Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

অ্যাব্স সোহেল

১০ বছর আগে

আধুনিকতা নাকি অশ্লীলতা ??

 

লিখাটা একটা কবিতা দিয়েই শুরু করিঃ

 

পর্দার কথা শুনলে আজ

হাসে আধুনিক নারী

মধ্য যুগের আইন মেনে

কেমনে চলতে পারি?

আমার সাধের রূপ

যৌবন হবে মূল্যহীন,

হাজার প্রেমিক এক নিমিষে

হবে যে বিলীন । (collected)

 

 

 

 

পাশ্চাত্যে মেয়েদের নরমাল পোশাক-আশাকই হয়ে গেছে শরীর দেখানো মতো। আমাদের কারো চোখে এটা খারাপ, আবার কারও বা হট, কামুকি (HOT, SEXY)লাগলেও তাদের কাছে এটা স্বাভাবিক।

“তাদের কাছে এটা স্বাভাবিক” – এই কথাটা আমরা প্রায়ই বলি এবং পুরো ব্যপারটা পাশ কাটাই কালচার এর দোহাই দিয়ে । কিন্তু একটি বার ভাবুন- ছেলেরা নিজেদের শরীর ঢেকে ঢুকে রাখবে আর মেয়েরা যথাসম্ভব তা দেখিয়ে বেড়াবে, ছেলেরা মানবিক গুন দিয়ে আকর্ষণীয় হবে আর মেয়েরা দেহ দিয়ে হবে –  এটা যখন একটা সমাজের চোখে “নরমাল”  লাগে তখন সেই সমাজের আর কি বাকি থাকে??  (যেভাবে চলছে তাতে হয়ত একদিন এটাই “NORMAL” লাগবে- আর খারাপ মনে হবে না ।)

 

অনেকে নারীদেহকে “অনিন্দ্য সৌন্দর্য”, “দেখার মতো জিনিস”, “সুন্দর সৃষ্টি” ইত্যাদি উপমা দিয়ে সেটাকে “মেলে ধরার” পক্ষপাতী । কিন্তু এই “নারীদেহ” কাদের কাছে “অনিন্দ্য সৌন্দর্য”, “দেখার মতো জিনিস”, “সুন্দর সৃষ্টি” ??  অবশ্যই তা ছেলেদের কাছে । আর মানেন আর না মানেন এর কারণ “যৌনতা” ছাড়া আর কিছু না । (কিছু অনবদ্য শিল্পকলায় হয়ত সত্যিকার অর্থেই Neutrally শুধুমাত্র সৌন্দর্যের sense থেকে এর বন্দনা করা হয়েছে- কিন্তু তার সংখ্যা নগণ্য ।)

 

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে আমরা ধরেই নিয়েছি ছেলেদেরকে আনন্দ দেয়া, যৌন সুড়সুড়ি দেয়াই মেয়েদের কাজ !!! তাই নয় কি?? নারীরা শো-কেসে সাজানো শো পিস এর মতো – প্রদর্শিত হওয়াই তাদের কাজ । পুতুলের প্রাণ নেই-তাই কেউ তাকে আনন্দ দেয় না । ছেলেরাও মেয়েদেরকে আনন্দ দেয়ার জন্য জননাঙ্গ অর্ধেক বের করে ঘুরে না, জননাঙ্গ চেপে ধরা বা ফুলে থাকা পোশাকও পরে না । কিন্তু মেয়েরা তাদের জন্য এটা করে এবং খুব আনন্দের সাথেই করে এবং তারপর “নারী স্বাধীনতা”নিয়ে লাফালাফি করে । তারা নিজেরাই নিজেদেরকে ছেলেদের পণ্যে পরিনত করেছে – নিজেদেরকে শুধুই আনন্দের খোরাক বানিয়ে ফেলেছে । কি উন্নত যুগে আমরা বাস করছি!! আর আমাদের মনের অজান্তেই (কারণ আমরা মন বন্ধ করে রাখি, ভেবে দেখি না কিছুই) এই নোংরা চিন্তাধারা আমাদের মনে গেঁথে যাচ্ছে। অসভ্য বর্বর যুগে আবার ফিরে যাচ্ছি আমরা নতুন আঙ্গিকে ।

 

