Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ঘাস ফুল

১০ বছর আগে

আয়নায় নিজের লেখার প্রতিবিম্ব

কতগুলো প্রাসঙ্গিক গঠনমূলক এবং বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য নিয়ে আমার পোষ্ট "পাঠকের মন্তব্য, লেখকের টনিক" এ ব্লগার/লেখক ভাই বোনদের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে আমি যারপরনাই খুশি। সেখানে মন্তব্য নিয়ে অনেকেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, যা থেকে আমরা যারা মন্তব্য নিয়ে বিচ্ছিন্ন চিন্তাভাবনা করি, তারা নিজেদের একটা নির্দিষ্ট প্লাটফর্মে এনে দাড়া করাতেন পারবেন বলে মনে হয়। আমি মনে করি এই পোস্টের পরে মন্তব্য নিয়ে আর কোন পোষ্ট দিয়ে লাভ হবে না, কারণ জোড় করে কারো ওপর কিছু চাপিয়ে যায় না। বরং অনুধাবন করে নিজেই নিজেকে সংশোধন করে নিতে হয়। চলুন এবার দেখে নেই তাদের মন্তব্যগুলো।

মোঃ খালিদ উমর বলেছেনঃ

আপনি বলেছেন টনিক আর আমি বলি লেখার আয়না। মানে লেখক কি লিখেছে তা মন্তব্যের আয়নায় দেখতে পায়।

সুমন আহমেদ বলেছেনঃ

ব্লগকে ঘিরে এ ধরণের চিন্তা ভাবনা ব্লগের জন্য নিঃসন্দেহে মঙ্গলজনক। আপনি এ ব্লগকে ঘিরে বেশ আন্তরিক এবং চাচ্ছেন লেখক – পাঠক লেখালেখিকে গুরুত্বের সাথে নিক। লেখালেখির জন্য এটি একটি কল্যাণকর চিন্তা তবে এ ধরণের উদ্যোগ বেশি দিন এগুতে পারে না! কারণ কিছু সংখ্যক ব্লগার (তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি) মুখে সমালোচনা করুন, একদম গঠন মূলক সমালোচনা করুন – এমন বললে বাস্তবে তারা কখনোই নিজের লেখায় এমনটা সহ্য করতে পারেন না (অভিজ্ঞতা থেকে বলছি)! তাই আপনি হতাশ হোয়ে নিজেই একদিন থেকে যাবেন এটা মোটামুটি বলা চলে।

পোস্টের শিরোনামকে প্রাসঙ্গিক মনে করে নিজের কিছু বক্তব্য মন্তব্যে তুলে ধরছি-

কিছু পোস্টে দেখি পোস্ট প্রাসঙ্গিক আলোচনাকে বাদ দিয়ে ব্যক্তিগত আলাপ আলোচনা হচ্ছে কয়েক মিনিটেই দেখি মন্তব্যে সয়লাব! আড্ডা দেয়ার জন্য নিশ্চয়ই আড্ডা পোস্ট অথবা ব্যক্তিগত চ্যাটিং অপশনে গিয়ে আড্ডা হতে পারে। আমি যখন পোস্টটি পাঠ করি তখন দেখি ১৭টি মন্তব্য কিন্তু মন্তব্য কারীর সংখ্যা মাত্র ৩ জন! এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট এবং সে হিসেবে পোস্ট কেন্দ্রিক আলোচনার বাইরে ভিন্ন আলোচনা কতটুকু যুক্তিযুক্ত হতে পারে! আমি সাধারণত ব্লগিংকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে থাকি এবং ব্লগ কেন্দ্রিক লেখালেখি করি কারণ এতে পাঠকের অভিমত সাথে সাথেই পাওয়া যায় এবং যা থেকে নিজের লেখার মান বিচার এবং এর উন্নতি সাধন করা যায়।

