ওরা মূর্তি ভাঙ্গে আর হিন্দুসম্প্রদায়ের উপর হামলা করে বেহেশতের আশায়
সাইয়িদ রফিকুল হক
এই দেশে হিন্দুসম্প্রদায়ের যেন কোনো মা-বাপ নাই! তারা শুধুই যেন সংখ্যালঘু। আর তাই, যেকোনো সময় মুসলমান-নামধারী একশ্রেণীর সাক্ষাৎ শয়তান তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। এ যেন তাদের জন্মগত-অধিকার। তাই, ওরা হিন্দুসম্প্রদায়ের উপর প্রতিনিয়ত হামলা করে নিজেদের শয়তানীচেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। গায়ের জোরে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা করে তাকে আবার ইসলামের নামে চালিয়ে দেয়! এদের ধৃষ্টতা ক্রমশঃ বাড়ছে। আর এদের হাবভাব দেখে মনে হয়: এরা যেন রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী!
বাংলাদেশে একশ্রেণীর সাক্ষাৎ শয়তান মুসলমান সেজেছে মানুষ আর মানবতার ক্ষতিসাধন করার জন্য। এরা বাংলাদেশ-রাষ্ট্রকে ভালোবাসে না। এরা মানুষকে ভালোবাসে না। এরা মুসলমানদেরও ভালোবাসে না—তাই, এরা জঙ্গি হয়েছে। আর ইসলামধর্মের দোহাই দিয়ে মুসলমানদেরই হত্যা করছে! আর হিন্দুধর্মাবলম্বীসহ যেকোনো সংখ্যালঘু-সম্প্রদায়ের উপরও হামলা করছে। তবুও এরা মুসলমান! আর এই জঙ্গি-শয়তানদেরই উত্তরসূরী একশ্রেণীর মূর্তিভাঙ্গা-শয়তান। এরা মানুষের ধর্মকে সম্মান করতে শেখেনি। এরা মানুষকে ভালোবাসতে শেখেনি। আর এরা নিজে শয়তান হয়েও সমাজে-রাষ্ট্রে একেকজন মুসলমান সেজছে! তবুও এরা মুসলমান?
আর এই মুসলমান-নামধারী-শয়তানদের কাজ কী? এদের একমাত্র অপকর্ম হলো: বাংলাদেশের হিন্দুসম্প্রদায়ের মূর্তি ভাঙ্গা, হিন্দুদের উপর হামলা করা, হিন্দুদের বাড়িঘর লুটপাট করা, হিন্দুনারীদের সম্ভ্রম-লুণ্ঠন করা ইত্যাদি। এছাড়া তাদের আর-কোনো কাজ নাই। একমাত্র যাবতীয় অপকর্ম ও শয়তানী করাই এদের জীবনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই শয়তানীর মূল লক্ষ্য হিসাবে এরা মাঝে-মাঝেই বাংলাদেশের হিন্দুসম্প্রদায়ের উপর নারকীয় হামলা চালায়। এদের মূর্তি ভাঙ্গে, বাড়িঘর লুটপাট করে আর নিজেদের লাম্পট্য প্রদর্শন করে থাকে।
অতিসম্প্রতি দেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আরও কয়েকটি স্থানে মুসলমান-নামধারী একশ্রেণীর শয়তান হিন্দুসম্প্রদায়ের উপর হামলা চালিয়েছে। আর তারা হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মূর্তি-ভাংচুর করেছে, মন্দির ভেঙ্গেছে, বাড়িঘর-ভাংচুর করেছে, আর বাড়িঘর লুটপাটও করেছে! এই হলো এদের ঈমান। অপর ধর্মাবলম্বীদের উপর হামলা চালানোর জন্য এরা মাঝে-মাঝে একেকটি ইস্যু তৈরি করে থাকে। এদের উদ্দেশ্য হামলা-মামলা চালিয়ে এদেশের সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগে বাধ্য করা। তারপর তাদের