সারা বাংলাদেশের মানুষকে এক করার জন্য শুধু মাত্র 'ক্রিকেট' খেলাই যথেষ্ট। যাই হোক, ঘটনা হইলো- বাংলামটর থেকে বাসে করে বাংলাবাজার যাচ্ছিলাম। প্রচন্ড গরম, প্রতিদিনের মতোন প্রচন্ড জ্যাম আর বাস ভরতি যাত্রী। বাস একটু-একটু করে এগুচ্ছে, ঘামে আমার শার্ট ভিজে গেছে। শাহবাগ পার হতেই আমার সামনের সিটে প্রেমিক-প্রেমিকা বসল। প্রচন্ড ভিড় বাসেই দেখি তাড়া জড়াজড়ি করছে, কোনো লজ্জা শরম নাই। ছেলেটার সাহস বেশি, সে একবার মেয়েটার কোমড়ে হাত দিচ্ছে, একবার গলা জড়িয়ে ধরছে।
আমার হঠাৎ খুব রাগ লাগল, আমি বললা...ম, বাসের মধ্যে কি শুরু করছেন? ছেলেটা রেগে-মেগে আ্রমাকে বলল- তুই কি ভাবছিস(?), এটা আমার প্রেমিকা না, এটা আমার বউ। ডব্লিউ আই এফ ই, ওয়াইফ মানে বউ। আমি বললাম, আপনার কি ঘর নেই? বিছানা নেই? উত্তেজিত ছেলেটি ক্ষিপ্ত মেজাজে বলল- তোর সমস্যা কি? আমাকে চিনিস(?), আমি কে (?) আমি ছাত্রলীগ করি। আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্লা...ব্লা...ব্লা... ( আমি খুব ভালো করেই জানি এই ছেলে ছাত্রলীগ না)।
আমি খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে। প্রেমিক ছেলেটির কথা শুনে কেন জানি, আমার খুব হাসি পাচ্ছিলো। আমার হাসি দেখে প্রেমিক ছাত্রলীগওয়ালা আরও রেগে যাচ্ছে। আমি হাসি মুখে বললাম- বউ তো আমারও আছে, কিন্তু আমার পক্ষে তো বাসের মধ্যে এই রকম করা সম্ভব না। শালীনতা বলে একটা কথা আছে ভাই।
ছেলেটা আরো বেশি রেখে মেগে আমাকে বলল, আজ তোকে শিক্ষা দেব। বল, তুই কোথায় নামবি? আমি হেসে বললাম প্রেসক্লাব। ছাত্রলীগওয়ালা সাথে সাথে পকেট থেকে মোবাইল বের করে কাকে যেন ফোন করে কি কি বলল। তারপর আমাকে বলল- আজ পা নিয়ে বাসায় ফিরতে পারবি না। তখন ছাত্রলীগের সাথে থাকা মেয়েটি বলল- জানু বাদ দাও। ছেড়ে দাও। পুলাপান মানুষ।
অফিসের কাজে বাসে আমাকে প্রতিদিনই যাতায়াত করতে হয়। এই রকম সস্তা হামকি-ধামকি, গলাবাজি প্রায়ই দেখি, শুনি। এদের ফলাফল গলাবাজি পর্যন্তই। যাই হোক, এইবার আমি ছেলেটাকে বললাম, অনেকক্ষন ভদ্র ব্যবহার করেছি, আর না। আর একটা কথা বলবি কানটা ধরে বাস থেকে নামিয়ে দেব- হারামজাদা। বদ কোথাকার। এই কথা বলার সাথে সাথে- বাসের সব যাত্রী বলল, ভাই মুখে বলার দরকার নেই। ওকে কান ধরে বাস থেকে নামিয়ে দেন। তখন ছাত্রলীগওয়ালা আমাকে বলল, কান ধরার দরকার নেই বস। আমরা নেমে যাচ্ছি। সর্যি।