Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

ইফ্ফাত রুপন

৮ বছর আগে

আংটি

১।

শ্রাবণীর ফোন বেজে যাচ্ছে সেই সকাল থেকেই।

কিন্তু তার ফোনটা ধরতে ইচ্ছে করছে না। নিশ্চয়ই তার বন্ধুরা তাকে ফোন করছে। কাল শ্রাবণীদের পরীক্ষা। প্রায় সব পরীক্ষার আগেই তারা সব বন্ধুরা মিলে ভার্সিটির খোলা ক্যাম্পাসে পড়তে বসে। অনেকটা গ্রুপ স্টাডির মতো। তবে পড়াশুনা থেকে আড্ডা আর ফাজলামোই হয় বেশি। শ্রাবণীর তার বন্ধুদের কাছে আলাদা একটা গ্রহণ যোগ্যতা আছে। আর তার কারণ হচ্ছে শ্রাবণীই তাদের গ্রুপের এক মাত্র পড়ুয়া মেয়ে। স্যারদের নোট্‌স থেকে শুরু করে তাদের লেকচার সব কিছু ধরতে গেলে প্রায় মুখস্তের মতো থাকে শ্রাবণীর। তাই পরীক্ষার আগে সবাইকে পড়া আর নোট্‌স বুঝিয়ে দেয়ার এক মাত্র মানুষটি হোল সে। এর জন্য তার বন্ধুরা তার উপর অনেকটা নির্ভরও করে থাকে। আর শ্রাবণীও কোন দিন তাদের পড়া বুঝিয়ে দেয়ার ব্যাপারে মানা কিংবা গাফিলতি করে নি। নিজের যতো কাজ যতো সমস্যাই থাকুক না কেন সে সবসময় ছুটে গিয়েছে তার বন্ধুদের কাছে।

কিন্তু আজকের ব্যাপারটা ভিন্ন। আজো শ্রাবণীর খুব ইচ্ছে করছে তার বন্ধুদের কাছে ছুটে যেতে। কিন্তু সে পারছে না। তার কারণ আজ সন্ধায় শ্রাবণীকে দেখতে আসবে। শ্রাবণীর বিয়ের কথা বার্তা চলছে। সে এখন পর্যন্ত তার কোন বন্ধুকে বলে নি এই কথা। খালি রিয়াদকে বলেছে। 

রিয়াদ আর শ্রাবণী একসাথে পড়াশুনা করছে আজ প্রায় ২ বছর ধরে। সারাদিন তারা সব বন্ধুরা একসাথে ঘুরে বেড়ালেও শ্রাবণীর নজর সবসময় থাকতো রিয়াদের দিকে। একসাথে চলতে চলতে কখন যে ভালবেসে ফেলেছিল সে রিয়াদকে তা সে নিজেই জানে না। কিন্তু আজ পর্যন্ত শ্রাবণী কোন দিন মুখ ফুটে রিয়াদকে বলতে পারে নি তার ভালোবাসার কথা। রিয়াদও কখনো তাকে ভালবাসে নি। কিংবা হয়তো বুঝার চেষ্টাও করে যে শ্রাবণী তাকে কতোটা ভালবাসে। আজ গ্রুপ স্টাডির মধ্যে রিয়াদও থাকবে। শ্রাবণী চাচ্ছে না আজকে অন্তত রিয়াদের সামনে পরতে। আজকে রিয়াদকে দেখলে বেশ খারাপ লাগবে তার। শ্রাবণী জানে সে কোন দিনও মুখ ফুটে রিয়াদকে বলতে পারবে না যে সে তাকে কতটা ভালবাসে। আর রিয়াদও হয়তো কোন দিন বুঝতে পারবে না।

শ্রাবণীর ফোন আবারো বাজতে শুরু করলো। মলি ফোন করেছে। শ্রাবণী এবার ফোনটা ধরল।

হ্যালো মলি।

কিরে কোথায় তুই? সেই সকাল থেকে তোকে আমরা ফোন করে যাচ্ছি। ফোন ধরিস না কেন?

