ঈদেরকেনেকাটা শেষ ,বাড়ি পথটাও ছুঁই ছুঁই করছে । এতো আয়োজন করে ঈদের কেনাকাটা করেছেন, নিজেকে সবার থেকে আলাদা লাগবে ভেবেই যে পোশাক গুলো কিনেছেন সেটা আপনাকে কতোটা ফুটিয়ে তুলবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করে পোশাকের সাথে সেই সময়ে মানানসই গয়না আর মেকআপের উপর। কিন্তু মাত্রই আগের দিন বাড়ি এলেন ; দীর্ঘ পথের ক্লান্তি মুহূর্তেই প্রিয়মুখের হাসিতে ধুয়ে যাবে জানি ।তবু মুখে তখনও সারা পথের ক্লান্তির ছাপ না চাইতেও লেগে আছে ।ঈদের সকালে নিজেকে স্নিগ্ধ একটা সাজে দেখতে হলে প্রথমেই মুখের ক্লান্ত ভাবটার বদলে সতেজতা ফিরিয়ে আনতে হবে।
শরীরের ক্লান্তি দূর করতে ঠাণ্ডা এবং গরম জল দিয়ে গোসল করুন ।সম্ভব হলে রাতেই করুন। চুলে শ্যাম্পুটাও করে রাখুন। সকালে ক্লান্তিভাবটা আর থাকবে না। ঘুম থেকে উঠে ফেইস ওয়াস দিয়ে মুখ ঘাড় ও গলা পরিষ্কার করার পর গোলাপ জল আর দুধের মিশ্রণ দিয়ে ওইসব জায়গায় হালকা ভাবে ম্যাসেজ করুন। সকালের সাজে একটা স্নিগ্ধ ভাব আনতে হালকা রংয়ের পোশাকটি পড়ুন। বাসায় থাকলে শাড়ির সাথে মালা আর টিপ পড়ুন । কাজল দিতে পারেন আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক ছোঁয়ান ।যদি বাইরে বেড়াতে যান তাহলে মেকআপ নিয়ে নিন ।বেইস মেকআপে আগে বরফ দিয়ে মুখ ও ঘাড় ঘষে নিন ।প্রথমে ফাউন্ডেশন দিন ,তারপর প্যানকেক লাগাল ।সবশেষে ফেইস পাউডার মাখবেন ।বেইস মেকআপ শেষ হলে চোখের মেকআপ শুরু করুন । চোখের পাতার মাঝখানে গোল্ডেন আইশ্যাডো অথবা পোশাকের রঙয়ের সাথে কন্ট্রাস্ট করে আইশ্যাডো দিন। চোখের পাতার উপরের দিকে আর ভিতরে ব্রাউন কালার দিয়ে মিক্সড করে নিন । এরপর আইলাইনার দিন । আইলাইনারের নিচে কাজল দিলে চোখের পাতা ঘন দেখাবে । দিনের অনুষ্ঠানে মাশকারা না দিলেও হবে। তবে রাতের অনুষ্ঠানে কাজল মাশকারা সবই ব্যবহার করতে পারেন ।তখন চোখে কালো আইশ্যাডো দিলে মেকাআপে স্মোকি ভাবটা আসবে। শাড়ী বা সালোয়ার কামিজ যেকোনো কিছুর সাথেই চোখের এই সাজ মানিয়ে যাবে ।কালো আইলাইনারের উপরে রঙিন আইপেন্সিন টেনে দিলে চোখের সাজটা বেশি গর্জিয়াস লাগবে ।
দিনের সাজে হালকা লিপিস্টিক দিলে খারাপ লাগবে না । কিন্তু রাতের পার্টিতে ডার্ক কালার যেমন ব্রোঞ্জ ,কপার, কোরাল , রেড অথবা অরেঞ্জটা বেছে নিলে সাজটা আরও বেশি ফুটে উঠবে । যাদের ঠোঁট একটু মোটা তারা লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট আকার সময় একটু ভিতরের দিকে আঁকেন ।যাদের পাতলা ঠোঁট তারা আঁকার সময় একটু বাড়িয়ে নিন ।
