Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

একটি বাড়ির গল্প






একটি বাড়ির গল্প

সাইয়িদ রফিকুল হক

 

একটি বাড়ি যেন বদ্বীপভূমি

কতোকাল ছিল শত্রুবেষ্টিত!

হায়েনাশত্রু, হানাদারশত্রু,

মুখচেনা সব নফরশত্রু।

 

বাড়িটা দখল নিতে চায়

ওইসব পাপী-পামরের দল,

জোঁকের মতো এতোকাল

চুষে-চুষে খেয়েছে বাড়ির

অধিবাসীদের তাজা লালরক্ত!

তবু মেটেনি ওদের রক্তক্ষুধা,

ওরা বুঝি আজন্ম ভয়াবহ পশু,

শুধু চায় মানুষের রক্ত আর রক্ত!

আরও চায় খেতে সকল ফসল,

নিরীহ-মানুষজনের সকল ভূসম্পত্তি!

তবু মেটে না ওদের ক্ষুধা।

একদিন গভীর রাতে

সবাই ছিল গভীর ঘুমে মগ্ন,

দস্যু-ডাকাতের দল

হানা দিলো সেই বাড়িতে,

একমুহূর্তে নেমে এলো

সেই বাড়িতে কালরাত্রি!

 

আধুনিক অস্ত্রেশস্ত্রে

আরও কতো মারণাস্ত্রে

ওরা ঝাঁপিয়ে পড়ে মরণনেশায়

ছোট্ট একটা বাড়িতে!

পশুদের তাণ্ডবে জেগে ওঠে:

বাড়ির ছেলে-বুড়ো মানুষ সকল,

আর গোয়ালের বোবা-জন্তু।

চিরচেনা-পশুরা অন্ধপাগল হয়ে

মারতে থাকে বাড়ির মানুষকে,

তারপর ওরা ধরে নিয়ে যায়

বাড়ির মালিক গৃহপিতাক

আর ওরা নিজেদের নাম

একেবারে শয়তানের খাতায়

তুলে দিয়ে চালাতে থাকে:

খুন-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ

আর সীমাহীন লুটতরাজ!

গৃহবাসী নিজেদের লাঠি-সোঁটা

আর-কিছু অস্ত্র নিয়ে

রুখে দাঁড়ায় পশুদের বিরুদ্ধে।

ভয়পায়নাকেউ,

ভয়নাইকারওচোখে-মুখে,

স্বপ্নদেখেমানুষশুধু

কাফের-মারার!

পালাতে থাকে কাফেরের দল

পালাতে থাকে এজিদের বংশ

আর পালাতে থাকে পশুর দল।

 

মাসের-পর-মাস যায় পেরিয়ে,

পশুরা মারতে থাকে উন্মত্ত হয়ে

বাড়ির নিরীহ-মানুষকে!

মানুষের মৃত্যুতে ভয় পায় না

বদ্বীপভূমির বাসিন্দারা,

তারা আরও শক্তিতে রুখে দাঁড়ায়

নরপশু-হায়েনাদের বিরুদ্ধে।

আর মানুষেরবিপদদেখে

ছুটেআসেমানবতাবাদী-প্রতিবেশী,

শুরুহয়কাঁধেকাঁধমিলিয়ে

কাফের-মারারসশস্ত্র-সংগ্রাম।

 

এবার লেজগুটিয়ে পালাতে থাকে

চিরচেনা পশুর দল,

মাফ চেয়ে পালিয়ে যায়

সেইসব নাপাকভূমির নাপাক-দস্যু।

বাড়িটি হয় পুরাপুরি শত্রুমুক্ত।

তবু যেন আনন্দ নেই

বিজয়ীমানুষের মনে,

হাসি নেই মানুষের মুখে,

পাখিরা গায় না গান,

থেমে আছে শিশুদের কোলাহল!

পিতা নেই গৃহে—

পিতা কখন ফিরবেন

তাঁর আপনগৃহে!

পিতা ছাড়া ভরে না গৃহখানি,

পুত্র-কন্যারা তাই বসে থাকে

পিতার অপেক্ষায়।

সবশেষে সেই পরাজিত-দস্যুদল

ছেড়ে দেয় ওদের পিতাকে,

আর ওদের পিতা ফিরে এলেন

ইতিহাসের সেই দশই জানুআরি,

এই বদ্বীপভূমির পিতা যিনি।

এবার গৃহে ফিরে এলো সুখশান্তি

মানুষের মুখে ফুটলো হাসি,

গাছে-গাছে ফুটলো ফুল!

পাখিদের কণ্ঠে ধ্বনিত হলো গান।

ধন্য হলো পিতার শত্রুমুক্ত-স্বদেশভূমি।

ধন্যপিতাজন্মেছিলেতুমি,

ধন্যপিতাজন্মেছিলেতুমি,

ধন্যপিতাজন্মেছিলেতুমি।

 

 

 

 

সাইয়িদরফিকুলহক

মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

 

১ Likes ০ Comments ০ Share ২২৫ Views