Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজু আহমেদ

৯ বছর আগে

ঘুষ যদি বৈধ হয় তবে অবৈধ কি ?

যেখানে মানুষের বসবাস সেখানেবিশৃঙ্খলা ঘটবেই ছোট বড় অপরাধও সংগঠিত হবে ভালো কাজ করা যেমন মানুষেরসহজাত প্রবৃত্তি তেমন মন্দ কাজ করাও মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য পৃথিবীতেসবাই যদি ভালো কাজ করত তবে ভালো কাজের কোন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য থাকত না এমনকি তখন ভালো কাজ মানুষের কাছে আকর্ষণ হারিয়ে ফেলত মন্দের অস্তিত্ব আছেবলেই ভালোর মূল্য আছে মানুষ জন্মলগ্ন থেকেই উচিত-অনুচিত, বৈধ-অবৈধ, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য শিখতে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা ধর্মইমানুষকে বৈধ-অবৈধের সীমারেখা নির্ধারণ করে দেয় বাল্যকাল থেকেই মানুষনৈতিকতা-অনৈতিকতার মাপকাঠিধারণ করতে শিখে সব মানুষই চায় ভালো কাজ করে সুনামের সাথে বাঁচতে কিন্তুকখনো কখনো অনৈতিক এবং অকল্যান জেনেও মানুষ মন্দ কাজের দিকে পা বাড়ায় বিশেষ করে এমন কিছু অন্যায় মাধ্যম আছে যেখানে কেবল নৈতিকতা বিসর্জন দিয়েমূহুর্তেই যেমনি ধনবান হওয়া যায় তেমনি সমাজে মেকি সম্ভ্রান্তের মুখোশআচ্ছাদন করে বেশ বিলাসিতার মাধ্যমেই কাটানো যায় তবুও মানুষ চেষ্টা করেভালোভাবে থাকতে কিংবা ভালো পথে চলতে মানুষ যতদিন নৈতিকতার পথে চলবে ততদিনসমাজও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হবে এতদসত্ত্বেও বহু মানুষের বিচ্যুতি হয়এবং রাষ্ট্র কিংবা ধর্ম কর্তৃক সে বিচ্যুতি রোধে আইন কিংবা ধর্মীয় অনুশাসনমানতে বাধ্য করা হয় পৃথিবীতে কোন কালেই ভালো মানুষদের জন্য আইন করা হয়নিকেননা তারা কখনো অন্যায় করে নিজের দ্বারা সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয় ক্ষতিসাধন করে না যত আইন প্রবর্তিত হয়েছে তা সকল ক্ষেত্রেই দুষ্টু লোকদেরঅযাচিত উৎপাত বন্ধ রাখার জন্য অন্যদিকে ধর্মীয় অনুশাসন মানুষকে যেমনঅন্যায় ক্রিয়াকলাপ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ করে তেমনি কিভাবে মানবীয়গুনাবলীর বিকাশ সাধন করে উন্নত জীবনের সন্ধান পাওয়া যায় তার পথও বাতলে দেয় তবুও মানুষ নিজ স্বার্থ উদ্ধার করার জন্য জাতীয় কিংবা বৃহৎ স্বার্থ হুমকিরমূখে ঠেলে গিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তার করে কেউ যাতে সমাজেবিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অশুভ পাঁয়তারা করতে না পারে সেজন্য রাষ্ট্রও আইন প্রণয়ণ ওকতগুলো পন্থায় তা বাস্তবায়ণ করতে সচেষ্ট থাকে স্থানীয় প্রশাসনেরচৌকিদার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি অর্থ্যাৎরাষ্ট্রপতি পর‌্যন্ত সকলেই যে যার অবস্থানে অপরাধ দমনে নীতিগতভাবেদায়িত্বশীল এ দায়িত্বশীলরা যাতে দুর্নীতি কিংবা অন্যান্য অপরাধেনিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে না পারে সেজন্য জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিকজবাবদিহীতার পরেই নির্ভর করতে হয় ধর্মের ওপর সকল কিছুর পরেও কিছু মানুষঅপরাধ করে এবং মাত্র গুটিকয়েক মানুষের সে অপরাধ গোটা সমাজ ব্যবস্থাকেকলুষিত করতে যথেষ্ট গুটি কতক মানুষের অবৈধ উৎপাতকে দমন করার জন্য জনগনকিছু মানুষকে তাদের পাহাড়াদার নিযুক্ত করে তবে যখন সে পাহাড়াদারেরাইরক্ষক হয়ে যখন ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে তখন সে জাতির মত দূর্ভাগা জাতি আরকোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ

