Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

এরই নাম বুঝি প্রেম





এরই নাম বুঝি প্রেম
সাইয়িদ রফিকুল হক

আশফাক ভাবছিলো: এবার ঈদের ছুটিতে সে গ্রামের বাড়িতে যাবে না। আর সে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে চুপচাপ বসে থাকেনি। তাই, ভার্সিটি বন্ধের কয়েকদিন আগেই সে ইশরাতকে তার মনের কথা সব জানিয়ে দিলো। আর ভাবলো: ইশরাত এতে খুব খুশি হবে।
আশফাক খুব হাসিখুশি-ভাব নিয়ে সেদিন বললো, “ভাবছি, এবার ঈদে আর গ্রামের বাড়িতে যাবো না। তোমার সঙ্গে ঢাকায় ঈদ করবো। জীবনে কখনও তো ঢাকায় ঈদ করিনি, তাই!”
কথাটা শুনে ইশরাত কেমন যেন চুপচাপ হয়ে গেল। আর সে ভীষণ মনমরা হয়ে বললো, “না-না, তা কেন করবে তুমি! এটা ঠিক নয়। তুমি গ্রামে যাও। সেখানে তোমার মা-বাবা আছে। তারা কী মনে করবে!”—এসব বলতে-বলতে ইশরাত হঠাৎ কেমন যেন হয়ে গেল।
সব শুনে আশফাক বললো, “আমি আরও ভাবছিলাম, আমার সিদ্ধান্তের কথা শুনে তুমি খুব খুশি হবে। এখন দেখছি একেবারে তার উল্টোটা!”
ইশরাত এবার সহজ হওয়ার ভান করে বললো, “তুমি থাকলে ভালোই হতো। কিন্তু আমি ভাবছি, তুমি গ্রামে না গেলে তোমার মা-বাবা কী মনে করবে! আর তারা হয়তো ভাববে—আমিই তোমাকে গ্রামে যেতে দেইনি। তারচে ভালো তুমি এবারও গ্রামেই যাও।”
এসব শুনে আশফাক কিছুটা মনমরা হয়ে গেল। তারপর একটু স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে বললো, “আচ্ছা, তুমি যখন বলছো, তখন তো আমাকে তা মানতেই হবে। কিন্তু আর নয়। এরপর থেকে কিন্তু আমি একটা ঈদ গ্রামে আর-একটা ঈদ শহরে করবো।”—কথাটা বলে সে ইশরাতের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো।

আশফাকের দ্রুত সিদ্ধান্ত-বদলের কথা শুনে ইশরাত এবার বেশ হাসিখুশি হয়ে উঠলো। আর সে আগের অবস্থা থেকে দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠতে লাগলো। ইশরাতের এমনটি করার কারণ কিছুই বুঝতে পারলো না সহজ-সরল আশফাক।

অনার্স-সেকেন্ড-ইয়ারে উঠার পর থেকে ইশরাতের সঙ্গে আশফাকের প্রেম। ইশরাতের প্রবল আগ্রহেই আশফাক এই পথে অগ্রসর হওয়ার সাহস পেয়েছিলো। নইলে, এমন সুন্দর একটা মেয়ে—তার উপরে এই শহরে তাদের একাধিক বাড়ি-গাড়ি আছে—এরকম একটা মেয়ের সঙ্গে আশফাক প্রেম করার সাহস পায়! ইশরাতের আগ্রহেই আশফাক এই প্রেমে ডুবে আছে।

তিন-বছর-যাবৎ তাদের প্রেম। সম্প্রতি তাদের অনার্স-ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ওরা দুজন একই প্রাইভেট-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তবে ওদের সাবজেক্ট ভিন্ন। আশফাক পড়ে ইংরেজি-সাহিত্যে, আর ইশরাত বিবিএ। অনার্স-ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পরও তারা একসঙ্গে নিয়মিত ক্যাম্পাসে যাতায়াত করছে।

