মৌলিক কোনো সমস্যা না হয়েও আমাদের মৌলিক সমস্যার চেয়ে ও বেশি যদি কোন সমস্যার কথা চিন্তা করা হয় তাহলে মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায় সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে আমাদের বিদ্যুত চাহিদা। প্রায় ২০০০ মেগাওয়াট ঘাটতি এবং কয়েকশ কোটি টাকা বার্ষিক ক্ষতি নিয়ে এদেশের পাওয়ার সেক্টর এক প্রকার ধুঁকে ধুঁকে কোনোমতে বেচে আছে। আসলে আমাদের দেশের সীমিত সম্পদ দিয়ে এর চেয়ে ভাল কিছু আশাও করা যায় না। বিশেষ করে গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি বিদ্যুত ঘাটতি ছিল।
মূলত এই ঘাটতি ও আমাদের চাহিদাকে ব্যালেন্স করার জন্যই লোডশেডিং। ব্যাপারটা আরেকটু পরিস্কার করি। ধরি কোন এলাকায় এমনিতে ঘন্টায় ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুতের দরকার। ধরি এখানে ১০ কিলোওয়াটেরই একটা পাওয়ার প্লান্ট আছে। সুতরাং মোটামুটি এখানে ইলেকট্রিসিটি পাওয়া যাবে। কিন্তু পিক আওয়ারে (যেমনঃ সন্ধ্যা, অফিস টাইম) এলাকার বিদ্যুত চাহিদা ১২ কিলোওয়াটে চলে যায়। এক্ষেত্রে কি হবে???? এবার আমরা এই এলাক ৪ ভাগে (প্রচলিত শব্দঃ phase) ভাগ করলাম। প্রতি ভাগে পিক আওয়ারে ৩ কিলোওয়াট করে বিদ্যুত দরকার। এবার আমরা এক সাথে তিন ভাগে (৩+৩+৩=৯) দিলাম। তাহলে বাকি এক ভাগে তখন লোডশেডিং তখন লোডশেডিং হবে। অর্থাৎ প্রতি ভাগই তাহলে তিন ঘন্টা অন্তর অন্তর লোডশেডিং এর শিকার হবে। কিন্তু যদি চাহিদা বেড়ে যায়, সেক্ষেত্রে লোডশেডিং এর মাত্রাও বেড়ে যাবে। এবার তাহলে আসি মুল প্রসংগে।
লোডশেডিং এর সুযোগে আমাদের দেশের আই.পি.এস. কোম্পানিগুলো ভালই ব্যবসা করেছে। ফলে এখন মোটামুটি লাইট, ফ্যানের মত আই.পি.এস. ও আস্তে আস্তে আমাদের ঘরের খুব কমন একটা বস্তুতে পরিণত হচ্ছে। কিন্তু আমরা কি কখনও এটা ভেবেছি যে এর ফলাফল আসলে আমাদেরই ক্ষতির কারণ হতে পারে। আসুন এর কয়েকটা কারণ আলোচনা করি। প্রথমত জেনারেটরের মত আই.পি.এস. আলাদা কোনো পাওয়ার জেনারেশন সিস্টেম নাই। এর ফলে আমারা আই.পি.এস. থেকে আসলে আমরা পি.ডি.বি’র সঞ্চিত পাওয়ারটাই পাই। এর মানে আসলে আমরা সীমিত সময়ের জন্য আমাদের চাহিদা মেটালেও মুলত আমরা আমাদের ক্ষতিই করছি। কারণ আগেই বলেছি আমাদের ঘাটতিটাকে ব্যালেন্স করতেই মূলত লোডশেডিং।
কিন্তু আমরা যদি আই.পি.এস. এর মত আলাদা স্টোরেজ মেশিন ব্যবহার করে পাওয়ার স্টোর করতে থাকি তাহলে আল্টিমেটলি আমাদের চাহিদা কমার চেয়ে আরও বাড়বে। এমনকি আমাদের লোডশেডিং বেড়ে যাওয়ার পিছনেও এই আই.পি.এস. এর অনেক ভুমিকা আছে। অর্থাৎ এক অর্থে আমরা আই.পি.এস. ব্যবহারকারীরা ২৪ ঘন্টাই পি.ডি.বি’র বিদ্যুত সুবিধা নিচ্ছি। আর এর ফলাফলস্বরুপ আমরা নতুন করে যে ঘাটতি তৈরী করে দিচ্ছি তার ফলাফল ভুগছে অন্যরা। অর্থাৎ আমাদের ক্ষুদ্র চাহিদা পুরণের এই মেশিনটি এক অর্থে আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর মানে আমরা আসলে চাহিদা পূরণ করছি না, চাহিদা তৈরী করছি।
[পূর্বপ্রকাশিত]
Comments (4)
প্রতিযোগিতার জন্যে পাঠানো লেখাগুলো নিয়ে যদি আলাদা কোন বিভাগ বানানো সম্ভব হত তাহলে বোধহয় পাঠকদের জন্যে খুব সুবিধা হত। অনেক লেখার ভিড়ে লেখাগুলো খুঁজে পেতে বেশ সমস্যা হয়।
ইতিমধ্যে লেখা বাছাই শুরু হয়ে গেছে। বাছাই কৃত লেখা গুলো কেবল মাত্র বিচারক গন দেখতে পাবেন।
আপনার প্রস্থাবটি বিবেচনায় রাখা হইলো।
আপডেটের জন্য ধন্যবাদ। আর মুতাসিমের সাথে আমিও একমত। হয় আলাদা কোন বিভাগ কিংবা আলাদা কোন পোষ্ট কিংবা এই পোস্টেই প্রতিযোগিতার লিংকগুলো তুলে ধরা যায়। ব্যাপারটা আন্তরিক ভাবে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ সঞ্চালক সাহেব।
ইতিমধ্যে লেখা বাছাই শুরু হয়ে গেছে। বাছাই কৃত লেখা গুলো কেবল মাত্র বিচারক গন দেখতে পাবেন। এছাড়া আলাদা ভাবে পোষ্ট গুলো দেখানো ব্যবস্থা করা হবে। বিষয়টি বিবেচনায় রইল। এছাড়া আপনি বিচারক হিসেবে সবই পোষ্টই দেখতে পাবেন।
সময় বাড়ানোই কৃতজ্ঞতা জানাই ..। একটু বড় লেখা (১৪১৩শব্দ) ব্লগে একপোষ্টে প্রকাশ করা যাচ্ছেনা। লেখা পুরোপুরি আসেনা । এই সমস্যার সমাধান করলে ভাল হত। সতত শুভকামনা
ব্লগে পোষ্টে কোন শব্দ সীমা নেই। তাই এক সঙ্গে ১৪১৩ শব্দ প্রকাশে কোন বাধা নেই। বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হলো। বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষনে রাখলাম। এর আগ পর্যন্ত আপনি ধারাবাহিক পোষ্টে গিয়ে ২ পর্বে প্রকাশ করুন।
ধন্যবাদ