Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

প্রবাসী একজন

৯ বছর আগে

ঘরের ধুলোয় অ্যালার্জি

যে ব্যক্তির বছরব্যাপী নাক থেকে পানি ঝরে, চোখ চুলকানি, চোখ থেকে পানি ঝরে, তার মূল কারণ ঘরের ধুলোর জীবাণু। ধুলোর কারণে অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়, নিঃশ্বাসের সঙ্গে কাশি হয়। ঘরের ধুলো অনেক জিনিসের মিশ্রণ।
এক ঘরে থেকে আরেক ঘরের ফার্নিচারের প্রকারভেদে, ঘর তৈরির উপাদান, পোষা প্রাণীর উপস্থিতি, আর্দ্রতার কারণে ধুলোর উপাদান কম-বেশি হতে পারে। ধূলোর মধ্যে থাকতে পারে সুতার আঁশ, মানব দেহের ত্বকের মৃত কোষ, প্রাণীর লোম, আণুবীক্ষণিক জীবাণু, তেলাপোকার মল, ছত্রাকের জীবাণু, খাদ্যকণা এবং পরিত্যক্ত ক্ষুদ্র জিনিস। এগুলোর মধ্যে প্রাণীর লোম, তেলাপোকা এবং ধুলোর জীবাণু হচ্ছে বিপজ্জনক। কোনো ব্যক্তি এগুলোর যে একটির কারণে অ্যালার্জিতে ভুগতে পারেন। তিনি যখন ধুলোর সংস্পর্শে আসেন, তখন অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ঘটে। ঘর পরিষ্কারে স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ধুলোর এলার্জি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়, কারণ ধুলোর সব উপাদন এভাবে দূর করা সম্ভব নয়। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, কার্পেট, মাদুর এবং বালিশ থেকে ধুলোর জীবাণু দূর করা যায় না।
ধুলোর জীবাণুগুলো কী কী : অতি ক্ষুদ্র এই প্রাণীগুলো আটপায়ের অ্যারাকনাইড পরিবারের অন্তর্গত। আঁটুলি পোকা এবং চিগার একই পরিবারভুক্ত। এরা ৭০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা এর উচ্চ তাপমাত্রায় বাঁচতে পারে। ৭৫-৮০ শতাংশ আর্দ্রতা এদের পছন্দ। শুষ্ক আবহাওয়ায় এদের দেখা যায় না। অ্যাজমা রোগীদের শতকরা ৯০ জনই এদের সংস্পর্শে এলে প্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এই জীবাণু দেহ ও মুখমণ্ডলের সংস্পর্শে এলে মানুষের অ্যালার্জি হয়। এদের সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বালিশ, মাদুর, কার্পেটের ভাঁজে এবং আসবাবপত্রের তলায়। ঝাড় বা ভ্যাকুয়াম ক্লিনার প্রয়োগ করলে সরে যায়। যে ব্যক্তি দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুমান তার নাক জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় বালিশে বাসা বেঁধে থাকা জীবাণুগুলোর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে থাকে। এদের খাদ্য মূলত পশুর লোম এবং ত্বকের মৃত কোষ। সুতরাং যেখানে মানুষের বাস, সেখানেই এদের বসবাস। এরা কামড়ায় না, অন্য কোনো রোগ ছড়ায় না এবং মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে না। এরা শুধু সেই মানুষগুলোর প্রতিই ক্ষতিকর যাদের এই জীবাণুদের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে। সাধারণত বাড়িতে যেসব জীবাণুরোধক ব্যবহার করা হয়, সেগুলো দিয়ে এদের অপসারণ করা যায় না।
ঘরের ধুলোতে ছত্রাক থাকে কেন : ছত্রাক থাকে সাধারণত বাইরের বাতাসে। যে কোনো বাড়িতেই ছত্রাকের কলোনি তৈরি হওয়া সম্ভব। বাড়ির বাসিন্দারা দেয়ালে ছত্রাকের কলোনি দেখতে পান না। ছত্রাকের কলোনি তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। ১. বেশি আর্দ্রতা শতকরা ৫০% এর বেশি। পানির পাইপে ক্ষুদ্র ফুটা বা যে কোনো পানির প্রবাহ এতে ভূমিকা রাখে। ২. দেয়ালে কোনো বোর্ড থাকলে বা স্যাঁতস্যাঁতে আসবাব থাকলে- সেখানে ছত্রাক জন্মায়। ছত্রাকের স্পোর কাপড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। ঘরের ধূলোতে তেলাপোকা থাকে কি? তেলাপোকার বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ ঘরের ধুলোতে মিশে থাকে। বিশেষ করে পুরনো বাড়ি ও ফ্ল্যাটবাড়ি সেখানে বিভিন্ন ফ্ল্যাটে বিভিন্ন পরিবার বাস করে, তাই এসব স্থানে তেলাপোকা নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব। অ্যাজমা রোগী এই ধরনের বাড়িতে গেলে উপসর্গ বেড়ে যায়। বেঁচে থাকা ও বংশবিস্তার করার জন্য তেলাপোকার দরকার খাদ্য ও আর্দ্রতা। এগুলো থেকে বঞ্চিত করতে পারলে তেলাপোকার হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়।
অ্যালার্জির উপসর্গ কমাতে কী করবেন
ধুলোর জীবাণু থেকে দূরে থাকা। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ। ইমিউনোথেরাপি। বালিশে ফোম বা তুলো ব্যবহার না করে সিনথেটিক জিনিস ব্যবহার করুন। সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানাপত্র ধুয়ে শুকিয়ে নিন। সম্ভব হলে বেডরুমে এয়ারকন্ডিশনার ও আর্দ্রতারোধক যন্ত্র ব্যবহার করুন। আর্র্দ্রতা কম থাকলে জীবাণু ও তেলাপোকার বংশবিস্তার রোধ হবে। জানালায় সূক্ষ্ম কাপড়ের ফিল্টার ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো ঘন ঘন বদলাতে হবে। কাপড়-চোপড় ক্লোজেটে রাখুন। ক্লোজেটের ঢাকনা বন্ধ রাখবেন। ঘরে কোনো মূল প্রাণী বা প্রাণীর অংশ থাকলে অতি শিগগির বাইরে ফেলে দিন। শোবার ঘরে কখনও পোষা প্রাণীকে ঢুকতে দেবেন না।
মেঝের ধুলো কমানো : নিয়মিত বিরতিতে ঘর পরিষ্কার করুন। মেঝে মোছার সময় স্যাঁতস্যাঁতে ও তৈলাক্ত কাপড় ব্যবহার করবেন না। ঘর পরিষ্কারের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার করুন। শোবার ঘরে কার্পেট ব্যবহার না করাই উত্তম। ব্যবহার করলেও এমন ধরনের কার্পেট নেবেন যেগুলো আঁশ সুবিন্যস্ত।
ঘরের বাতাসের ধুলো কমানো : এমন ধরনের এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন যার দ্বারা ঘরের আর্দ্রতা শতকরা ৫০ ভাগের নিচে রাখা সম্ভব। এসি-র ফিল্টার নিয়মিত পরিষ্কার করুন। প্রয়োজনে ফিল্টার পরিবর্তন করতে হবে। ধুলোর জীবাণু বেশিক্ষণ বাতাসে থাকতে পারে না। তাই মেঝে ও দেয়াল পরিষ্কারের দিকেই বেশি নজর দিতে হবে।
০ Likes ১ Comments ০ Share ৩৯৪ Views

Comments (1)

  • - মাইদুল আলম সিদ্দিকী

    চমৎকার! শুভকামনা রইল ভ্রাতা।