তিনদিন পরে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আঠারোদিনের জন্য ওদের ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেল। বন্ধের আগের দিন ইশরাতের সঙ্গে সারাদিন ভার্সিটি-ক্যাম্পাসে ঘুরেফিরে কাটালো আশফাক। দিনটি আশফাকের জন্য সত্যি অনেক আনন্দের ছিল। সে ইশরাতের কাছে এইরকম আরও একটি দিন চেয়েছিলো, কিন্তু ইশরাত তাতে সায় দেয়নি। এতে মনখারাপ করে সেদিন নিজের মেসে ফিরে এসেছে আশফাক। তবে বন্ধের দিন ঘণ্টাখানেক সময় তাকে দিয়েছিলো ইশরাত। আর এতেই আশফাক ভীষণ খুশি। সে জীবনের সর্বক্ষেত্রে সবসময় অল্পে তুষ্টপ্রাণ একটি যুবক।

সন্ধ্যার পরে ওরা যার-যার বাসায় ফেরার আগে ভার্সিটির গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আশফাক খুব কাকুতিমিনতী করে ইশরাতের উদ্দেশ্যে বললো, “আমি কয়েকদিন পরে গ্রামের বাড়িতে যেতে চাচ্ছি। আর তোমার সঙ্গে আরও কয়েকটা দিন আমার থাকতে ইচ্ছে করছে।”
এতে ইশরাত এবার মনমরা হয়ে বললো, “সেটা করতে পারলে ভালোই হতো। কিন্তু আমি আগামীকালই মা-বাবার সঙ্গে চিটাগাং চলে যাচ্ছি। আমার এক মামা বিদেশ থেকে এসেছেন তো, তাই। তাছাড়া, ঈদের আগে সেখান থেকে আমার দাদাবাড়ি কুমিল্লায়ও যেতে হতে পারে। এমন একটা অবস্থায় তোমার এখনই গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়া ভালো। ঈদের পরে আবার আমাদের দেখা হবে।”
সব কথা শুনে আশফাক আর-কিছু বললো না। সে শুধু কষ্ট করে একটুখানি হেসে ইশরাতকে বিদায় জানালো। আর সে ভাবলো: ঈদের পরেই তো আবার তাদের দেখা হচ্ছে।

সন্ধ্যার অন্ধকারে ইশরাত মিলিয়ে যেতেই আশফাক তার মেসে ফেরার চিন্তাটা আপাততঃ বাদ দিয়ে এক বন্ধুর বাসায় গেল। ওর এই বন্ধুটি শ্যামলী থাকে। আর আশফাকের মেসটাও এরই ধারেকাছে।
অনেকদিন পরে বন্ধুকে পেয়ে আশফাক কিছু সময়ের জন্য ইশরাতের কথা ভুলে গেল। তবুও সে কথার ফাঁকে-ফাঁকে ইশরাতের কথা ভেবে-ভেবে একটু আনমনা হচ্ছিলো। ব্যাপারটা লক্ষ্য করে রেজওয়ান একসময় বললো, “কার কথা ভেবে এতো মনখারাপ?”
এতে আশফাক হেসে ফেললো। আর বললো, “তুইতো সব জানিস দোস্ত। আর এই শহরে তুইই-তো আমার সবচেয়ে আপনজন।”—তারপর সে একটু থেমে আজকের দিন-সহ ইশরাত ও তার জীবনের গত কয়েকদিনের ঘটনাটা ওর কাছে খুলে বললো।
রেজওয়ান সব শুনে কেমন যেন একটা ভাব করে নিজেই মনমরা হয়ে গেল। আর ওর ভাবটা দেখে আশফাক আরও ঘাবড়ে গেল। সে জানে, তার এই বন্ধুটি মেয়েদের সাইকোলজি বোঝে ভালো। তাই, সে কিছুক্ষণ বন্ধুর দিকে ফ্যাল-ফ্যাল করে চেয়ে থেকে বললো, “বন্ধু, কোনো সমস্যা?”
রেজওয়ান মিথ্যা বললো না। সে শুধু বন্ধুকে অভয় দিয়ে বললো, “সমস্যা একটা হয়েছে? ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। মেয়েটির মতিগতি এখন হয়তো অন্যদিকে প্রবাহিত হতে পারে। নইলে, তোদের এতো ঘনিষ্ঠ-সম্পর্কের মাঝে হঠাৎ সোজা-রাস্তা ছেড়ে দিয়ে তার এই ইউটার্ন কেন?”
এতে আশফাক আরও ঘাবড়ে গেল। আর রেজওয়ান তাকে অনেকখানি অভয় দিয়ে বললো, “যা সত্য, তা-ই আমাদের মানতে হবে, বন্ধু। আর মানবজীবনে সত্যকে আড়াল করা মানে চরম-বোকামি।”
রেজওয়ান আর-কিছু না বলে বন্ধুকে একটু শক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে লাগলো।
সে আর-কিছুই বলছে না দেখে একটা সময় কিছুটা অধৈর্য হয়ে আশফাক হঠাৎ বলে বসলো, “তোমার কী মনে হয়, তা আমাকে সাফ-সাফ বলো বন্ধু। আমি শুনতে চাই। আমাকে সবকিছু খুলে বলো।”

