Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আমার দেখা সাম্প্রতিক সিনেমা -চার্লি এবং তার চকলেট কারখানা (Charlie and the Chocolate Factory)

 

চার্লি এবং তার চকলেট কারখানা (Charlie and the Chocolate Factory), টিম বার্টন পরিচালিত ছবিটি ২০০৫ সালে মুক্তি প্রাপ্ত। অসাধারণ এই ছবিটির কাহিনীকার রুয়াল ডাল। ছবিটির প্রধান দুটি চরিত্রের একটি হল উইলি ওঙ্কা আর অন্যটি চার্লি বাকেট, যাতে অভিনয় করেছেন যথাক্রমে জনি ডেপ এবং ফ্রেডি হাইমোর। ছবিটি কয়েক বছর আগের। হয়তো অনেকেই দেখে থাকবেন। তবে যারা দেখেননি তাদের জন্য শেয়ার করলাম।

 

ছবিতে দেখা যায় চার্লি বাকেট একজন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের এক কিশোর বালক। সে তার ঠাকুরদা জো, ঠাকুরমা জোসেফিন, দাদু জর্জ এবং দিদিমা জর্জিনাকে নিয়ে বাবা মিস্টার বাকেট ও মা মিসেস বাকেট এর সাথে এক জরাজীর্ণ গৃহে থেকে। তার বাবা মিস্টার বাকেট একটি টুথ পেস্ট ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন, যেখানে তার কাজ হল টুথ পেস্ট এর টিউব এর ক্যাপ লাগান। তার সামান্য রোজগার দিয়েই ওই সাত সদস্যের পরিবারটি দিন যাপন করে। তাদের বাড়ীর কাছেই ছিল বিখ্যাত উইলি ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরি, যা দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি পুনরায় চালু হয়েছে। চার্লির ঠাকুরদা জো ওই ফ্যাক্টরিতেই একসময় কাজ করতেন। কিন্তু যখন সেটি বন্ধ হয়ে যায়, অন্যান্য কর্মীর সাথে সাথে তার চাকরিও চলে যায়।  

 

উইলি ওঙ্কা একদিন ঘোষণা দেন যে, তার ফ্যাক্টরিতে তৈরি ওঙ্কা ক্যান্ডি বারের মধ্যে পাঁচটি গোল্ডেন টিকিট রয়েছে। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের যে পাঁচজন ভাগ্যবান শিশু ওই পাঁচটি টিকিট পাবে, তাদের তিনি তার চকলেট ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখার দুর্লভ সুযোগ দেবেন আর সাথে থাকবে বিশাল পুরস্কার যা যে কারোরই কল্পনার অতীত।

 

 

পর্যায়ক্রমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের চার শিশু চারটি গোল্ডেন টিকিট পেয়ে যায়, যা বেশ ফলাও করে টিভি ও পত্রিকায় প্রচার করা হয়। বলে রাখা ভালো যে ওই চার শিশুর প্রত্যেকেই ভীষণ ধনী পরিবারের সন্তান এবং তারা ওই গোল্ডেন টিকিট পেতে তাদের প্রাচুর্য ব্যবহার করেছে। বেচারা চার্লিরও ইচ্ছা হয় একটি গোল্ডেন টিকিট পেতে। কিন্তু তার সে সুযোগ খুবই সীমিত। তারা এত গরীব যে, বছরে মাত্র একবারই মাত্র সে ওঙ্কা’র চকলেট এর স্বাদ নেয়ার সুযোগ পায়, আর সেটা হল তার জন্মদিনে। তার পরেও তার বাবা -মা তার জন্য একটি ওঙ্কা’র চকলেট নিয়ে আসে। চার্লি তার বাবা-মা ও বয়োজ্যেষ্ঠ পরিজনকে সাথে নিয়ে ধীরে ধীরে ওঙ্কা’র চকলেটের প্যাকেটটি খোলে। তার ইচ্ছা যদি পঞ্চম টিকিটটি পায়! কিন্তু নিমেশেই তার স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। একদিন ঠাকুরদা তাকে চুপি চুপি ডেকে নিয়ে তার জমানো শেষ সম্বলটুকু দিয়ে আর একটি চকলেট কিনতে বলেন। যেন আর একবার চার্লি তার ভাগ্যটাকে যাচাই করতে পারে। কিন্তু প্রথম বারের মত এবারও তারা বিফল হয়।  চার্লি আরও মূষরে পরে যখন ফেলে দেয়া সংবাদ পত্র সংগ্রহ করে সে জানতে পারে যে, রাশিয়ার এক বালক পঞ্চম টিকিটটি পেয়েছে। কিন্তু সহসাই সে জানতে পারে যে পঞ্চম টিকিট পাওয়ার খবরটা ভুল ছিল। তাই তার স্বপ্নটাও আবার জেগে ওঠে।           

 

