Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

আজ ২৯ সেপ্টেম্বরঃ বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ- ২০১৪



২৯ সেপ্টেম্বর, আজ বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ- ২০১৪।
প্রতি বছর বিশ্ব শিশু দিবস ঘিরে ৫ অক্টোবর শিশু অধিকার সপ্তাহ পালন করা হলেও এবছর ঈদ ও পূজার কারণে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিশু অধিকার সপ্তাহ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিশু। এই শিশুরাই দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের কর্ণধার, তাদরে হাতেই আগামীর পৃথিবীর ভার। তাই শিশুদেরকে আদর্শ মানুষ হিসেবে, শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে এবং জাতির কর্ণধার হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিটি বাবা-মা প্রতিটি দিনই চেষ্টা করে থাকেন। বাবা-মা ও অভিভাবকের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনও শিশুদেরকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে । তাদের এ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই প্রতি বছরের একটি দিনকে বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। শিশু দিবস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় পালিত হয়ে থাকে। বুলগেরিয়ায় শিশু দিবস পালন করা হয় ১লা জুন তারিখ আর ইরানে পালন করা হয় অক্টোবর মাসের ৮ তারিখে। সনাতন ধারায় শিশুরা তাদের পরিবারের কাছ থেকে জন্মদিনের ন্যায় বিশেষভাবে মনোযোগ লাভ করে। ১৯৯৬ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ শিশু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ১৭ মার্চ শিশু দিবস পালিত হলেও এবার ২৯ আগস্ট বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও আজ সোমবার পালন করা হচ্ছে বিশ্ব শিশু দিবস। একই সাথে আজ থেকে শুরু হচ্ছে শিশু অধিকার সপ্তাহ- ২০১৪। \
\
বিশ্বের সকল শিশুর অধিকার সংরক্ষণের বিষয়টি উপলব্ধি করে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশও শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী দেশগুলোর অন্যতম। জাতিসংঘ ১৯৮৯ সনে শিশু অধিকার সনদ ঘোষণার বহু পূর্বে ১৯৭৪ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ শিশু আইন প্রণয়ন করেন। সরকার জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী শিশু অধিকার সংরণ, শিশুর জীবন ও জীবিকা উন্নয়নে প্রশিণ প্রদান, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচি পরিচালনাসহ শিশু নির্যাতন বন্ধ, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের বৈষম্য বিলোপ সাধনে বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এর পাশাপাশি প্রণয়ন করা হয়েছে ‘জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি-২০১০’ ও ‘জাতীয় শিশুনীতি-২০১১’। শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশে পুষ্টি, শিা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও বিনোদনের কোনো বিকল্প নেই। শিশুদের সংরক্ষণ, কল্যাণ ও শিক্ষার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্যে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব কর্মসূচি ও নীতিমালা শিশুর শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু তারপরও ফুলের মতো শিশুরা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে , গত কয়েক বছরের যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের সংখ্যা- ক্ষতিগ্রস্ত সৈনিকদের চেয়েও বেশি । কেবল যুদ্ধই যে শিশুদের ভালভাবে বেড়ে উঠার পথে বাধার সৃষ্টি করছে তাই নয়, দারিদ্র্য, পুষ্টিহীনতা ও প্রাণঘাতী রোগ শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত করছে । জাতিসংঘের প্রকাশিত এক তথ্য থেকে দেখা গেছে, উন্নয়নমুখী দেশগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৪০ হাজার শিশু অনাহারে মারা যাচ্ছে । তাছাড়া এইডস রোগের কারণেও অসংখ্য শিশুর ক্ষতি হচ্ছে । বর্তমানে পৃথিবীর এইডস রোগে আক্রান্ত ৪ কোটি ৩ লাখ লোকের মধ্যে ২৩ লাখ হচ্ছে ১৫ বছরের কম বয়সের শিশু ।\
\
বাংলাদেশের শিশুরা ভালো অবস্থায় নেই । ২০০৬ সালের হিসাব অনুযায়ী ৪৯ লাখ শিশু শ্রমিক রয়েছে বাংলাদেশে । অভাবের তাড়নায় তারা রাস্তায় পাথর ভাঙ্গে, গার্মেন্টসে কাজ করে, ঠেলাগাড়ি চালায়, কাগজ কুড়ায়, পার্কে ফুলের মালা বিক্রি করে এমনকি এ বয়সেই চুরি করছে ও পকেট মারার মত অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তারা ভালভাবে বেড়ে উঠার কোন স্বপ্ন দেখে না। কোনমতে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারলেই তারা খুশী হয় । কিন্তু অন্ন, বস্ত্র,বাসস্থান, চিকিৎসাসহ সব ধরণের মৌলিক প্রয়োজন থেকে বঞ্চিত থাকায় তারা সুর্বিসহ জীবন যাপন করে। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের শিশুদের কথাও উল্লেখ করা যেতে পারে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ ভাগই শিশু। বর্তমানে সেদেশে প্রায় ৩৮ কোটি শিশু রয়েছে। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হলো, বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশী শিশু শ্রমিক রয়েছে ভারতে । কিছুদিন আগে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ৫০ শতাংশ শিশু অপুষ্টির শিকার । এছাড়া দেশটির ৬৫ ভাগ শিশুই শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার। ভারতের স্কুলগুলোতে লিঙ্গ বৈষম্যও করা হচ্ছে বলে ঐ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া কন্যা শিশুর ভ্রুণ হত্যা দেশটিতে মারাত্মকভাবে বেড়ে চলেছে।\

'শিশু শ্রম, শিশু নির্যাতন, শিশু পাচার বন্ধ করো' কেবল এসব শ্লোগান দিলেই হবে না এ ব্যাপারে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে । এজন্য আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। একথা অনস্বীকার্য যে আজকের শিশু স্নেহ-মমতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মুক্ত চিন্তা-চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে গড়ে উঠলে আগামী দিনের বিশ্বে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশ্ব হয়ে উঠবে সুন্দর ও শান্তিময়। তারা যেন উপযুক্ত নাগরিক হিসাবে গড়ে উঠতে পারে সে জন্য শিশুদের শিক্ষা যাতে নিশ্চিত করা যায় সেজন্য সরকারকে আরো বাস্তব ভিত্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে। শিশুদের মা-বাবাকে বুঝাতে হবে তাদেরকে যেন স্কুলে পাঠায় যাতে করে তারা কমপক্ষে প্রাইমারী শিক্ষা অর্জন করে ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর ও সফল করতে পারে। শিশুদের সৃজনশীল মেধা, মানসিক বিকাশ এবং মননশীলতার উন্নয়নে বাস্তবমূখী পদক্ষেপ নিশ্চিত করা হলেই ‘বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ- ২০১৪’ কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য লাভ করবে।
০ Likes ০ Comments ০ Share ১০৫৭ Views

Comments (0)

  • - রব্বানী চৌধুরী

    ভালো লাগলো ছড়ার কথামালা, শুভেচ্ছা জানবেন, ভালো থাকবেন।  

    • - এনামুল হক মানিক

      ধন্যবাদ আপনাকে ।