রেজওয়ান এবার একটুখানি গম্ভীর হয়ে বলতে লাগলো, “মেয়েটি অন্য-কারও প্রেমে পড়েছে কিনা আমি পুরাপুরি নিশ্চিত নই। তবে সে তোমাকে না জানিয়ে একটাকিছু করতে চাচ্ছে। তাই, তোমাকে জোর করে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে ভুল করেনি। আর আমার মনে হয়: এই ঈদের আগে-পরে সে বা তার পরিবার একটাকিছু করতে চাচ্ছে। আর এই একটাকিছু হলো বিয়ে। তুমি ওদের বাড়িতে গিয়েছো কয়েকবার। ওদের বাড়িটা তোমার একেবারে চেনা। তুমি এখানে থাকলে ওদের বিরাট ক্ষতি। তাই, সে জোর করে ঈদের অজুহাতে তোমাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত হতে চাইছে। যাতে, সে নিরাপদে বিয়েশাদী করে মহাসুখে তার সংসারধর্মপালন করতে পারে। আর এটাই হচ্ছে এখনকার ওভার-স্মার্ট-মেয়েদের স্টাইল।”

বন্ধুর কথা শুনে আশফাকের ভিতরে হঠাৎ একটা আলোড়নসৃষ্টি হলো। সে এখন সব বুঝতে পারছে। আজ কয়েকদিন যাবৎ ইশরাত তার সঙ্গে ভয়ানক একটা লুকোচুরি খেলছে। আজ সে এখানে না এলে এই ব্যাপারটা কিছুতেই বুঝতে পারতো না। সে ইশরাতের প্রেমে অন্ধ বলে তার সব কথা বিশ্বাস করে। কিন্তু এই পৃথিবীতে আর এই জীবনে এখন এই বিশ্বাসের কোনো মূল্য নেই। এখানে, সবকিছুতে চরম-অবিশ্বাসী-মানুষগুলোই খুব ভালো থাকে।