চার্লি হঠাৎ একদিন একটি দশ ডলারের নোট কুড়িয়ে পায়। সে টাকাটি নিয়ে তার ভাগ্যটাকে শেষ বারের মত যাচাই করার সুযোগ পায়। দোকান থেকে একটি ওঙ্কা ক্যান্ডি বারের প্যাকেট কিনে যেই না খুলল, চার্লি যেন তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। এ যে তার স্বপ্নের গোল্ডেন টিকিট! দোকানে থাকা কয়েকজন ক্রেতা টিকিটটা দেখেই চার্লিকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সেটা কিনে নেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু দোকানদার তাদের প্রতিহত করে চার্লিকে টিকিটটা নিয়ে শীঘ্রই বাসায় চলে যেতে বলে।

  

চার্লি দৌড়ে গিয়ে তার পরিবারের কাছে তার গোল্ডেন টিকিট পাওয়ার কথা বলে। ওর ঠাকুরদা তো খুশিতে ধেই ধেই করে নাচ শুরু করে দিল। তার ইচ্ছা তিনি চার্লির সাথে  ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে যাবেন। কিন্তু চার্লি বেঁকে বসল। সে বলল ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরি দেখার চেয়ে এই গোল্ডেন টিকিট বেঁচে দেওয়াই ভালো। তাতে তার দরিদ্র পরিবারের আর্থিক সহায়তা হবে। চার্লির দাদু জর্জ, চার্লিকে বোঝায় যে, যে সুযোগ সে পেয়েছে, টাকা তার কাছে তুচ্ছ। সুতরাং চার্লির সুযোগটা নেয়া উচিৎ।

 

চার্লি তার ঠাকুরদাকে নিয়ে দাদু ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরি পরিদর্শনে বের হয়। সেখানে তার অন্য চার কিশোর কিশোরীর সাথে দেখা হয়, যারা তাদের অভিভাবকদের নিয়ে ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরি দেখতে এসেছে। ফ্যাক্টরির মালিক উইলি ওঙ্কার সাথে তারা ভিতরে গিয়ে নানা রকম মজার মজার অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে একে একে চার প্রতিযোগীই তাদের কর্ম দোষে বাদ পড়ে যায়। থেকে যায় শুধু চার্লি।  উইলি ওঙ্কা চার্লিকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তিনি চার্লিকে ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরির উত্তরাধিকারী করতে চান। তবে শর্ত এই যে, চার্লি তার পরিবারের কাউকে সাথে নিতে পারবে না। প্রথমে খুশী হলেও তার পরিবার যেতে পারবেনা বিধায় চার্লি এই সুযোগ প্রত্যাখ্যান করে।     

 

উইলি ওঙ্কা’র বাবা ছিলেন একজন খ্যাতনামা ডেন্টিস্ট। তিনি উইলিকে ছোট বেলায় চকলেট খেতে দিতেন না। সে যাতে তা না খেতে পারে এ জন্য তার দাঁতে ব্রেস পরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু উইলি একদিন চকলেটের স্বাদ নিয়ে এতই অভিভূত হয়ে পড়ে যে সে একজন  কনফেকশনার হতে চায়। কিন্তু তার বাবার প্রবল বাঁধার মুখে সে গৃহ ত্যাগ করে তার স্বপ্নের পথে পা বাড়ায়।

  

 

চার্লি উইলি ওঙ্কাকে তার হারানো পরিবার তথা তার বাবাবে খুঁজে পেতে সাহায্য করে। উইলি দেখে যে তার বাবা তার বিশাল চকলেট ফ্যাক্টরি গড়ার সাফল্যের কথা পত্রিকা কেটে কেটে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন। উইলি ওঙ্কা ফিরে পায় তার বাবাকে। উইলি ওঙ্কার সবই ছিল শুধু পরিবারের আন্তরিক বন্ধন ছাড়া। এত দিনে সে পরিবারের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারে। ফল স্বরূপ উইলি ওঙ্কা চার্লিকে তার ওঙ্কা’র চকলেট ফ্যাক্টরিতে উত্তরাধিকারী করে নেন। অনুমতি দেন তার পরিবারকে সাথে নিতে। এভাবেই শেষ হয় সুন্দর এই কাহিনী চিত্র।

 

শিশুরা তো বটেই সিনেমা প্রেমী যে কারোরই ভালো লাগবে -চার্লি এবং তার চকলেট কারখানা (Charlie and the Chocolate Factory)। সময় পেলে দেখে নিতে পারেন। 

 

(০১/০২/২০১৪ ইং)

০ Likes ২৪ Comments ০ Share ৭৪৩ Views

Comments (24)

  • - সাদাত সবুজ

    খুব ভাল ছবি তুলেছেন । চিতাকে ভালই সৌন্দর্য লাগছে ।

    • - সালাহ্‌ আদ-দীন

      সুন্দর মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা জনাব। 

    - সাদাত সবুজ

    খুব ভাল ছবি তুলেছেন । চিতাকে ভালই সৌন্দর্য লাগছে ।

    • - সালাহ্‌ আদ-দীন

      সুন্দর মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা জনাব। 

    - সাদাত সবুজ

    খুব ভাল ছবি তুলেছেন । চিতাকে ভালই সৌন্দর্য লাগছে ।

    • - সালাহ্‌ আদ-দীন

      সুন্দর মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা জনাব। 

    Load more comments...