সুখেন্দু বিশ্বাস বলেছেনঃ

টনিক (১) এবং টনিক (২) দুটোই পড়লাম ঘাস ফুল। আসলে প্রাসঙ্গিক ও গঠনমূলক মন্তব্য এবং সমালোচনাই কাম্য। এখন পাঠক কি ভাবে তা ব্যক্ত করছে সেটা একটা ব্যাপার। কেউ হয়তো দু’ কলম লিখে তার মন্তব্য প্রকাশ করে। কেউ বা দুটি শব্দে। কেউ কেউ আবার একটি ছবি দিয়ে তার মন্তব্য প্রকাশ করতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত মতামত হল - কেউ হয়তো একটা সিরিয়াস বিষয়ে পোষ্ট দিল, এখন আমি যদি ব্যাপারটি ফান হিসেবে নিয়ে মন্তব্য লিখি বা ছবি পোষ্ট করি তাহলে বোধ হয় শোভন বা প্রাসঙ্গিক হবেনা।   

জাকিয়া জেসমিন যূথী বলেছেনঃ

আমি সমালোচনা পছন্দ করি। তাই আমার ব্লগে দেয়া মন্তব্য আমি সাদরে গ্রহণ করতে পেরেছি কিনা তাও তুলে ধরা প্রয়োজন ছিলো। ' ব্লগার আনমোনা', 'ব্লগার ঘাসফুল' এদিক দিয়ে প্রশংসার দাবীদার, যাদের কাছে থেকে আমি বিশ্লেষনাত্মক মন্তব্য পেয়ে থাকি। পাঠকের আকাঙ্ক্ষা এবং লেখার মান কোন পর্যায়ের হলে ভালো হয় সেটা জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্যে আমি এই ধরনের মন্তব্যকারীকে আমার লেখাতে বেশি বেশি আশা করি। 

ছোট্ট একটু কথায় কেউ যখন বলে- 'ভালো লিখেছেন/ভালো লাগলো' তখন মনে হয়, পাঠক না পড়েই কমেন্ট করেছে। এরকম দায়সারা মন্তব্য করে লেখককে খুশী করার কোন মানেই হয় না। আমি পড়তে খুব পছন্দ করি। বলা যায় আমি ভীষণ বইয়ের পোকা।

প্রায় সারাদিন আমি অনলাইনে থাকি। এবং, লেখা মনযোগ দিয়ে পড়ি। মনযোগ দিয়ে পড়ার সময় না থাকলে আমি কারো লেখা পড়িনা। কাল রাতে একটা গল্প পড়বো বলে এক ব্লগারের লেখার পাতায় ঢুকলাম। লেখাটির শিরোনাম-'ভূতের আছড়', রাত তখন ২টা পেরিয়ে গেছে। আমি ঘুমে ঢুলছি। ধুকে দেখি, লেখাটা বিশাল। তখন ভাবলাম-দিনের বেলা পড়তে হবে। আমি এমনই। গল্পের ভেতরে ঢুকে একেবারে সেই কাহিনীর আত্মার ভেতরে না ঢুকে গেলে আমি শান্তি পাইনা। আর, আমি এতটাই আবেগ ঢেলে পড়ি যে গল্পের কাহিনীর সাথে আমার আবেগ একাত্ম হয়ে যায়-দুঃখ এর গল্প হলে কেঁদে কেটে নাকের জল চোখের জল মিশে যায়; আবার হাসির গল্প হলেও সেইরকম হো হো হাসি, পাড়া মাতিয়ে, দশজনকে মিলে হাসি। 

নীল সাধু বলেছেনঃ

আমি এখন তেমন বিশ্লেষনী বা খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ে মন্তব্য করার অবসর পাইনা, তারপরেও চেষ্টা থাকে যে লেখাটি মনে কিছুটা হলেও দোলা দিয়ে যায় তার সম্পর্কে কিছু কথা বলে যেতে। তবে নানা কারণে নেগেটিভ কিছু বলিনা। এতে হীতে বিপরীত হয়। আমার দীর্ঘদিনের ব্লগিং অভিজ্ঞতা তাই বলে। তাই নিরপরাধ সাধু হিসেবে যা ভালো লাগে না সেখানে কিছু না বলেই চলে আসি। 
বিস্তারিত প্রকাশ হয় শুধু ভালো লাগার পোষ্টেই। 
একেকজন মানুষের একেক চরিত্র। 