জয়াগাজমি, বসতবাটী, ভিটেমাটি, পুকুরসহ বাগানবাড়ি সবকিছু দিনদুপুরে লুটপাট করে তা ‘গনীমাতের মাল’ হিসাবে ভোগ করা। এভাবেই, তাদের পূর্বপুরুষগণ ১৯৪৭ সাল থেকে এদেশের হিন্দুদের তাড়িয়ে তাদের বাড়িঘরসহ বিষয়আশয় সবকিছু দখল করেছে, আর এখনও তা গায়ের জোরে ভোগ করছে। এইসব হামলাকারী-নামধারী জানোয়ারগুলোও সেইসব লুটেরার বংশধর। এরাও বর্তমানে গায়ের জোরে ধর্মঅবমাননার মিথ্যাঅভিযোগে হিন্দুসম্প্রদায়ের উপর একের-পর-এক হামলাপরিচালনা করছে। আর এব্যাপারে দেশে দেখার যেন কেউ নাই! তাই, হামলাকারীদের ধৃষ্টতা দিনের-পর-দিন আরও বেড়েই চলেছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে, এই হামলাকারীশয়তানদের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণকেই আবার জেগে উঠতে হবে—সেই একাত্তরের চেতনায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সদরে, সরাইল-নাসিরনগরে কয়েকটি মাদ্রাসা আছে। আর এগুলো পরিচালিত হয় পাকিস্তানপন্থী-ওহাবী-শয়তানদের দ্বারা। এদের কাজই হলো মাঝে-মাঝে ইসলামধর্মের নাম-ভাঙ্গিয়ে নিজেদের শয়তানী হাসিল করা। আর এই শয়তানীউদ্দেশ্যে তারা নিজেরাই একেকটি ইস্যু তৈরি করে তা ভিন্নধর্মের মানুষের উপর চাপিয়ে তাদের উপর নারকীয় হামলা করে থাকে। আর তাই, এই শয়তানরা মুসলমান হয় কীভাবে?
এই মুসলমান-নামধারী-শয়তানরা হিন্দুদের মূর্তি ভাঙ্গে, মন্দির ভাঙ্গে আর বাড়িঘর ভাংচুর করে তা লুটপাট করে বেহেশতের আশায়! আর সবসময় এদের হাবভাব দেখে মনে হয়: বেহেশতো যেন এদের বাপ-দাদার সম্পত্তি। তাই, এরা দুনিয়ার সমস্ত শয়তানী-বাঁদরামি করেও একলাফে বেহেশতে চলে যাবে! আর সেই আশাতেই তারা দেশের ভিতরে মাঝে-মাঝে নিজেরা একেকটি ইস্যু তৈরি করে—আর তা-ই নিয়ে শয়তানের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে হিন্দুসম্প্রদায়ের উপর হামলা চালায়। এই শয়তানদের কাছে প্রশ্ন: পবিত্র কুরআনের কোথায় লেখা আছে হিন্দুদের মূর্তি ভাঙ্গলে বেহেশতো পাওয়া যাবে? আর অন্য ধর্মের মূর্তি ভাঙ্গার কথা পবিত্র কুরআনের কোথায় লেখা আছে?
কোথাও এসব লেখা নাই। আর সবকিছু এই মুসলমান-নামধারী-শয়তানদের মনগড়া-তথ্য। এই শয়তানরাই বেহেশতের আশায় দেশের ভিতরে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের জন্ম দিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়। ধিক্ এই শয়তানদের ধিক্।
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
০৩/১১/২০১৬
Comments (0)
এটা কি অণুগল্পো?
ভালো লেগেছে।
besh legeche
//সুখ আঁধারের উষ্ণতায় তারা আজ ভালো নেই, অপ্রাপ্তি দীর্ঘশ্বাসে ভেসে যায় সব উচ্ছ্বাসী সুখ।//
সুন্দর অনুভূতির প্রকাশ । কথাগুলো বেশ গোছালো মনে হয়েছে । শুভকামনা ও ভোট রেখে গেলাম ।
ভালো লিখেছেন প্রিয়।
শুভেচ্ছা রলো