সাজের একটা বিরাট অংশ জুড়ে থাকে গয়না । সকালর সাজে ভারী গয়না ভালো লাগবে না। পুতির অথবা মাটির গয়নাই সুন্দর লাগবে। যারা শাড়ি পরবেন তারা হাতে চুড়ি না পরলে সাজটা অপূর্ণ রয়ে যাবে । তাঁতের বা ফ্লোরাল কটন শাড়ির সাথে লম্বা পুঁতির মালা হাতে মাটির বড় বালা আর চোখে কাজল দিন ।লম্বা কানের দোল যদি পড়েন তাহলে মেটালের কানের দোল পড়তে পারেন । ফতুয়ার সাথে মাটির কানের দোল ভাল লাগবে ।এক হাতে একটা ব্রেসলেট থাকুক ,অন্য হাতে কাপড়ের বা কাঠের এক সেট চুড়ি। রাতের অনুষ্ঠানে তামা বা পিতলের গয়না ভাল মানাবে ।শাড়ির সাথে জয়পুরি ঝুমকা সুন্দর লাগে। আর সোনা – রুপার গয়নার অপশন তো থাকলোই । অথবা গোল্ড প্লেটেট গয়নাও স্বচ্ছন্দে বেছে নিতে পারেন ।সালোয়ার কামিজের সাথে চুড়ি বা ব্রেসলেট পড়বেন ,কিন্তু মালা পড়তে চাইলে কামিজের গলার ডিজাইন এর দিকে খেয়াল করুন ।হাউনেক হলে মালা ভাল নাও লাগতে পারে।
শাড়ির সাথে বেণি বা কার্ল খোঁপা করুন । সালোয়ার কামিজ যারা পড়বেন তারা সামনের চুলগুলো ফুলিয়ে পাশ করে নিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে দিন। ছোট চুল ছেড়ে রাখতে পারেন । লম্বা হলে খেজুর বেণি করে নিন । সামনে থেকে একপাশে কিছু চুল নিয়ে বেণি করে পিছনে ক্লিপ দিয়ে আটকে দিন ,বাকি চুলগুলো ছাড়া থাকুক । এটা শাড়ি সালোয়ার কামিজ বা জিন্স ফতোয়া সবকিছুর সাথেই মানাবে।
খেয়াল রাখবেন
- যাদের মুখ গোল তারা গালের দুপাশে লম্বা করে ব্লাশন টেনে নিন ।
- গায়ের রঙ শ্যামলা হলে প্যানকেক ২৭ এর সাথে হলুদ প্যানকেক মিশিয়ে লাগাবেন। আর যাদের উজ্জ্বল গায়ের রঙ তারা ২৭ এর বদলে ২২ নম্বরটা নিবেন।
- পেন্সিল লাইনার দিয়ে আইল্যাশের ঠিক উপরে রেখা টানলে চোখ আরও উজ্জ্বল দেখাবে।
- নাক খাড়া দেখাতে চাইলে নাকের দুপাশে কফি কালারটা লাগান।
- রাতে ঘুমানোর আগে আন্ডার আই ক্রিম ব্যবহার করলে সকালে চোখের নিচে কালি পড়বে না ।
- ষে কালারের লিপস্টিক তার থেকে এক শেড গাঢ় রঙয়ের লিপলাইনার দিন।
- কসমেটিকের ক্ষেত্রে সবসময় ভালো মানের কসমেটিক ব্যবহার করবেন ,তা নাহলে আপনার চামড়ার যে ক্ষতি হবে সেটা হয়তো আর পূরণ হবে না।
- চোখে কন্টাক্ট লেন্স পড়লে সানগ্লাস সাথে রাখুন। বাসায় এসে প্রথমেই কন্টাক্ট লেন্সটি খুলে ফেলুন ।
- মেক আপ শেষে বাড়িতে ফিরে অবশ্যই ভাল ভাবে মেকআপ তুলতে হবে ।
লেখা ও ছবিঃ নমিতা দাশ
Comments (1)
লেখা সেটিং এ সমস্যা আছে, ছবিটি চমৎকার, ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ । সংশোধন করেছি ।
অনিকেত প্রান্তর ।। :)
ভালো মন্দ মিলিয়ে ফেলে আশা দিন গুলোর জন্য সত্যিই মনটা পোড়ে