আনমনা বলেছেনঃ

একজন লেখকের মন্তব্য গ্রহনের মানসিকতার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। পাঠক যেকোনো শ্রেণীর হতে পারে, তার বোধশক্তির সীমানা কম-বেশী হতে পারে। তার জায়গায়, তার চিন্তা বা তার বোধ থেকে সে মন্তব্য করে। সুতরাং কোনন পাঠক কি ভেবে মন্তব্য করলো সেটা বুঝতে না পারাও যেতে পারে, সুতরাং সব ধরনের, সব শ্রেণীর মন্তব্য গ্রহনের মানসিকতা একজন লেখকের থাকা উচিত বলে অন্তত আমি মনে করি। সব বেলায় পাতে মাছের বড় টুকরা টাই পড়বে এটা ভাবা তো বোকামি, কখনো শুধু ঝোল আর কখনো কাটাকুটা কখনো আবার সাদা ভাত খেয়ে উঠে যাবার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকা ভালো না?

বিনয় এবং মানসিকতা এই জায়গা দুটোয় দৃঢ়তা থাকলেই সব কিছুই সহজ সুন্দর এবং সাবলীল হয়ে যায়। খুব সহজে সহমত বা দ্বিমত পোষণ করে সুন্দর আর বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে দেয়া যায় সবকিছু। তারপর যা থাকে তার পুরোটাই হয়ে উঠে ভালোলাগা আর শিক্ষণীয়। আমরা কেউই বোধের সীমাবদ্ধতার উধ্বে নই। সুতরাং দ্বিমত কে আমরা বিতর্কে নিয়ে বিনয়ের মাধ্যমেও বুঝিয়ে দিতে পারি।

তবে হ্যাঁ, এই কথাও সত্য সবাই সব কিছু নিতে পারেনা, এখানে তার দোষ দেওয়াও যায়না। কার প্রকৃতি যে কেমন সেইটা বোঝা মুশকিল। কেউ নিতে না পারলে তাকে জোর করে কিছু দেয়া যায়না, এবং উচিত ও না। সেক্ষেত্রে নিজের বুঝ নিজে বুঝে বিনয়ের সহিত শুভকামনা রেখে প্রস্থানই উত্তম।

আর ভুল ধরিয়ে দেয়ার ব্যাপারটাও অনেকে নিতে পারেনা (এইটা অনেকের মধ্যে স্বভাবজাত একটা ব্যাপার), এটা বোকামি। কারো ভুল ধরিয়ে দেয়ার মানে এই না যে তাকে ছোট করা অথবা নিজে অনেক পন্ডিত এইটা প্রমান করা। ব্যাপারটা মোটেও এমন না। আমার ধারনা যারা শুভচিন্তক তারা ভুল শুধরে দেবার চেষ্টা করে, এইটা প্রশংশনীয়। আমি খুব আশা করি এই জিনিস্টা। তবে ভুল শুদ্রাতে জেয়ে বিনয়ের কমতি থাকলে ব্যাপারটা ছোট করাও মনে হতে পারে কারন সবার বোধের সীমানা সমান হয়না। মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মন্তব্যকারীর এবং মন্তব্য গ্রহন এবং প্রতিউত্তরের ক্ষেত্রে লেখকের দুজনেরই সমান পরিমান বিনয়ী এবং স্বাভাবিক থাকা কাম্য।

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেনঃ

মন্তব্য দেবার ক্ষেত্রে আমার স্বভাবটি হলো পড়লে মন্তব্য দেই, মন থেকে যতটুকু আসে লিখেও দেই। লেখার দৈর্ঘের বিষয়টি আমার কাছে বড় বিষয় নয়। আন্তরিকতা আমার কাছে অগ্রাধিকার। বড় হলেও সমস্যা নেই, ছোট এমনকি এক শব্দের হলেও আমার মনে অতৃপ্তি থাকে না।