রাষ্ট্রীয় আইন কিংবাধর্মীয় নীতি অনুযায়ী আজন্মকাল থেকে মানুষ জেনে আসছে ঘুষ প্রদান কিংবাগ্রহন অবৈধ তবে মানুষের সে পূর্ব ধারণায় আমুল পরিবর্তনের মসলা দিয়েছেনদেশের আলোচিত-সমালোচিতবয়োবৃদ্ধ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বয়সে তিনি প্রবীন হলেও দেশের অর্থমন্ত্রনালয়েরদায়িত্ব পালনে তিনি যথেষ্ট প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে কিন্তু মাঝে মাঝে তিনিএমন সব উক্তি করেন যা তার মুখ থেকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বদৌলতে স্বকর্ণেশোনার পরেও বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় সদ্য বিদায়ী বছরের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম হলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারী ও রফতানিকারকদেরসংগঠন বিজিএমইএ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মধ্যে সহজ শর্তে ঋণ বিষয়ক সমঝোতাস্মারক সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে ঘুষ বিষয়ক এমন কিছুবক্তব্য দিয়েছেন যা দেশের প্রচলিত আইন, মানুষের বিশ্বাস এবং ধর্মীয়মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক তিনি ঘুষকে স্পিড মানিবা গতি সঞ্চারক অর্থঅভিহিত করে বলেন, ‘যা কোন কাজের গতি আনে, আমি মনে করি তা কোন অবৈধ বিষয় নয়, উন্নত দেশগুলোয় একে বৈধ করে দেয়া হয়েছে ভিন্ন নামেতিনি এ বিষয়ে আরোবলেছেন, ‘কারো কাজ দ্রুত করে দিয়ে উপহার নিলে তা অবৈধ মনে করা হয় কিন্তুএ ক্ষেত্রে আমি তা অবৈধ মনে করি নাঅর্থমন্ত্রী এ বাক্য কোন বিবেচনায়ব্যবহার করেছেন তা একান্তই তার নিজস্ব ব্যাপার কিন্তু তিনি এরকম উক্তিব্যবহার করতে পারেন কিনা ? একটি রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ্চ সম্মানিত স্থানে যেসকল ব্যক্তিদেরকে বিবেচনা করা হয় তার মধ্যে মন্ত্রীগণ অন্যতম মন্ত্রীদেরমধ্যেও আবার অর্থমন্ত্রীর অবস্থান শীর্ষ পর‌্যায়ে একটি রাষ্ট্রেরউন্নয়ণের ভবিষ্যত নির্ভর করে অর্থ মন্ত্রনালয়ের ওপর সেই মন্ত্রনালয়েরদায়িত্বপ্রাপ্ত একজন শু-শিক্ষিত, স্ব-শিক্ষিত মন্ত্রী যদি এমন কথা বলেন তবেতাকে কোন মানদন্ডে পরিমাপ করা যায় ? শুধু মুসলিম ধর্মগোষ্ঠীই নয় বরংবিশ্বের সকল বিধর্মী এবং ধর্মহীন জাতি ঘুষকে চরম অপরাধ মনে করে অথচউন্নয়শীল একটি রাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী যদি ঘুষ আদান-প্রদানের ব্যাপারে কোনঅন্যায় না দেখেন তবে সে জাতির চেয়ে দুর্ভাগা জাতি আর দ্বিতীয়টি আছে কিনাআমাদের জানা নাই মন্ত্রী পর‌্যায়ের ব্যক্তিবর্গের কথা রাষ্ট্রের সাধারণপ্রজাদের জন্য আইন স্বরুপ সেই মন্ত্রীমহোদয় যদি ঘুষকে বৈধ বলে মনে করেনতাতে তার অধিভূক্তরা কিংবা রাষ্ট্রযন্ত্রেরঅন্যান্য অঙ্গনে কর্মরত ব্যক্তিবর্গরা যদি মন্ত্রীর মতকে পালনীয় বলে মনেকরে তবে রাষ্ট্রের পরিনতি কি হবে তা ভাবা যায় ? শুধু ঘুষের ব্যাপারেইমাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় অনৈতিক উক্তি করেছেন তা নয় দেশের আলোচিতহলমার্ক কেলেঙ্কারিতে যখন রাষ্ট্রের চার হাজারের অধিক টাকা খোয়া গিয়েছিলতখন তিনি বেশ উচ্চস্বরেই ঘোষণা দিয়েছেলেন, এ সামান্য অঙ্কের টাকা যেতেইপারে অর্থমন্ত্রী হয়ত ভূলে গিয়েছিলেন তিনি বাংলাদেশের মত একটি রাষ্ট্রেরঅর্থমন্ত্রী তাই তার কাছে চার হাজার কোটি টাকা কোন উল্লেখযোগ্য অঙ্কই মনেহয়নি কিন্তু এদেশের সাধারণ মানুষ কখনো ভূলেন যে তারা গরীব বাংলাদেশেরমানুষ চার হাজার এমনকি চারশ টাকাও আমাদের কাছে অনেক কিছু সাধারণমানুষের সাথে অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের উদারতায় যদি এমন বিস্তর ফারাক হয় হবে সেদেশের অবশিষ্ট শৃঙ্খলাও যে ভেঙ্গে পরবে না তার নিশ্চয়তা কে দিতে পারে ? মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে বহিস্কার করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবীতুলবনা কেননা বয়সে তিনি আমার বাবার চেয়েও বৃদ্ধ তবে মাননীয় অর্থমন্ত্রীরউচিত, তার অযৌক্তিক বক্তব্যের জন্য ভূল স্বীকার করে পদত্যাগ করা এবং সেটাইতার জন্য এই বয়সে মঙ্গল জনক হবে বলে বিশ্বাস

