালিয়ে যাচ্ছে, প্রতিটা হোন্ডায় দুইজন তিনজন করে বসা। তারা ট্রাফিক সিগন্যাল কি কখনও মানবে না? এই শিক্ষা তাদের কে দিল? জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষনেতার রাজনীতিতে হাতেখড়িও হয়েছে ছাত্রলীগ থেকে।

কোন জাতীয় নেতাটা বের হয়ে আসছে এই অপরাজনীতির মধ্য দিয়ে। ছাত্রদের কোন উপকারটা করছে এই ছাত্র সংগঠনগুলো। সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর উপর পাঠচক্র করে কোন লাভ নেই। যদি নিজের চরিত্রের পরিবর্তন করা না যায়। সেতু মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের বলেছে, চাঁদাবাজরা ভবিষ্যতে কখনো নেতা হতে পারে না। আজকের ছাত্রনেতা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ লিডার। ছাত্রনেতা যদি ছাত্রজীবনে চাঁদাবাজি, অস্ত্রবাজি করে বেড়ায় ভবিষ্যতে তার কোথাও ঠাঁই হবে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছাত্রলীগ তার নীতি আদর্শ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। যে ছাত্রলীগে গণতান্ত্রিক আন্দোলের অগ্রসৈনিক ছিল, সেই ছাত্রলীগের কারণেই গণতন্ত্র আজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

ছাত্রলীগ গঠনতন্ত্রে যা কিছু বলা হয়েছে সে অনুযায়ী ছাত্রলীগ চলছে ? ছাত্রলীগ কি আসলেই শিক্ষা শান্তি প্রগতির প্রতীক হিসেবে কাজ করছে? বিনয়ের সাথে বলতে চাই? আজ আপনারা যারা ছাত্রলীগ করেন, আপনারা কত জনইবা জানেন, ছাত্রলীগের মূলনীতি গুলো কি কি? বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দলীয় সঙ্গীত কে রচনা করেছিলেন? আমার শিক্ষক আক্ষেপ করে বলেন, রাজনীতির এখন যে ধারা, তাতে ছাত্র রাজনীতিই বন্ধ করে দেয়া উচিৎ বর্তমানে এর সামান্য সুফল নেই। ছাত্রলীগ ভাল না থাকলে যুবলীগ ভাল থাকবেনা, আওয়ামীলীগ ভাল থাকবেনা এমনকি প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারও ভাল থাকবেনা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেগড়া সংগঠন। ছাত্রলীগকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা কি ৬৫ বছরের গৌরব ও ঐতিহ্য অনুযায়ী তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব দেবে, নাকি পেছনে পেছনে হাঁটবে?


অনেকের মন খারপ হতে পারে, আমি আপনাদের নিরন্তর শুভাকাঙ্খি হিসাবে কথা গুলো উল্লেখ্য করলাম মাত্র। অনাবিল স্বপ্ন আর দিনবদলের অপরিমেয় প্রত্যাশার রক্তিম আলোয় উদ্ভাসিত অফুরন্ত প্রাণোন্মাদনা নিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় অগ্রসর হবে আমাদের সবার প্রিয় ছাত্রলীগ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা এবং শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন-উপযোগী আদর্শবান কর্মী গড়ার কারিগর হোক ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের কর্মীরাই পারে দেশটিকে পাল্টে দিতে,যদি তেমন কর্মী হয়। জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু।
০ Likes ০ Comments ০ Share ৪৭৩ Views