লোকটা খুজতেই থাকে। আনাচে কানাচে, অলি-গলি কোন জায়গাই বাদ দেয় না। এমনকি একটা পাতাও যদি পড়ে থাকে সেটাও সে উল্টিয়ে দেখবে। তাকে কেউ চেনে না, তবে সবাই জানে। নিজেরা নিজেরা আলোচনা করে কিন্তু ভুলেও কেউ তাকে জিজ্ঞেস করে না, কি খুজছে সে? সবাই অবাক হয়ে তার খোজা দেখে।
ছোট বাচ্চারাও তার জট পাকানো চুল-দাড়ি, ছেড়া জামা কাপড়, আর কাধে ঝুলানো চটের ঝোলা দেখে পাগল ভাবলেও এড়িয়ে চলে। এমন নয় লোকটা হিংস্র। কেউ তাকে কোন রাগতে দেখেনি, কাউকে অভিষাপ দিতে দেখেনি, কারও দিকে তেড়েও যেতে দেখেনি। সবাই শুধু তাকে খুঁজে যেতেই দেখেছে। তার কোনদিকেই খেয়াল থাকে না। সে শুধু খুজতেই থাকে। মাঝে মাঝে ক্লান্ত হয়ে গেলে ফুটপাতের উপরেই কোন গাছের ছায়া বসে। উপরের দিকে মুখ করে খাবি খাওয়া মাছের মত বুক ভরে শ্বাস নিতে থাকে। শ্বাস নেওয়া শেষ হলে পাশে চটের ঝোলার ভেতরে কি যেন খোঁজে। পায় না, খুজতেই থাকে। তারপর হটাত করেই আবার খোজা শুরু করে। যেন কোন ভুলে যাওয়া কাজ মনে পড়ে গেছে।
কারো কাছে কিছু চাইতেও দেখা যায় না। অতি পরোপকারী কেউ কিছু দিলে সেদিকে ফিরেও তাকায় না। অনেকে গালাগাল দিতে দিতে চলে যায়, কিন্তু লোকটা কোন কিছুই গায়ে লাগায় না। সে শুধু খুজতেই থাকে। কেউ কেউ লাথি-ধাক্কা দেয়। তবে সেগুলো যে তার কাছে নিতান্তই ক্ষুদ্র তা তার উদোম গায়ের ক্ষতগুলো দেখলেই বোঝা যায়। লোকটার খোজা দেখে প্রায়ই রাস্তার বাচ্চারাও খুব গম্ভীর মুখে খুঁজতে থাকে। কিন্তু লোকটা সেদিকেও তাকায় না। মাঝে মাঝে আপন মনে বিড় বিড় করতে করতে খুঁজে বেড়ায়।
খুঁজতে খুঁজতে শহরের সীমানা পেরিয়ে কোন জনমানবশূন্য প্রান্তরে গেলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সেই তাকিয়ে থাকা দৃষ্টিতেও খুঁজতে থাকে দিগন্তে ডুবে যাওয়া সুর্য্যের দিকে তাকিয়ে। তারপর অবসন্ন দেহ নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে আবার ধীরে ধীরে ফিরতে থাকে শহরের দিকে। খুঁজতে খুঁজতে......।
Comments (0)
সুন্দর লাগল কবিতা
মান্নান দা
দাদা ভোট কিন্তু করে গেলাম
ভাল লিখেছেন ভাই।
ভালো লাগল কবিতাটি।