 আমাদের দেশের বেশীরভাগ মেয়ের (মেয়ে=মেয়ে,মহিলা সব) প্রিয় টিভি চ্যানেল হিন্দি সিরিয়ালের চ্যানেলগুলো । সিনেমা ও সিরিয়ালের জগতই তাদের কল্পনার জগত । নাজিয়ার মতো ২-১ টা মেয়ে আছে যারা কিনা M.I.T তে গিয়ে বুঝিয়ে দেয় মেয়েরা সবদিক দিয়েই সব পারে ।কিন্তু অন্য মেয়েরা তা বুঝতে চায় না। আর তাই ম্যাথ অলিম্পিয়াডে ১০ টা ছেলের পর ১ টা নাজিয়াকে পাওয়া যায় ।কিন্তু সভ্য সমাজের সব মেয়েই তো এখন পড়াশুনা করে- তাহলে সমস্যাটা কী এবং কোথায়??

সমস্যাটা হল স্কুল, কলেজ, প্রাইভেট, বয়ফ্রেন্ড, “JUST FRIEND” এই কয়টা জিনিস ই তাদের জগত (ছেলেদেরও তাই) । তার সাথে আছে সিনেমা-সিরিয়াল ও তথাকথিত আবেগ এর ভার্চুয়াল জগত ।এর বাইরে আর কিছু নাই। আধুনিকতা প্রকাশের জন্য বসুন্ধরা সিটিতে বান্ধবী, বয়ফ্রেন্ডও “JUST FRIEND” দেরকে নিয়ে ঘোরা যায়, ভ্যালেন্টাইন্স-ডে তে কার্ড-চকলেট কেনা যায় ।

 

হিন্দি-ইংলিশ নোংরামি দেখে আমাদের দেশের মানুষও নোংরামিটাকেই স্মার্টনেস ভাবছে । মেয়েরা ভাবছে নিজের শরীরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার মতো জামা কাপড় পরাটাই স্মার্টনেস, নারীমুক্তি, আধুনিকতা আর অনেক বেশি Cool.. । তাই নিজের স্তনের আকৃতি সবাইকে দেখিয়ে চাপা কামিজ, ওড়নাবিহীন কামিজ(ওড়না থাকলেও হয়ত গলায় না হয় কাঁধের একপাশে রাখে), টি-শার্ট , ফতুয়া পরে তারা ঘুরে বেড়ায় । জামার গলা হয় স্তনের ক্লিভেজ দেখানোর জন্য যথেষ্ট আর হাতা হয় মাইক্রোস্কপিক । আর ছেলেরাও HOT girlfriend অথবা “JUST FRIEND “ বানানোর জন্য এসব মেয়ের জন্য পাগল হয়ে থাকে । যা দেখে অন্য নরমাল মেয়েরা হীনমন্যতায় ভোগে ও তারাও একসময় তার বান্ধবীর মতো “HOT” হবার আপ্রাণ চেষ্টা করে । আমাদের সবার এখন ধারনা হয়ে যাচ্ছে মেয়েদের সৌন্দর্যই সব, তারা দেহ-সর্বস্ব ।

হয়ত তাই হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন তার ‘তোমাকে’ বইয়ে-

"হরিণ সুন্দর চোখে, আর নারী সুন্দর বুকে"।।

 

এখানে ১টা জিনিস Clear করা দরকার – টিশার্ট , ফতুয়া মেয়েরা পরতে পারবে না- আমি কিন্তু তা মনে করি না। ড্রেস ১টা পরলেই হল । কিন্তু টা যেন হয় শালীন ।আর এই শালীনতা যেমন টিশার্ট পরে রক্ষা করা যায়, তেমনি বোরকা পরেও ভঙ্গ করা যায়। Easy Feel করার জন্য, Relaxation এর জন্য টিশার্ট অবশ্যই best । কিন্তু...

এখন মেয়েরা যেসব টিশার্ট পরে সেগুলো কি নরমাল টিশার্ট ?? মেয়েদের জন্য টিশার্ট আলাদা- ওগুলোর হাতা হয় ছোট, গলা হয় বড় আর সাইজ এমন হয় যেন তা লেপটে থাকে গায়ের সাথে- যে পরে তার দিকে তাকালেই যেন তার ফিগার আমাদের চোখকে টেনে ধরে রাখে , তার হাঁটাচলার সাথে সাথে স্তনের স্পষ্ট নড়াচড়া যেন আমাদেরকে পাগল করে দেয় । শরীরের বাঁকগুলো আমাদের বুকে কাঁপন তোলে, তাকে বিছানায় পাবার জন্য মন ছটফট করে । বন্ধুর কানে ফিসফিস করি- “দোস্ত, মালটারে দেখ......উফফফ......দোস্ত...******......*******...”

