Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

শফিক সোহাগ

৯ বছর আগে

চলচ্চিত্রের কৃষকের সাথে কিছু স্মৃতি



“চলচ্চিত্র পরিচালনা শিখতে এসেছো তা খুব ভালো কিন্তু চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রতি তোমার যে আকাঙ্ক্ষা তা বাস্তবায়ন করা তোমার জন্য কিছুটা কঠিন হবে । বিশেষ করে চলচ্চিত্রে ভালো একটি চরিত্রে অভিনয়ে তোমার জন্য বড় বাধা হল উচ্চারণ সমস্যা । চট্টগ্রামের মানুষের জন্য উচ্চারণ ঠিক করা কিছুটা কষ্টকর তবে অসম্ভব কিছু নয় । তুমি তোমার উচ্চারণ ঠিক করার প্রতি মনযোগী হও, তা না হলে তোমার স্বপ্ন সফল করা কঠিন হয়ে পরবে । বুঝলে চিটাগং এর ভাই ?”  

 

উপদেশমূলক কথাগুলো আমাকে বলেছিলেন বাংলাদেশের কিংবদন্তী চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম স্যার । এফডিসি’তে ট্র্যাব আয়োজিত চলচ্চিত্র পরিচালনা প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন চাষী স্যার । সেদিন তিনি শুনিয়েছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাণে তাঁর দীর্ঘজীবনের অভিজ্ঞতার কিছু অংশ । চলচ্চিত্র নির্মাণের সঠিক মাধ্যম হিসেবে ডিজিটাল ফিল্ম নয় বরং ৩৫ মিমি ক্যামেরাতেই বিশ্বাসী চলচ্চিত্রের এই কৃষক । প্রশিক্ষণ দানের সময় চাষী স্যার সূক্ষ্মভাবে বুঝাচ্ছিলেন ৩৫ মিমিতে শব্দ ও দৃশ্যের সামঞ্জস্য রক্ষার কৌশল । কিন্তু আমার মস্তিস্কে কিলবিল করছিল শুধু ডিজিটাল ফিল্ম । ফলে একের পর এক ওলট-পালট প্রশ্ন করছিলাম । একসময় চাষী স্যার দিলেন এক ঝাড়ি । এরপর চিত্র এঁকে বুঝালেন শব্দ ও দৃশ্যের সামঞ্জস্য রক্ষার কৌশলটি । চাষী স্যারের সেই দীক্ষা এবং তাঁর স্মৃতি আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে ।  

 

চাষী স্যারের জন্মের পর তাঁর মামা ইমাম উদ্দিন শেরে বাংলা একে ফজলুল হককে অনুরোধ করেছিলেন ভাগিনার একটা নাম রাখার জন্য । শেরে বাংলা একে ফজলুল হক নাম রাখলেন “চাষী নজরুল ইসলাম” । শেরে বাংলার দেয়া এই নামের সঠিক বাস্তবায়ন করেছেন চলচ্চিত্রের এই কৃষক । বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন কিংবদন্তীর স্থান । ১৯৬১ সালে খ্যাতিমান পরিচালক ফতেহ লোহানীর সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে “আছিয়া” ছবির মাধ্যমে কাজ শুরু করেন চাষী নজরুল ইসলাম । মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা চাষী নজরুল ইসলামই স্বাধীনতার পর প্রথম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক ছবি “ওরা ১১ জন” পরিচালনা করেন । খ্যাতিমান এই পরিচালকের ছবিতে অভিনয় করেছিলেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান । সংগ্রাম ছবির শেষ দৃশ্যে আর্মিরা স্যালুট দিচ্ছেন এবং বঙ্গবন্ধু স্যালুট নিচ্ছেন এমন একটি দৃশ্যে বঙ্গবন্ধু অভিনয় করেছিলেন । এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী হয়ে করেছিলেন নেহরু, দিল্লি দূর নেহি ছবিতে । চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য চাষী নজরুল ইসলাম পেয়েছিলেন একুশে পদক ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আরও অনেক পুরস্কার ।

 

বাংলাদেশের ইতিহাসে চাষী নজরুল ইসলাম স্যার চিরকাল নক্ষত্র হয়ে থাকবেন সেই প্রত্যাশাই করি ।

শফিক সোহাগ

কলামিস্ট-বোস্টন নিউজ, যুক্তরাষ্ট্র 
কলামিস্ট-কর্ণফুলী ডট কম, সিডনী, অস্ট্রেলিয়া
কলামিস্ট- দৈনিক পূর্বকোণ 

Email: shafiq_shohag@yahoo.com
২ Likes ৪ Comments ০ Share ৫৮৪ Views

Comments (4)

  • - টোকাই

    ভালো লাগলো । পরের পর্বের অপেক্ষায়...

    - মামুন

    সাথে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।

    - টোকাই

    emoticons