Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Faisal Habib

৯ বছর আগে

আবার কুকুর

একবার বাংলা পরীক্ষায়  রচনা আসলো গরু।তো শিক্ষক খাতা দেখার সময় লক্ষ্য করলেন যে সব ছাত্র ই মোটামুটি প্রাসাঙ্গিক ভাবেই লেখা শেষ করেছে কিন্তু একটা ছাত্র রচনা লিখেছে এভাবে '' গরু একটি চতুষ্পদী গৃহপালিত জন্তু।গরুর আছে চার টি পা,দুটি শিং,দুটি কান,একটি লেজ।আমার পোষা একটি গরু ছিল। একদিন আমার গরু টা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল হঠাত কোথা থেকে যেন একটা কুত্তা এসে গরু টারে কামোড় দিল। গরু টা মারা গেল।ভাগ্য খারাপ থাকলে যা হয় আর কি। বদ কুত্তা।

রচনা শেষ।

স্যার এই রচনার বড় সড় গোল্লা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারলেন না।যাইহোক,পরবর্তী পরীক্ষায় রচনা আসলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।আবারো প্রায় সব ছাত্র ছাত্রী ঠিক ঠাক ভাবে লেখা শেষ করলো কিন্তু এবারো শিক্ষক আবিষ্কার করলো সেই ছাত্রটি নতুন কোন সাহত্য কর্ম রচনা করে এসেছে। রবীন্দ্রনাথ কে নিয়ে তার রচনা টি ছিল এরকম, '' বাংলার সাহিত্যের আকাশে যে সকল কবি সাহিত্যিক নিজেদের দ্যুতি ছড়িয়েছেন তাদের মধ্যে সূর্য রুপ জাজ্বল্যমান ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল প্রাইজ লাভ করেন।এই বিশ্বকবি রবীদ্রনাথ ঠাকুর তার ''সমব্যথী'' কবিতায় লিখেছিলেন,

যদি খোকা না হয়ে আমি হতেম কুকুর-ছানা

তবে পাছে তোমার পাতে আমি মুখ দিতে যাই ভাতে

তুমি করতে আমায় মানা?

এর থেকে আমরা আনুমান করতে পারি যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর,

ভালবাসতেন কুকুর।কিন্তু ভালবাসলে কি হবে এই কুকুর এ তার জীবনের ছোট খাট কাল হয়ে দাঁড়ালো। আমরা সবাই জানি যে রবীন্দ্রনাথ শেষ বয়সে এসে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতেন।সবাই ভাবেছিল এই খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটার কারন বুঝি বার্ধ্যক্য।কিন্তু এখানে আমার অনুমান সম্পূর্ন ভিন্ন। শেষ বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থাকতেন শীলাইদহের কুঠি বাড়িতে। কুষ্টিয়ার শিলাইদহে এমনিতেই সে সময় কুকুরের উৎপাত বেশি ছিল,তারপর তখন ছিল আবার ভাদ্র আশ্বিন মাস।তো এক সন্ধ্যায় হয়তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শীতল পাটির উপর বসে কোন কবিতা রচনা করছিলেন,তখন হঠাত নিচে কয়েকটা কুকুর ঘেউ ঘেউ শুরু করল।এতে রবীন্দ্রনাথের মন সংযোগ চরম ভাবে ব্যাহত হল, তো তিনি একটা হ্যারিকান হাতে নিয়ে নিচে নেমে এলেন কুকুর গুলো তাড়াতে।তখন ঘটে গেল এক অভাবনীয় ঘটনা।কুকুর গুলো তার দিক তেড়ে এল,ভয় পেয়ে রবীন্দ্রনাথ উল্টা দিকে দৌড় দিতে গিয়ে কিসে বেঁধে যেন হুড়মুড় করে পড়ে গেলেন।চিৎকার করে কেউ কে যে ডাকবেন সেই উপায় ও নাই কারন আছাড় খেয়ে তার ধুতি খুলে গেছে। তাই লজ্জার মাথা খেয়ে কেউ কে ডাকার সাহস তার হয়েছিল না।অপরদিকে রবীন্দ্রনাথ আছাড় খাওয়াতে তার হাতের হ্যারিকেন মাটিতে পড়ে আগুনের সঞ্চার হয়েছিল আর তাতেই বোধহয় কুকুর গুলি পালিয়েছিল।যাই হোক, রবীন্দ্রনাথ নিজে নিজেই বহু কষ্টে উঠলেন এবং তারপর তিনি আবিষ্কার করলেন যে তার ডানপায়ের হাড্ডিতে প্রচণ্ড ব্যাথা।এজন্যই আমি মনে করি বাকি জীবন তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতেন।তো এখানে দেখতে পারি কুকুরের কারনেই রবীন্দ্রনাথের কপালে নেমে এলো ঘোর অন্ধকার।কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আর কি।

বদ কুত্তা।''

রচনা শেষ।

 

শিক্ষক দেখলেন এত ভাল মুসিবত। সব রচনার মধ্যে কুকুর টেনে নিয়ে আসে।এরপর শিক্ষক মনে মনে ভাবলেন এবার এমন রচনা দেব যে কুকুর টেনে আনার কোন সুযোগ ই থাকবে না।যেই ভাবা সেই কাজ,পরের পরীক্ষায় ছাত্র ছাত্রীদের ''রকেট''  রচনা লিখতে বলা হল।

এক সময় পরীক্ষা শেষ হল।সব  ছাত্র ছাত্রী খাতা জমা দিয়ে চলে গেল।

এবার শিক্ষক সবার আগে ঐ ছাত্রের খাতা খুঁজে বের করে রচনা পড়া শুরু করলেন,

বর্তমান যুগ আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ,আর এই যুগের একটি বিশাল আবিষ্কার হল গিয়ে রকেট।রকেট হচ্ছে একটি মহাআকাশ যান যেটাতে করে আমরা মহাআকাশে যেতে পারি।সেরমক একটি মহাকাশ যান ছিল Sputnik 2 । এই মহাকাশ যানে করে প্রথম বারের মত একটি রুশ কুকুর পৃথিবীর প্রথম জীব হিসেবে পৃথিবীর কক্ষপথ পরিক্রমণের সৌভাগ্য অর্জন করেছিল।কুকুরটির নাম ছিল লাইকা ।Sputnik 2 এরএই মহাকাশ অভিযান সফল হলেও তা সফল ভাবে ফিরে আসতে পারেনি পৃথিবীর বুকে।তবে এখানে আমার মনে হয়, মহাকাশে অত্যধিক চাপ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে লাইকার মাথা খারাপ হয়ে যায় এবং সে পাইলটকে কামড়ে দেয় অতঃপর Sputnik 2 নিয়ন্ত্রন হারিয়ে, হারিয়ে যায় মহাআকাশের বুকে।মানুষের কপাল খারাপ থাকলে যা হয় আরকি, মহাকাশে গিয়াও নিস্তার নাই।
বদ কুত্তা।’’

রচনা শেষ।
পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষক ও শেষ।


০ Likes ১ Comments ০ Share ১২২৭ Views