 

(*আর ইদানিং তো ওড়না কাঁধের একপাশে ফেলে রাখা রীতিমত কমন স্টাইল হয়ে গেছে !! আর তাইতো বলতে ইচ্ছা করে-

“আপা, ওড়না কি গলায় পরে না কাঁধে?? একে তো পরেন পাতলা জামা, তার উপর হয়ত ছোট না হয় হাতা কাটা। কি শিখলেন? বাসায় জানে? :P)

 

অথচ সূরা নূরে আল্লাহ পাক আদেশ দিয়েছেন,

"নারীরা যেন তাদের গায়ে ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখে।"

 

নারীদের ক্ষেত্রে এমন কোনো রঙিন পোশাক পরে বাইরে বের হওয়া নিষেধ যা অন্যের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে। নারীর পোশাক যেন এত ক্ষীণ ও পাতলা কিংবা লাগোয়া না হয় যা তার দেহ আবরণের জন্য যথেষ্ট নয়। ঢিলেঢালা এবং শালীন পোশাকেই নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য ও সুরক্ষা নিহীত।

পুরুষদের আকৃষ্ট করার জন্য সুগন্ধি মেখে ঘরের বাইরে বের হতে রাসুল (সা.) নিষেধ করেছেন। তিনি এমন পোশাক পরতেও মানা করেছেন যা পুরুষদের পোশাকের সাথে মিলে যায়। বিধর্মী নারীদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোনো পোশাক পরিধান করা এবং গর্ব ও অহঙ্কারের জন্য দামি পোশাক পড়ে মানুষকে দেখানো থেকেও বিরত থাকতে ইসলাম নারীকে তাগিদ দিয়েছে।

 

এ বিষয়টিও মনে রাখতে হবে, রাসুল (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, সুন্দর সুন্দর জামা পরিধান করা কিংবা পোশাকে পরিপাটি হয়ে থাকা অহঙ্কার নয়। বরং আল্লাহ পাক সুন্দর এবং তিনি বান্দার সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। এগুলো অহঙ্কার হিসেবে তখনই গণ্য হবে যখন কেউ সুন্দর জামা গায়ে দিয়ে অন্যকে তুচ্ছ করে এবং নিজেকে সবার চেয়ে দামি ও সুন্দর ভাবতে থাকে।

 

খুব সংক্ষেপে ইসলামের পোশাক সম্পর্কিত নির্দেশনা কিছুটা হলেও বুঝতে পারা যায় । আরবদের পোশাক কিংবা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির পোশাক দেখে অন্ধ অনুসরণ নয়, বরং পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নববীতে যেভাবে মুসলমান পুরুষ ও নারীদের জন্য আবরণের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে মেনে চলার মধ্যে প্রকৃত শান্তি  ও সম্মান এবং নিরাপত্তা নিহিত।

 

 

 

বউ পেটানো, নারী নির্যাতন আগে ছিল অশিক্ষিতের কাজ । এখন তা ভদ্র সমাজে ডুকে গেছে। বুয়েটে পড়া ছেলে তার ৭ বছর প্রেম করে বিয়ে করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালায় । এর মতো হতাশা আর কয়টা আছে ?? আর এর পেছনে কারণ ?? কারণ মেয়েরা আছে দোটানায়। কর্মক্ষেত্রে, বিদ্যাপীঠে মেয়েরা এখন সামাজিকভাবে অনেক সম্মানিত। কিন্তু মেয়েদের একটা দল তাদের নিজেদের আত্মসম্মান, মনুষ্যত্ব বিসর্জন দিয়েআধুনিকের দোহাই দিয়ে বিপরীত লিঙ্গের কাছে দিনদিন সেক্স টয় তে রূপান্তরিত হচ্ছে। যাদের সংখ্যা কিছুদিন আগেও খুবি কম ছিল। আর তারাই বোধকরি দিনদিন দলে ভারি হচ্ছে।।

Circle এর মধ্যে শুরু করে একজন, বাকিরা কয়দিন পর তাল মিলাতে গিয়ে নিজেরাও কথিত আধুনিক পথের যাত্রী বনে যায়।