ব্লগ পড়ার ক্ষেত্রে আমি বাস্তবিক জীবনের চেয়েও বড় পাঠক হয়ে ওঠতে পারি নি। আগে দেখি, তারপর পড়ার সিদ্ধান্ত নেই। কোনটি সাথে সাথে পড়ে তখনই মতামত দিই; আবার কোনটি পরে মন্তব্য দিই; আবার কোনটি পড়িই দেরিতে। একটি পোস্টে মন্তব্য দেবার মতো পড়তে হলে একটু সময় তো লাগেই। তাই অনেক ভালো লেখা পড়ার মতো সময়টা হয়ে ওঠে না।  

লেখায় আপত্তি থাকলে, সাধারণত এড়িয়ে যাই - ইতিবাচক দিকটি নিয়েই কথা বলি। তবে বড় রকমের ভুল বা অসঙ্গতি থাকলে, পাবলিক হিসেবে সংক্রমিত হবার আশংকায় কিছু বিষয় তুলে ধরি। লেখক যা-ই মনে করুক। পাবলিক ব্লগে পাঠকের মন্তব্য কতটুকু গ্রহণ করবেন, সেটি লেখকের বিষয়। আমার দায় থেকে আমি মন্তব্য করে যাই। 

মোহাম্মদ জমির হায়দার বাবলা বলেছেনঃ

আপনার পোস্টর এর পাশাপাশি মন্তব্যগুলো বেশ গুরুত্বের । অনেকের মন্তব্যে বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।

সহ-ব্লগাররা কেউ কেউ পোস্টকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য  বিভিন্ন রকম টিপস্ দেন। আবার অনেকে ভুল ত্রুটি সংশোধনের কথা বলে মন্তব্য দেন। অনেক পোস্টদাতা বিষয়টিকে সম্মানের সাথে নিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দেন। আবার অনেকে এটাকে মানতে রাজী নন তারা পরবর্তীতে মন্তব্যদাতার উপর ক্ষেপে যান।  তাই যেখানে ভালো লাগে না সেখানে কিছুই লিখি না। মনে হয় এটা পদ্ধতি নিরাপদ।

আবার এ ধরনের  পোস্ট যেখানে  মন্তব্যকারি পোস্টের লেখক বা কবির   ভুলভ্রান্তির/তথ্য-উপাত্ত বা উদৃতির কথা ভুল ধরিয়ে দিলেন!!!!!!!! অথচ মন্তব্যকারির তুলনায় কবি বা লেখক সাহিত্যে বা পোস্টের আলোচ্যবিষয়ের উপর অনেক বেশী দখল রাখেন।

আবার অনেকের গতানুগতিক ভালো লাগলো মন্তব্য প্রতিটি পোস্টে পেস্ট করে দেন। আমার যতদুর মনে হয় মন্তব্য দেয়ার ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কিছুটা পরিবর্তন দরকার তবে সে পরিবর্তন এত সোজা হবে না কারণ দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে পারা মানে জীবনের ব্যাপক পরিবর্তন।

(বিঃদ্রঃ এই পোস্টের নামকরণের জন্য মোঃ খালিদ উমর ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ। যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি প্রশংসাসুচক বাক্যগুলো বাদ দিয়ে তাদের মন্তব্যের বাকী অংশটুকু তুলে ধরার জন্য। তারপরও থেকে গেলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করছি।)

 

০ Likes ৩৪ Comments ০ Share ৫৪৬ Views

Comments (34)

  • - মোকসেদুল ইসলাম

    লেখা চলতে থাকুক। 

    - সনাতন পাঠক

    সুন্দর লিখেছেন, ভাল লেগেছে।  

    - জাহাঙ্গীর আলম

    ভাললাগা দিয়ে গেলাম

    Load more comments...