আরও কিছুটা সময় পার করে এবার আশফাক বলতে লাগলো, “এখন আমার কাছে সবকিছু পরিষ্কার হচ্ছে, বন্ধু। আমি ও-কে নিয়ে অবিশ্বাসের সঙ্গে কখনও এতোটা ভাবিনি। কিংবা কখনও ও-কে অবিশ্বাস করিনি। আর তাকে আমি ষোলোআনাই বিশ্বাস করেছি। কিন্তু সে যে...।”
রেজওয়ান বন্ধুকে বাধা দিয়ে বললো, “তুমি ভালোমানুষ। তাই, একজনকে ষোলোআনা-বিশ্বাস করেছো। কিন্তু তোমার এই ষোলোআনা-বিশ্বাসের মূল্য দেওয়ার মতো ষোলোআনা-যোগ্যতাসম্পন্ন-মানুষ কোথায়? তোমাকে আমি ভালো জানি। তোমাকে আমি কয়েক বছর ধরে চিনেছি। একই ভার্সিটিতে পড়ার সুবাদে আমাদের পরিচয়। বিশাল পৃথিবীতে এটি ক্ষণিকের পরিচয় ব্যতীত আর-কিছু নয়। তবুও একজন মানুষকে চিনতে এটিই যথেষ্ট সময়। তবে তুমি মনখারাপ করবে না। জীবনটা শুধু একজন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার জন্য নয়। জীবন এরচেয়ে অনেক বড়। আর তার জন্য আমাদের ভাবতে হবে। তুমি বাসায় গিয়ে আরও ভাববে। আর বই পড়বে। একটুও মনখারাপ করবে না। তুমি নিজেকে সুদৃঢ়ভাবে দণ্ডায়মান-অবস্থায় রাখবে। একটা জীবন অনেক কষ্টের—আবার অনেক আনন্দেরও। তাই বলে এ-কে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। তুমি আজ থেকে নিজেকে ভালোবাসবে সবচেয়ে বেশি। আমি জানি, তোমার মতো ভালোছেলে আর-কয়টা আছে এই শহরে?”

বন্ধুর অনেক পীড়াপীড়ি সত্ত্বেও রাতে না খেয়েই উঠে পড়লো আশফাক। একসময় সে হাঁটতে-হাঁটতে আর খুব মনখারাপ করে নিজের মেসে ফিরে এলো। একটা আচমকা ঝড়ে যেন তার সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। আর সে নিজেকে এখন এই পৃথিবীর সবচেয়ে সর্বস্বান্ত মনে করছে।

আশফাক পরদিনই গ্রামের বাড়িতে গেল না। ঈদের বাকী এখনও আটদিন। তাই, সে ভাবলো, ইশরাতের সঙ্গে দেখা না হলেও তার নিজের বন্ধুদের সঙ্গে তো দেখা হবে। এই আশাতেই সে ঢাকায় রয়ে গেল। আর সে ভাবলো: প্রয়োজনে সে ঈদের আগের দিন গ্রামে যাবে।

আরও তিনদিন পরে আশফাক গাবতলী যাচ্ছিলো পাবনাগামী একটি বাসের টিকিট কাটতে—এমন সময় রেজওয়ানের ফোন পেয়ে মাঝপথে বাস থেকে নেমে শ্যামলী ফিরে এলো সে। আর সে ফিরে এসে রেজওয়ানের মুখে যা শুনলো তাতে তার হার্ট-অ্যাটাক হওয়ার জোগাড় হলো।

রেজওয়ান বলতে লাগলো, “আমি আজ ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম একটা কাজে। সেখানে আমাদের একটা গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে আলাপ হলো। ওর মুখেই শুনলাম ঈদের পরদিন নাকি ইশরাতের বিয়ে। আর ওর এক মামাতো ভাই নাকি আমেরিকা থেকে এসেছে। তার সঙ্গেই নাকি পারিবারিকভাবে বিয়েটা হচ্ছে। মেয়েটি আমাকে বলেছে, ইশরাত নাকি তাকে নিজের মুখে দাওয়াত দিয়েছে। একটা অসুবিধার কথা বলে সেদিন সে বিয়ের কার্ডটা শুধু তাকে দেয়নি। আসলে, এটি কোনো কারণ নয়। তখন আমাদের ভার্সিটি খোলা ছিল—তাই, সে আমাদের ভার্সিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে বিয়ের কার্ড দিতে চায়নি। এখন ভার্সিটি বন্ধ হয়ে গেছে। আর চিন্তা কী?”