 

আর কাঁচা মাংস লোভী কিছু পুরুষ মুখোশধারী ওইসব নারীদেরকে বাহ বাহ দেয়। তাল মিলিয়ে শ্লোগান ধরে- নারী কণ্ঠের বলিষ্ঠ সহযোগী হয়। বস্তুত, তা কেবলই ওই বুদ্ধি-বিবেক বিলুপ্ত নারীদের ভোগের আশায় ।

 

এখন যেকোনো কিছুর “সৌন্দর্য বর্ধনের”  জন্য নারী ব্যবহৃত হয় । খেলার উত্তেজনা বাড়াতে, দর্শকদেরকে তুষ্ট করতে তাদেরকে নাচানো হয় । যদি ছেলে মেয়ে সবাই নাচত – একই রকম জামা কাপড় পরে তাহলে না হয় সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়ার চেষ্টা করা যেত । কিন্তু তা তো হয় না। Cheerleader  হয় মেয়েরা ।অনেক সময় দলে কিছু ছেলেও থাকে, কিন্তু তারা “প্রধান আকর্ষণ” না। তাদের ড্রেস আপ ও থাকে স্বাভাবিক । দিন দিন আমরা যে আদিম যুগে ফিরে যাচ্ছি এটা কি তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ না ??

 

 

কোরআন মাজিদে এরশাদ হয়েছে

‘হে বনী আদম’ তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকার ও বেশভূষার জন্য আমি তোমাদের পরিচ্ছদ দিয়েছি এবং তাকওয়া পরিচ্ছদই সর্বোকৃষ্ট লেবাস। পোশাকের অন্যতম উদ্দেশ্য হল সৌন্দর্য লাভ। তাকওয়া পরিচ্ছদই সর্বোকৃষ্ট বিধায় প্রত্যেক নর-নারী ও বালক-বালিকা সবার পোশাক হবে তাকওয়াপূর্ণ পোশাক, যা শালীন, মার্জিত, রুচিশীল ও শোভনীয়।

 

কিন্তু দুঃখের বিষয় হল

ফুল যেমন আপন মনোহর রূপ এবং সৌরভ বিলিয়ে তার ফুল জন্মকে সার্থক করে, তেমনি বর্তমান যুগের মেয়েরাও তাদের রূপ সুধা এবং দেহের প্রতিটি বাঁক প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে পুরুষের মধ্যে যৌন উন্মদনা সৃষ্টি করে নারী জন্ম সার্থক করে চলছে ।

 

কুরআন-এর এই দিক নির্দেশনা মেনে চললে- কেউই আর নিজের দেহের দিকে নজর দিবে না- নজর দিবে সুন্দর কাজে , সৃজনশীলতায় , জ্ঞান-বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে , মানবতায় ।

 

 

 



 আজকে সন্ধ্যায়(১৬-১০-২০১৩ ইং) ধানমন্ডির সীমান্ত স্কয়ার (আগের রাইফেলস স্কয়ার) এর বাইরে বসে গল্প করছিলাম । তখনকার পরিবেশটা হঠাত এই কথাগুলো লিখতে বাধ্য করে।

*কথাগুলো আমার মা-বোনের জাতিকে হেওপতিপন্য করার জন্যে লিখিনি।

*কিছু অশ্লীল কথা আছে, বস্তুত মূল জিনিস তুলে ধরতে এইটুক ব্যবহার করতেই পারি।

*কিছু কথা, বানী, উক্তি বিভিন্ন সাইট থেকে কপি আছে। 


 

(বি. দ্রঃ লেখা তেমন একটা লিখি না, যদি কোন ভুল/ত্রুটি থাকে তবে সংশোধনে সাহায্য করলে কৃতজ্ঞ থাকবো।)

 

-অ্যাব্স সোহেল 



 

১ Likes ৫ Comments ০ Share ১২৬৩ Views

Comments (5)

  • - মুহাম্মাদ আরিফুর রহমান

    অবশেষে নন্দিনী আসল ...

    • - সকাল রয়

      ধন্যবাদ।

    - জেড এইচ সৈকত

    কয়দিন পূর্বে একবার সাধ জেগেছিল নন্দিনী হয়ে কবিতা গুলোর জবাব লিখি। সময় হয়ে উঠেনা।

    • - সকাল রয়

      লিখেন।   পড়ার জন্য বসে আছি।