আমি দেখি নি রে আমার ফোনটা সাইল্যন্ট করা ছিল। আর আমার শরীরও কিছুটা খারাপ। তাই শুয়ে ছিলাম।

শরীর খারাপ হলে চলবে না। তুই ক্যাম্পাসে চলে আয়। আমরা সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছি। তুই না এলে কি আড্ডা জমে বল। চলে আয়।

নারে আজকে আমি আসতে পারবো না। শরীর বেশ খারাপ করেছে। আজকে বরং তোরা আড্ডা দে। আমি পরের বার থেকে তোদের সাথে থাকবো।

আচ্ছা বুঝেছি আমার কথায় কাজ হবে না। ধর রিয়াদের সাথে কথা বল।

না মলি রিয়াদকে দেয়া লাগবে না...... হ্যালো মলি.........

শ্রাবণীর কথা শেষ হবার আগেই মলি তার ফোনটা রিয়াদের হাতে দিয়ে দেয়। শ্রাবণী কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,

হ্যালো।

ওপাশ থেকে রিয়াদ বলে উঠে, কিরে আমাদের আবার তুই কবে থেকে হ্যালো বলা শুরু করলি? সরাসরি নাম ধরে ডাকবি। বলবি “হ্যাঁ রিয়াদ”।

হ্যাঁ রিয়াদ।

এইতো গুড গার্ল। এখন কোন কথা না বলে চলে আয়। আমরা তোর জন্য অপেক্ষা করছি।

কিন্তু রিয়াদ তোকে তো আমি বলেছি.........

আরে ওটা কোন ব্যাপার না। সন্ধার আগেই তোকে আমি বাসায় পৌঁছে দেব। এখন চলে আয় তো। আমি ফোন রাখলাম।

শ্রাবণী এক দৃষ্টিতে তার ফোনটার দিকে তাকিয়ে থাকে। নিজের অজান্তেই তার চোখের কোনে অশ্রু দেখা দেয়...।

 
২।

ক্যাম্পাসে আজ বেশ সুন্দর বাতাস বইছে। বসন্তের শুরুর দিকের বাতাস। কিছুদিন হোল বসন্ত মাত্র শুরু হয়েছে। শ্রাবণীরা গোল হয়ে তাদের ক্যাম্পাসের মাঠে বসে আছে। কেউ আড্ডা দিচ্ছে কেউবা গান গাইছে গিটার হাতে আর কেউ কেউ শ্রাবণীর কাছে টুকটাক কিছু ম্যাথ বুঝে নিচ্ছে। সবাই কিছু না কিছু করছে এক মাত্র রিয়াদ ছাড়া। সে ক্যাম্পাসের রেলিং এর উপর চুপচাপ বসে আছে। তাকিয়ে আছে সামনের দিগন্ত জোড়া মাঠের দিকে। বাতাসে চুল উড়ছে রিয়াদের। বেশ সুন্দর লাগছে আজ তাকে দেখতে। শ্রাবণী কিছুক্ষণ পর পর আড় চোখে রিয়াদের দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু রিয়াদ যাতে দেখে না ফেলে তাই সাথে সাথে আবার চোখও সরিয়ে নিচ্ছে। থাক না নিজের মধ্যে কিছু অনুভূতি, যা কখনো অনুভব করার মতো নয়......

গল্প করতে করতে কখন যে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে তা কেউ খেয়ালই করলো না। বেশ গিয়েছে আজ তাদের দিনটি। শ্রাবণী, রন্টি, রিয়াদ, শাকিল, মলি, ঝিলমিল, রেহান, নাদিম, উৎপল সবাই আজ খুব মজা করেছে তারা। কাল যে তাদের পরীক্ষা সে কথা তারা বলতে গেলে প্রায় ভুলেই গিয়েছিল। সন্ধ্যায় যে যার বাসায় ফেরার পালা। সবাই মিলে অনেকটা জোর করেই শ্রাবণীকে রিয়াদের সাথে রিক্সায় তুলে দেয় তাদের বন্ধুরা। শ্রাবণী যে রিয়াদকে পছন্দ করে তা সবাই জানে। কিন্তু শ্রাবণীর নিষেধ থাকার কারণে কেউ কোনদিন রিয়াদকে তা বলে নি।  

রিক্সায় রিয়াদ কোন কথা বলছিল না। শ্রাবণী খেয়াল করেছে আজ সারাদিন রিয়াদ বেশ চুপ চাপ ছিল। সবার সাথে ততটা মিশে নি আজ সে। শ্রাবণীই প্রথম কথা বলা শুরু করলো,

কিরে চুপ করে আছিস যে?

