Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Azimul Haque

৯ বছর আগে

অহিংসার জনক

ছেষট্টি বছর আগে সহিংসতায় খুন হয়েছেন তিনি। এর আগের ৭৯ বছরের জীবনকালে করে গেছেন অহিংসার চর্চা। অহিংসা দিয়ে বৃটিশ তাড়িয়েছেন, তারো আগে দীঘর্দিন দক্ষিন আফ্রিকায় অহিংসার চর্চা করে সেদেশে বসবাসরত ভারতীয়দের নানাবিধ সমস্যার করেছেন সমাধান, ন্যুনতম অধিকার নিয়ে ভারতীয়দের সেদেশে বসবাসের ব্যবস্থা করে গেছেন। ৭৯ বছরের জীবনকালের তাঁর অহিংসার চর্চা আজো ধারন করে আছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ বিশ্বের অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব, ধারন করে গেছেন আধুনিক আমেরিকার জনক মার্টিন লুথার কিং, দক্ষিন আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাসহ আরো কতো বিশ্ববরেন্য নেতা।

গত ২রা অক্টোবর ছিল এই মহান নেতা মোহনচাঁদ করমচাঁদ গান্ধীর ১৪৫তম জন্মদিন, আর গত ২০০৭ সন হতে স্বীকৃতি পাওয়া আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস। তবে দিবসটি পালিত হয় ১১-ই অক্টোবর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে। মূল প্রাবন্ধিক বিষয়টি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক জনাব মঞ্জুরুল ইসলাম। বলেন তিনি, অহিংসা আসলে একটা শক্তি, অবশ্যই ধীরগতির, তবে দীঘর্ভাবে স্থায়ী এই শক্তি। বিপরীতে সহিংসতা হচ্ছে ক্ষতি, ধ্বংস এবং এতে আসলে কোরো কোন লাভ হয়না। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ কর্তৃক ১৯১৫ সনে “মহাত্মা” উপাধীপ্রাপ্ত গান্ধী অবিভক্ত ভারতবর্ষ বিভক্ত হওয়ার অব্যবহিত পুর্বে নোয়াখালীতে দাঙ্গার সময় যখন যান সেখানে, তখন সাম্প্রদায়িকতায় নিয়োজিত অনেক প্রভাবশালী তাঁর অহিংসতায় মুগ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িকতা পরিত্যাগ করেন এবং দাঙ্গা বন্দ্ব করেন। অহিংস বানীর দ্বারাই তা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় অবস্থিত গান্ধী আশ্রম ট্রাষ্ট্রের প্রধান কনর্ধার ঝর্নাধারা চৌধুরী এবং উক্ত এলাকার সাবেক সাংসদ ব্যারিষ্টার মাহবুবুদ্দিন খোকন। অহিংসার এমনই শক্তি যে, আজো এই গান্ধী আশ্রম ট্রাষ্ট বহাল তবিয়তে কাযর্ক্রম চালিয়ে যাচ্ছে অতি আন্তরিকভাবে।

অহিংসা হিংসাত্মক কমর্কান্ডের বিরুদ্ধে বিরাট এক শক্তি। এটি একটি যুদ্ধও। চিন্তার জগতের যুদ্ধ। অন্যায় কিছু পরোয়া না করার যুদ্ধ এটা, যার সহায়তায় মার্টিন লুথা কিং, বলা যায় সহিংসতা ছেড়ে অহিংস পথের মাধ্যমে আধুনিক আমেরিকার গোড়াপত্তন করেন, যে-যুদ্ধের দ্বারা নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিন আফ্রিকায় কালোদের নায্য দাবী প্রতিষ্ঠিত করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বীজ এদেশের মানুষের মধ্যে বপন করে, সবর্শেষ এই যুদ্ধের দ্বারাই ভারতে প্রথম শান্তিতে নোবেল অজর্ন করেন শিশু অধিকার নিয়ে দীঘর্সময় ধরে কাজ করা কৈলাস সত্যার্থী। আলোচকদের কথা-বার্তায় এগুলিই উঠে আসে বারবার।

অসম্ভব শক্তিশালী এই অহিংসা। সহসা এটা অর্জন করা যায়না, দীর্ঘসময় ধরে চর্চার মাধ্যমে এটা অর্জিত হতে পারে। এসলেই, অন্ধকারকে অন্ধকার দিয়ে দূরীভূত করা যায়না, একে দূরীভূত করতে আলো লাগে আর এই আলো-ই হচ্ছে অহিংসা। ঘৃণাকে ঘৃণা দিয়েও দুর করা যায়না, ঘৃণাকে দুর করতে হলে লাগে উদার একটা মন, ’অহিংসা’ নাম যে মনের। প্রধান অতিথি মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য যথার্থ-ই।

”বতর্মান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে গান্ধী দশর্নের প্রসঙ্গিকতা” শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানে গান্ধীর অহিংসা আজো যে প্রসঙ্গিক, এটা বোঝা যায় যখন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদুত ড্যান মজিনা তাঁর বক্তব্যে কিছুদিন আগের তাঁর নোয়াখালীর গান্ধী আশ্রম পরিদর্শনের কথা এবং তাঁর নিজের ও তাঁর সন্তানের অহিংস-নীতিতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকার কথা অত্যন্ত আবেগের সাথে উল্লেখ করেন, যখন ভারতের রাষ্ট্রদুত পঙ্কজ শরন গান্ধীর অহিংস নীতির কথা স্মরন করে অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে উল্লেখ করেন ভারত সরকারের ক্লিন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইন ও ক্লিন গঙ্গা ক্যাম্পেইনের কথা।

আমাদের দেশেও অহিংস নীতিতে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন সভাপতির আসন অলংকৃত করা সিপিডির জনাব দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং সাথে অন্য আলোচকবৃন্দ।    

০ Likes ২ Comments ০ Share ৪২২ Views

Comments (2)

  • - ফারজানা মৌরি

    বাহ