আশফাকের মাথাটা ঘুরছিলো। তিন-বছরের বেশি সময় ধরে তাদের প্রেম। সে কত ভালোবেসেছে ইশরাতকে। আর ভালোবাসার শেষপরিণতি তো বিয়ে! কিন্তু ইশরাত এ-কী করছে! আশফাকের চোখে প্রায় জল চলে এলো। সে এই কয়-বছরে আর-কোনো মেয়ের প্রতি সামান্যতম দুর্বল হয়নি। সে শুধু ইশরাতকে ভালোবাসে। আর তার স্বপ্ন শুধু ইশরাত। আর সেই কিনা তাকে এরকমভাবে ভুলে সামান্য একটা আমেরিকাফেরত ছোকরার জন্য এতোবড় প্রতারণা করতে পারলো!
এবার আশফাকের চোখে জল এসে গেল। সে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। তার মনের বাঁধ ভেঙ্গে ভিতরে-ভিতরে একটা কান্নার জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
সে অনেকক্ষণ কোনো কথা বলতে পারলো না। রেজওয়ান তার হাত ধরে ওদের বাসায় নিয়ে গেল। তখন দুপুর হতে কিছুটা বাকী। তবুও রেজওয়ান আগেভাগে খাবারের ব্যবস্থা করে ফাঁকে-ফাঁকে কথা চালিয়ে যেতে লাগলো।
রেজওয়ান অনেক বুঝিয়েশুনিয়ে আশফাককে ভাত খাওয়াচ্ছে। আর জোর করে আটকিয়ে রেখেছে তাকে খাবার-টেবিলে। ঘনিষ্ঠ-বন্ধুর এমন দরদমাখা আদরে-ব্যবহারে আশফাক মনের দুঃখ-কষ্ট বুকেচেপে কোনোরকমে চারটে ভাত মুখে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার শুধু বারেবারে গত তিন-বছরের কত ঘটনাবলী মনে পড়ছে। একজন হয়তো ভুলে গেছে! কিন্তু সে তো ভুলতে পারছে না।

দুপুরের অনেক পরে আশফাককে তার মেসে পৌঁছে দিলো রেজওয়ান। এর তিনদিন পরে ঈদ এলো। কিন্তু আশফাক গ্রামের বাড়িতে যেতে পারলো না। ঈদের দিনটা শুধু ঘুমিয়ে কাটালো আশফাক। পরদিন রেজওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে সে মেহেদি কমিউনিটি সেন্টারে গেল ইশরাতের বিয়ের নাটক দেখতে। তার যেন কিছুতেই এমন একটা অপকাণ্ড বিশ্বাস হচ্ছিলো না। তাই, সে একটিবারের জন্য সবকিছু নিজের চোখে দেখতে চাইছিলো। রেজওয়ান তাতে আর অমত করেনি।

ওরা যেন লোকের ভিড়ে আর কিছুটা ছদ্মবেশে মিলেমিশে একাকার হয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো। বর-কনের মঞ্চে ইশরাত কী হাসিখুশি! বান্ধবীদের সঙ্গে সে খুব স্বাভাবিক। আর খুব খুশি।
আর ওরা দুই-বন্ধু একটু পরে নেমে এলো রাস্তায়।
আশফাক কোনো কথা বলছিলো না। তার দু’চোখে জল। কে বলে পুরুষমানুষ কাঁদে না? তারা ভুল বলে। আর তাদের পুরুষ-সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। এই তো আমাদের আশফাক কাঁদছে। না, সে প্রেমে ব্যর্থ হয়ে কাঁদছে না। সে কাঁদছে এই ভেবে যে, মানুষ কী করে এমন নিষ্ঠুর হয়?
একটা সময় চোখের জলে ডুবে আশফাকের কেবলই মনে হতে লাগলো: এ কেমন প্রেম? এরই নাম বুঝি প্রেম? আর এই কি প্রেম?

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
৩০/০৭/২০১৬

০ Likes ০ Comments ০ Share ৪২২ Views

Comments (0)

  • - রুদ্র আমিন

    ভালো লিখেছেন ভাইজান, তবে শেষের দিকে একটু এলোমেলো হয়ে গেছে আমার মনে হলো। এটা একান্তই আমার অভিব্যক্ত কিছু মনে করবেন না। ভালোবাসা চাই।

    - এই মেঘ এই রোদ্দুর

    সুন্দর লাগল

    - জামান একুশে

    ভালো লাগলো মান্নান ভাই। 

    Load more comments...