Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

রাজীব নূর খান

৭ বছর আগে

কয়েকটি টুকরো টুকরো গল্প




১। আমার ছেলে-মেয়ে ডাক্তার হবে। আরেকজন বলে আমার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে। এই কথা শুনে আরেকজন বলে- আমার মেয়ে বিজ্ঞানী হবে। আর রফিক সাহেব রেগে-মেগে বললেন আমার ছেলে বড় ব্যবসায়ী হবে। ঠিক আছে, আচ্ছা ভালো কথা আপনাদের ছেলে মেয়ে বড় হয়ে ডাক্তার হবে, ইঞ্জিয়ার হবে, বিজ্ঞানী হবে, ব্যবসায়ী হবে। কিন্তু কথা হলো, তাহলে এই সমাজে কাদের ছেলে মেয়ে জঙ্গি হয়, সন্ত্রাস হয়, দুর্নীতিবাজ হয়? এই সমাজে কি খারাপ লোকজন নেই? অবশ্যই আছে। অনেক আছে। তাদের বাবা-মাও এক সময় আপনাদের মতো বলেছে- আমার ছেলে হেন হবে, তেন হবে। কিন্তু শেষ মেষ জঙ্গি হয়, সন্ত্রাস হয়, চোর হয় নেশা গ্রস্ত হয়। সব বাবা-মা'ই তো ছেলে মেয়ে সম্পর্কে ভালো-ভালো সব কিছু ভেবে রাখেন। কিন্তু তা তো হয় না। সবচেয়ে বড় কথা কোনো বাবা মা'ই কখনও বলেন না- আমার সন্তান একজন ভালো মানুষ হবে। তার মানে একজন ডাক্তারের দাম আছে, ইঞ্জিয়ারের দাম আছে ব্যবসায়ীর দাম আছে- ভালো মানুষের দাম নেই। কাজেই বাবা-মা'রা তাদের সন্তানদের ভালো মানুষ বানাতে চান না।
২। সন্তান হয়ে যাওয়ার পর মায়েদের আর চাকরি করা ঠিক না। বাবা তো চাকরি করছেন'ই। বাসায় যতই দাদী, চাচী, নানী অথবা কাজের লোক থাকুক। মায়ের আদর-ভালোবাসা অন্য কেউ দিতে পারে না। হুম, সন্তান হওয়ার আগ পর্যন্ত চাকরি করা যেতে পারে। যে মা সারা দিন চাকরি করে বেড়ায়, সেই সন্তানের কষ্টের শেষ নেই। সেই সন্তানের খাওয়া-দাওয়া, গোছল, ঘুম এবং লেখা-পড়া কিছুই ঠিক ভাবে হয় না। মানসিক বিকাশ সুন্দরভাবে হয় না। চাকরিজীবি মায়ের সন্তানদের কষ্ট দেখে- আমার খুব কষ্ট হয়। আবার অনেক মা আছেন, সন্তান হওয়ার পর যত ভালোই চাকরি হোক না কেন, সন্তাননের মুখের দিকে তাকিয়ে চাকরি ছেড়ে দেন। তার কাছে সন্তান আগে। আমি মনে করি, যে সমস্ত মেয়েরা মনে করে- চাকরিটাই সব তাদের বিয়ে করার দরকার নেই। সন্তান দরকার নেই- তারা চাকরি করে বেরাক।
৩। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর, সবার সাথে ধাক্কাধাক্কি করে যখন বাসে উঠতে পারি না- তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। একেবারে চোখে পানি এসে পড়ে। তখন মনে মনে বলি- যাহ্‌ রোদের মধ্যে হেঁটেই যাবো।
৪। অনেক বছর আগে একবার, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা গ্রামের এক পুকুরে গোসল করতে নামি। টলটলা আর কি ঠান্ডা পানি। গায়ে সাবান মাখতেই হঠাৎ সাবানটি পানিতে পড়ে যায়। আমি ডুব দিয়ে সাবানটি খুঁজতে থাকি। কিছুতেই সাবানটি খুঁজে পাচ্ছি না। এমন সময় আমি পা পিছলে পুকুরে ডুবে যাই। জানি না সাঁতার। পুকুরের পানি খেয়ে পেট গেল ফুলে, চোখে অন্ধকার দেখছি- তখন আমি নিজেকে আবিস্কার করলাম পুকুরের মাঝখানে এসে পড়েছি। তারপর একেবারে পানিতে ডুবে গেলাম। একজন খুব রুপসী নারী সেদিন আমাকে বাঁচিয়ে ছিলেন। কি সুন্দর মায়া ভরা মুখ তার। মাথা ভরতি চুল। বড় বড় চোখ। চোখে মোটা করে কাজল দেয়া। তার নাম আজ আর আমার মনে নেই। কিন্তু গতকাল রাতে তাকে স্বপ্নে দেখি। ...
৫। 'আয়নাবাজি' মুভি টা আধা ঘন্টা দেখার পর আর দেখতে ইচ্ছে হয়নি। আহামরি কিছু না... শুধু শুধু মানুষ আজাইরা এত প্যাচাল পাড়ল !!! একটা এভারেজ সিনেমা'র এত ঢাক-ঢোল পিটানোর কিছু নেই।
৬। ইদানিং আমার খুব ইচ্ছা করে বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে বড় কোনো পদে চাকরি করি। আমি মনে করি, আমার যোগ্যতা আছে। হাজার হাজার প্রতিষ্ঠানে আমি দেখেছি- অযোগ্য সব লোক বড় বড় পদে বসে আছে। তারা জানে না কোনো কাজ। কিন্তু মামা চাচার জোড়ে বড় পদে বসে আছে, অনেক টাকা বেতন নিচ্ছে। খুব দুঃখ হয় যোগ্য লোকেরা চাকরি পাচ্ছে না, মামা চাচা না থাকায়। ব্র্যান্ডিং আমি খুব ভালো পারি। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করে সেই প্রতিষ্ঠান আমি খুব উঁচু তে নিয়ে যেতে পারি। নানান রকম আইডিয়া আছে আমার, বুদ্ধি আছে আমার। পত্রিকা অফিস হোক, ডিজিটাল মার্কেটিং হোক বা কোনো করপোরেট হোক। প্রতিভা থাকা স্বত্তেও হাত পা নিয়ে চুপ করে বসে আছি। আমার মা প্রায়ই বলেন, ঘাট হয় আঘাট, আর আঘাট হয় ঘাট। এই সমাজের নিয়ম এই রকমই হয়ে দাঁড়িয়েছে।
০ Likes ০ Comments ০ Share ৩৩৩ Views