Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস-২০১৪, (International Migrants Day) আজ


১৮ ডিসম্বের, আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস (International Migrants Day) আজ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় জাতিসংঘ ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর ১৮ই ডিসেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। অভিবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও স্বার্থ সংরক্ষণ, তাদের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে স্বচ্ছ ও গতিশীল করা অত্যাবশ্যক। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ অভিবাসন-দিন বদলের লক্ষ্য অর্জন।’ আর জাতিসংঘের নির্বাচিত প্রতিপাদ্য বিশ্বব্যাপী 'কেউ পেছনে থাকবে না'! জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে বর্তমানে অভিবাসীদের সংখ্যা ২৩ কোটি ২০ লক্ষ। অভিবাসীদের প্রায় ৫০ শতাংশই দেশে নায্য মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত। এ প্রেক্ষাপটেই জাতিসংঘ এ বছর Living no One behind ' লিভিং নো ওয়ান অন বিহাইন্ড ' বা কেউ পেছনে থাকবে না' এই প্রতিপাদ্য নির্বাচন করেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের গোড়ার কথাঃ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্যাপক হারে অভিবাসন ও বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে ঘিরেই এ দিবসের উৎপত্তি। শুরুর দিকে তারা ১৮ ডিসেম্বরকে নির্ধারণ করে এবং অভিবাসীদের ঘিরে ‘আন্তর্জাতিক ঐক্য দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। উল্লেখ্য ১৯৯০ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ অভিবাসী শ্রমিক ও দেশে তাদের রেখে আসা পরিবারের অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন করেছিল। এই সম্মেলনে অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি ৪৫/১৫৮ প্রস্তাব আকারে গ্রহণ করে। এর প্রেক্ষাপটে ১৮ ডিসেম্বর দিনটিকে লক্ষ্য করে মাইগ্রেন্ট রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন মাইগ্রেন্টস রাইটসসহ বিশ্বের অনেক সংগঠন অভিবাসীদের স্বার্থ রক্ষার্থে বৈশ্বিকভাবে প্রচারণা চালায়। ১৯৯৭ সাল থেকে ফিলিপিনো এবং অন্যান্য এশীয় অভিবাসী সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করতে শুরু করে। অবশেষে ১৯৯৯ সালের শেষার্ধে অনলাইনে ব্যাপক প্রচারণার ফলে জাতিসংঘের মুখপাত্র ১৮ ডিসেম্বরকে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য হন। ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ১৮ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস হিসেবে উদ্‌যাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। 

অভিবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। অভিবাসী ভাইবোনেরা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের ১৬০টি দেশে প্রায় ৯০ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৩ জন বাংলাদেশি কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৭৪ হাজার ২১৩ জন নারী কর্মী। বর্তমানে বছরে প্রবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহের হার ৬১ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। যা বিগত সময়ের চেয়ে প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেশি। যাদের অর্থে সচল আমারেদর অর্থনীতির চাকা তাদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে যেতে আগ্রহী অভিবাসীদের কর্মের সুযোগ সৃষ্টিতে নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধানসহ অভিবাসনের ক্ষেত্রে প্রতারণারোধ, অভিবাসন ব্যয়হ্রাস, প্রশিক্ষণ, ঋণপ্রাপ্তিতে সহজকরণের মাধ্যমে অভিবাসীর অধিকার নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক। এছাড়াও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন সাধন এবং নিরাপদ অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনসচেতনতা প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার সর্বোত্তম ব্যবহার বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করতে পারে।

১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে (International Migrants Day) প্রবাসে কর্মরত সকল বাংলাদেশি অভিবাসী ভাইবোন ও তাদের পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
০ Likes ০ Comments ০ Share ৭১৮ Views