রিয়াদ শ্রাবণীর দিকে মুখ ঘুরিয়ে তাকায়। শ্রাবণী সাথে সাথে মাথা নিচু করে ফেলে। রিয়াদের চোখের দিকে শ্রাবণী কখনো সরাসরি তাকাতে পারে না। নিজেকে কেমন যেন অপরাধীর মতো মনে হয় তার।

কই নাতো। এমনি। আজ না তোকে দেখতে আসার কথা।

শ্রাবণীর ধক করে বুকের মধ্যে একটা ধাক্কা লাগে। হয়তো রিয়াদ এখন তাকে কিছু একটা বলবে। কিছু একটা যা শুনার জন্য শ্রাবণী ২ বছর ধরে অপেক্ষা করেছে। শ্রাবণী শক্ত হয়ে বসে। মাথা নিচু করে বলে,

হ্যাঁ আসবে তো।

তুই যে আজ বের হয়েছিস তোর কোন সমস্যা হবে না? মানে আমি বলতে চাচ্ছিলাম আঙ্কেল আন্টি কিছু বলবে না?

না। কেন বলবে? আমি তো সারাজীবনে কারো সাথে প্রেম করি নি যে বিয়ের কথা শুনে পালিয়ে যাবো কিংবা বয়ফ্রেন্ড এর কাছে ছুটে যাবো।

রিয়াদ হালকা একটু হেসে বলল,

তোর অতো সাহসও নেই। তুই কাউকে পছন্দ করলেও তাকে যেয়ে জীবনে বলতে পারবি না যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। আর তুই করবি প্রেম। তাই আঙ্কেল আন্টি তোকে নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা করেন না।

হ্যাঁ রে তুই ঠিক কথাই বলেছিস।  

ছেলে কি করে রে?

আমি জানি না এখনও। শুধু শুনেছি আমাদের ভার্সিটিতেই নাকি আগে পড়ত।

ও আচ্ছা তাহলে তো আমাদেরই বড় ভাই।

হ্যাঁ।  

নাম কি ওনার?

আতিক না কি যেন এখন ঠিক মনে পরছে না।

বিয়ের পর তাকে অনেক ভালবাসবি তুই তাই না?

শ্রাবণীর বাসা এসে পরেছে। শ্রাবণী এখন রিক্সা থেকে নেমে পরবে। নামার আগে সে রিয়াদের দিকে তাকিয়ে বলল,

হ্যাঁ আমি তাকে ভালবাসবো। তোকে আমি যতটুকু ভালোবাসি তাকেও আমি ততটুকু ভালোবাসার চেষ্টা করবো।

এই বলে শ্রাবণী রিক্সা থেকে নেমে যায়। রিয়াদ এক দৃষ্টিতে শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে থাকে।

 

৩।

আজ শ্রাবণীর বিয়ে।

এভাবে এতো তাড়াতাড়ি তার বিয়েটা হয়ে যাবে তা শ্রাবণী কোনদিন কল্পনাও করে নি। পাত্র পক্ষ দেখতে এসে তাকে আংটি পরিয়ে দিয়ে যায়। আংটি হাতে পরে ১ সপ্তাহ সে শুধু এটাই চিন্তা করেছে যে এটা তার বিয়ের আংটি। শ্রাবণী কাউকে কিছু বলে নি। এমনকি রিয়াদকে পর্যন্তও না। শুধু নিজে নিজে কেঁদেছে সে। সারা দিন, সারা রাত।