আরবিসাহিত্যে একটা প্রবাদ আছে, ‘ব্যক্তির কথা তার জ্ঞানের মাপকাঠিশুধুঅর্থমন্ত্রীর জন্যই নয় বরং দেশের সকল দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের এ প্রবাদবাক্যটি সর্বদা স্মরণ রাখা এবং সে অনুযায়ী বক্তব্য দেয়া কিংবা পারস্পরিকআলোচনা করা উচিত ঘুষ কিংবা এ জাতীয় অন্যায় দেশে অহরহ হচ্ছে কিন্তু তাইবলে কি এটাকে বৈধতা দিয়ে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ নাকি কিভাবে এ অন্যায়-অবৈধলেনদেন বন্ধ করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা আবশ্যক যারা রাষ্ট্রনির্ধারিত সময উপযোগী পারিশ্রমিক পাচ্ছেন তাদেরকে ঘুষ নেয়ার জন্য উৎসাহিতকরা কিংবা ঘুষের ব্যাপারে এভাবে লাগাম ছাড়া কথা বলা সর্বদা রাষ্ট্রেরঅমঙ্গল বহন করবে এতে ব্যক্তিত্বের যেমন ক্ষতি হবে তেমনি সরকারেরওভাবমূর্তি অনুজ্জ্বল হবে সাধারণ মানুষ অপরাধ করার জন্য ওঁৎপেতে থাকে আরকর্তব্যরত ব্যক্তিরা যদি তাতে উৎসাহ দেয় তবে আর কি বলার থাকে যাদের ওপরজাতির হাল ধরার দায়িত্ব তারা যদি হাল ছেড়ে দিয়ে জাতিকে উল্টোপথে পরিচালনায়উৎসাহ জোগায় তবে সে কর্ণধারদের বিদায় করে দেয়া জাতির জন্য আবশ্যক হয়েদাঁড়ায় কাজেই দায়িত্বশীলদেরকেআরও সচেতন এবং দায়িত্ববান হওয়ার অনুরোধ থাকবে রিকশাওয়ালার পারিশ্রমিক আরদ্রুত গতিতে কাজ করে দেয়ার জন্য রাষ্ট্রের বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরমেলাতে যাওয়ার মত বোকামী করা অনুচিত বরং কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীদেরদ্রুত কাজ করে দেয়াই দায়িত্ব রাষ্ট্র যদি ঘুষকে বৈধ করে দেয় তবে সেখানেআর কোন অপরাধই অপরাধ বলে বিবেচ্য হওয়ার যৌক্তিতা থাকেনানিশ্চয়ইঅর্থমন্ত্রী সকল অপরাধকে বৈধতা দেয়ার গুরু দায়িত্ব নিবেন না রাষ্ট্রেরআইন ও প্রচলিত নিয়মের ব্যতিক্রম কিছু বলে বা করে অযথা হ-য-ব-র-ল অবস্থাসৃষ্টি করা কারো জন্য সমীচীন নয়


রাজুআহমেদ কলামিষ্ট
raju69mathbaria@gmail.com

০ Likes ১ Comments ০ Share ৪৬৯ Views

Comments (1)

  • - বিষ পিঁপড়ে / <u>তাইবুল ইসলাম</u>

    টানা গদ্যে লেখা কবিতা পরলাম অনেকদিন পর

    শুভেচ্ছা নেবেন 

    • - কে,এইচ, মাহা বুব

      মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন ।

    - তাহমিদুর রহমান

    কবিতার লেখাগুলো একসাথে হয়ে গেছে। 

    • - কে,এইচ, মাহা বুব

      ঠিক তাই ।  মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ।

    - ধ্রুব তারা

    এ কেমন গদ্য কবিতা ??

    Load more comments...