স্বপ্নের শহর যেমন হয় দার্জিলিং যেন ঠিক সেইরকম। ভারতের দার্জিলিং শহরটি পুরোটায় পাহাড়ের ওপরে। বাংলাদেশে যখন শীত পড়তে শুরু করে তখন দর্জিলিংয়ে বরফ পড়ে। আকাশের খুব কাছে দার্জিলিং শহর। দার্জিলিংয়ের পাহাড়ের উপর উঠলে মনে হয় মেঘের দেশে চলে এসেছি। মেঘ নিজে এসে ধরা দেয়। দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে চাইলে অপরূপ এই দার্জিলিং দেখতে যাওয়া যায়।
কিভাবে যাবেন: দার্জিলিং ভ্রমনের জন্য প্রথমেই আপনাকে ভারতের ভিসা করতে হবে। এবার টাকা ডলার করে নিন। দার্জিলিং যেতে হলে বাংলাদেশের বুড়িমারি বর্ডার হয়ে যেতে হবে। সড়ক পথে যেতে বাসের টিকেট করে নিন ঢাকার শ্যামলী অথবা গাবতলী থেকে। এই দুই জায়গা থেকে বুড়িমারির গাড়ি পাবেন। বাস ছাড়ে রাত ৮টার পর থেকে। ভোরে গিয়ে নামবেন বুড়িমারি বর্ডারে। নেমে হালকা নাস্তা করে নিতে পারেন। নাস্তা করার পর বাংলাদেশ বর্ডারে অফিসিয়াল কাজ সেরে ইন্ডিয়া চেংরাবান্ধা বর্ডারে গিয়ে একই ভাবে অফিসিয়াল কাজ সম্পন্ন করুন এবং আপনার সাথে থাকা লাগেজগুলো চেক করার জন্য দিন।
অফিসিয়াল কাজ শেষ হওয়ার পরে ডলার ভাঙ্গিয়ে ভারতীয় রুপি করে নিন কারণ ভারতে আপনার রুপি লাগবে। ডলার ভাঙ্গানোর পরে আপনার গন্তব্য দার্জিলিং ।
তাছাড়া ইচ্ছা করলে প্রথমে শিলিগুড়ি ঘুরে তারপর দার্জিলিং যেতে পারেন। দার্জিলিং যাওয়ার জন্য আপনাকে জিপে অথবা বাসে যেতে হবে। ৫-৭ জন হলে জিপে যাওয়াটাই ভালো। আবার বাসে যেতে চাইলে চেংরাবান্ধা মেইন রোডে যেতে হবে ভ্যান দিয়ে। মেইন রোডে গিয়ে বাসে করে ময়নাগুড়ি যেতে হবে । শিলিগুড়ি নেমে চাইলে কিছু খেয়ে নিতে পারেন। ১১-১২ টার মধ্যে শিলিগুড়ি পৌঁছে যেতে পারবেন। আপনি চাইলে দু’এক দিন শিলিগুড়িতে থেকেও যেতে পারেন। কেনাকাটা করার জন্যে ভালো জায়গা শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং বাতাসিয়া লুপ যেতে হলে জিপে অথবা টয়ট্রেনে যেতে পারেন। ৫-৭ জন হলে জিপে যাওয়াটাই ভালো। দার্জিলিং গিয়ে পৌঁছতে সময় লাগবে জিপে ৩ ঘন্টা, ট্রেনে ৫ ঘন্টা।
কোথায় থাকবেন: দার্জিলিং গিয়ে অনেক হোটেল পাবেন। পছন্দমত হোটেলে উঠে পড়েন। হোটেলের মধ্যে এবং বাইরে- দু’জায়গাতেই খাবার পাবেন।
দার্জিলিংয়ে কি কি দেখবেন: প্রতিটি হোটেলেই দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন জায়গা দেখার জন্য প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে। দার্জিলিংয়ের দেখার মত স্থানগুলো হলো- টাইগার হিল, কাঞ্চনজঙ্ঘা, রক গার্ডেন, গংগামায়া পার্ক, মিরিক লেক, এবং মেল। মেল হচ্ছে আমাদের টি এস সি এর মত, চমৎকার একটি জায়গা। দেখার মত আরও অনেক জায়গা আছে যা আপনি আপনার হোটেল থেকে অথবা দার্জিলিং সরকারি পর্যটন কেন্দ্র থেকে জেনে নিতে পারবেন। সময় ও রুট বিবেচনা করে দার্জিলিং শহর ও তার আশপাশের ভ্রমন কেন্দ্রগুলো ভাগ করা হয়েছে বিভিন্ন পয়েন্টে। যেমন টু পয়েন্টে বলতে গঙ্গামায়া পার্ক ও রক গার্ডেন ভ্রমন। থ্রি পয়েন্টে ভাগ করা আছে কাঞ্চনজঙ্ঘায় সূর্যদোয় দেখার জন্য টাইগার হিল, বিখ্যাত ঘুম বৌদ্ধ মন্দির বাটাশিয়া লুপ। ফাইভ পয়েন্টের অন্তভর্ুক্ত স্পটগুলো হচ্ছে জাদুঘর, জাপানি মন্দির লারকুঠি (কাউন্সিল ভবন), আভা আর্প গ্যালারি এবং ধীরধাম মন্দির ইত্যাদি। সেভেন পয়েন্ট বলে পরিচিত স্থানগুলো হচ্ছে, পদ্মজা নাইডু জু্যওলজিক্যাল পার্ক, বিখ্যাত হিমালয়ান মাউন্টেরিয়ান ইনস্টিটিউট, রোপ ওয়ে, পর্বতারোহণ স্বাদ পেতে, বিশাল এক পথে ওঠানামার জন্য তেনজিং রক, তিবক্ষতী রিঠুজি ক্যাম্প এবং হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র, চারদিকে সুউচ্চ উপত্যকার মাঝে সমতল মাঠ, দার্জিলিং গুর্খা স্টেডিয়াম ইত্যাদি।
দার্জিলিং সরকারি পর্যটন কেন্দ্র থেকে অনেক প্যাকেজ আছে ঘুরে দেখার মত। খুবই কম খরচে প্যাকেজগুলো উপভোগ করতে পারেন অতিথিরা। ছবি তোলা আর শপিং করার কথা কিন্তু ভুলবেন না। অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস কিনতে পারবেন অনেক কম দামে। কিন্তু দামাদামিটা আপনাকেই করতে হবে। প্রচন্ড সুন্দর এই দার্জিলিং যেনো একটি স্বপ্নরাজ্য।
তাহলে আর দেরী কেন ঘুরে আসুন মেঘের দেশ দার্জিলিং থেকে।
Comments (0)
চমৎকার কাব্যিকতা আপনার কবিতায়। ভালো লাগা জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