গতকাল তার হলুদ গিয়েছে। তার সব বন্ধুরা এসেছে। বেশ মজাও করেছে তারা। কিন্তু রিয়াদ আসে নি তাকে হলুদ দিতে। রিয়াদকে অনেক খুঁজেছে শ্রাবণী মনে মনে। কিন্তু সে আসে নি গতকাল। আজও হয়তো আসবে না সে। শ্রাবণী আবারো তার বিয়ের আংটিটির দিকে তাকায়। তার আশে পাশে বেশ মানুষজন। সবাই তাকে ঘিরে আছে। কেউ তার ছবি তুলছে কেউবা তার সাথে টুকটাক কথা বলছে। সবাই বেশ ব্যাস্ত। কিছুক্ষণের মধ্যে পাত্র পক্ষ এসে পরবে। শ্রাবণীর সব বন্ধুরাও এসে পরেছে। কিন্তু রিয়াদ আসে নি এখনো।

সন্ধ্যা প্রায় হয়ে এলো। শ্রাবণীর বিয়ের পালা এখন। কিছুক্ষণের মধ্যে বর পক্ষ চলে আসবে। শ্রাবণী একা একা স্টেজে বসে আছে। তার আশে পাশে এখন তার ছোট ছোট ভাই বোন গুলো ছাড়া আর কেউ নেই। সবাই এখন বরপক্ষকে বরণ করতে ব্যাস্ত। তার দিকে তাকানোর সময় এখন কারো নেই। শ্রাবণী তার গায়ের গহনা গুলো একটু ঢিলা করে আরাম করে বসার চেষ্টা করছিলো। ঠিক তখনই তার চোখ যায় দরজার দিকে। রিয়াদ দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। শ্রাবণী কি বলবে কিছু বুঝতে পারে না। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে সে। রিয়াদ ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে তার কাছে এসে বলে,

কিরে কেমন আছিস?

শ্রাবণীর চোখে পানি চলে আসে। তারপরও নিজেকে সামলে সে বলল,

দেখতেই তো পাচ্ছিস কেমন আছি।

তোকে তো সুন্দর লাগছে।

শ্রাবণী বেশ অভিমানি সুর করে বলল,

কাল আসলি না কেন? আমাকে হলুদ দিতে আসলি না কেন?

এমনি আসি নি রে। আজো আসতাম না। তারপরও এলাম।

আজ কেন এসেছিস?

আজ এসেছি এটা বলতে যে আমি তোর বিয়ে ফ্রীতে খেয়েছি। তোকে কিছু দিতে পারি নি। আমার যাচ্ছে তাই অবস্তা চলছে। তাই ভেবেছিলাম তোর বিয়েতে আসবো না। কিন্তু তোকে দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই চলে এলাম।

শ্রাবণী আর রিয়াদ দুজনেই হেসে উঠে। গত এক সপ্তাহ সে রিয়াদকে দেখে নি। এখন ২ মিনিটের জন্য তাকে দেখতে পেয়েছে। আর এই ২ মিনিটই তার কাছে অনেক ভালো লাগছে। শ্রাবণী হাসতে হাসতে রিয়াদকে বলে উঠে,

আমাকে তোর কিছু দিতে হবে না। আমি এমনিতেই তোর কথা সারাজীবন মনে রাখব। কিছু না দিয়ে বরং ভালোই করেছিস। কিছু দিলে হয়তো বাকি জীবন তোর দেয়া জিনিসটা দেখে কষ্ট পেতাম।

বাহিরে প্রচণ্ড হই চৈ শুনা যাচ্ছে। বর পক্ষ নিশ্চয়ই এতক্ষণে চলে এসেছে। তারি প্রস্তুতি চলছে। রিয়াদ চলে আসার জন্য পা বাড়ায়। কিন্তু দুই পা এগিয়ে আবার সে শ্রাবণীর দিকে ফিরে যায়। শ্রাবণী কিছু বলার আগেই সে তাকে বলে উঠে,

শ্রাবণী, আমিও তোকে অনেক ভালবেসেছিলাম রে......

 

 

৪।

শ্রাবণী স্টেজের উপর বসে আছে। তার দৃষ্টি তার হাতের আংটিটির দিকে। চোখ বেয়ে পানি পরছে তার। তার এক ফোঁটা চোখের জল গিয়ে পরল তার আংটিটির উপর।

চোখের জলে বেশ চিক চিক করে উঠলো তার আংটিটি।

৫।

শ্রাবণীকে বসানো হয়েছে তাদের ব্যাড রুমের খাটের উপর। ঘরের অন্যান্য রুম থেকে এই রুমটি একটু ভেতরের দিকে। প্রচণ্ড কষ্টে মানুষের অনুভুতি কমে যায়। শ্রাবণী এখন আর কিছুই অনুভব করতে পারছে না।

কিছুক্ষণ পর হঠাৎ তার কাছে মনে হোল সবাই কেমন যেন বেশ হুড়োহুড়ি শুরু করেছে। হয়তো বরপক্ষের কবুল বলা হয়ে গেছে। এখন তার পালা। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে কিছুক্ষণ পর শ্রাবণীর বাবা ভেতরে এসে বলল, “তোমরা সবাই একটু বাহিরে যাও তো। শ্রাবণীর সাথে আমার একটু কথা আছে”।

সবাই বের হয়ে গেল। এমনকি শ্রাবণীর বাবাও। রুমে ঢুকল সেই ব্যাক্তি যার সাথে শ্রাবণীর কিছুক্ষণ পর বিয়ে হবার কথা।

কেমন আছো শ্রাবণী?

শ্রাবণী উত্তর দিতে পারলো না। মাথা নিচু করে রাখল।

তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।

জি বলুন।

রিয়াদ এসেছিল কিছুক্ষণ আগে আমার কাছে।

শ্রাবণীর বুক ধক করে উঠলো। রিয়াদ কেন গিয়েছিল ওনার কাছে।

শ্রাবণী দেখ আমি তোমাকে কষ্ট দিয়ে বিয়ে করতে চাই না। তুমি আমার কাছে বল। আমি ব্যাবস্থা করতে পারবো। তোমার ভয়ের কোন কারণ নেই। তোমার বাবা মাকেও আমি বুঝাব। তুমি খালি নিজে বল আমার কাছে।

শ্রাবণী বিহ্বলের মতো বলল, কি বলবো?  

তুমি কি রিয়াদকে ভালোবাসো?

শ্রাবণী ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। আতিক সাহেব আর দেরি করলেন না। অনেক কাজ বাকি পরে আছে এখনো।

 

 ৬।

আজ রিয়াদ আর শ্রাবণীর চতুর্থ বিবাহ বার্ষিকী।

আজ সন্ধ্যার পর রিয়াদ অফিস থেকে এসে শ্রাবণীকে নিয়ে বের হবে। শ্রাবণী তার জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের সংসারে আরও একজন আছে এখন। আর সে হচ্ছে রিয়াদ আর শ্রাবণীর ছেলে রিসাত।

কিছুক্ষণের মধ্যেই রিয়াদ এসে পরল। গাড়িতে উঠতে উঠতে শ্রাবণী রিয়াদকে জিজ্ঞেস করলো, আতিক ভাইয়ের কোন খোঁজ পেলে?

রিয়াদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, না শ্রাবণী।

গত চার বছর ধরে প্রতি বছর তাদের বিবাহ বার্ষিকীতে শ্রাবণী রিয়াদকে এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। আর গত চার বছর ধরে রিয়াদও তার এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেরাচ্ছে।

শ্রাবণী আর রিয়াদের বিয়েটা হয়েছিল আতিক সাহেবের কারণেই। কিন্তু বিয়ের পর ধন্যবাদটা পর্যন্ত ওনাকে দেয়ার সুযোগ পায় নি রিয়াদ আর শ্রাবণী। 

পৃথিবীতে কিছু ভালো মানুষ আছে যারা খুব কম সময়ের জন্য মানুষের জীবনে আসে। তারা যেভাবে হঠাৎ করে আসে ঠিক তেমনি হঠাৎ করেই একদিন জীবন থেকে হারিয়ে যায়। শুধু দিয়ে যায় না ভুলতে পারার মতো কিছু স্মৃতি। 

 

                                                      

০ Likes ০ Comments ০ Share ৮৬৬ Views

Comments (0)

  • - মাসুম বাদল

    খুব খুব ভাললাগা জানালাম, ভাই!!! 

    • - অনিকেত নন্দিনী

      অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

       

      ভাই! নন্দিনী কিন্তু নারী!!  

    • Load more relies...