Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

অনুভবে তুমি (সৃজনশীল ব্লগিং প্রতিযোগিতা-২০১৬/ ৩য় পর্বঃ ক্যাটাগরী-২)


বর্ষাঃ শেষ পর্যন্ত তুমিও চুটিয়ে প্রেম করলে রুদ্র
? আজকাল তো প্রেমের কথা পেটের ভেতরেই রাখতে হয় পুরে বলতেও লজ্বা হয় আর ভাবতে তো কথাই নেই ।
রুদ্রঃ আফা কি আর কমু কন
গরীবের তো ঐ একখান জমিন, আসমান, সাগর-নদী।
বর্ষাঃ সব বুঝলাম এবার বলো তো তুমি কার সাথে প্রেম করছো ?
রুদ্রঃ আফা হাইসেন না, কতা দিতে ওইবো।
বর্ষাঃ কি এমন কথা বলবে যে সে কথা শুনে আমি হাসবো ? মেয়েটি দেখতে কেমন ?
রুদ্রঃ আফা সে দেখতে খুব সুন্দর, ঠিক কোকিলের লাহান। কি সুন্দর চোখ, গতর গাও বেশ লাতুস লুতুস
.এক বছর হইবো তার সাথে দেখা হইছে। যতদিন যাইতেছে ততই পাগল হইতাছি।
বর্ষাঃ আচ্ছা এবার বলো শুনি তোমার সেই মেয়ের নামটি কি ?
রুদ্রঃ আবারও কইতাছি হাইসেন না কিন্তু আফা

বর্ষাঃ আচ্ছা কথা দিলাম আমি হাসব না। তুমি বলো..?
রুদ্রঃ আফা সে মাইয়া না
সে এক পোলা। তার নাম আরমান, মানে আরমানউজ্জামান। হগলতেই আরমান বইলা ডাকে। (খিলখিল করে হেসে উঠল বর্ষা।) আফা আগেই আপনারে কইছি হাসবেন না আমি লজ্জ্বা পাই।
বর্ষাঃ ও আচ্ছা
তা তুমি ছেলের সাথে প্রেম করো।
রুদ্রঃ ক্যান আফা ছেলেদের সাথে প্রেম-টেম হয় না। হেও তো মানুষ আমিও তো মানুষ। মানুষে মানুষেই তো প্রেম হয়।
বর্ষাঃ রুদ্র সেটা বলছি না আমি তো মনে করেছি তুমি একজন মেয়ের প্রেমে পড়েছো। প্রেম ভালবাসা আসলে সবার সাথেই হতে পারে। বাবা-মা, ভাই-বোন ইত্যাদি ইত্যাদি। যাক ভাল লাগলো তোমার সাথে বলে। এটাই হলো বন্ধুত্ব।
রুদ্রঃ হাসা কইছেন আফা ?
বর্ষাঃ হ্যাঁ, সত্যি বলছি।
রুদ্রঃ আপনের লগে কতা কইয়া অনেক ভালা লাগছে আফা। আপারে খুব ভালা লাগে আমার। বন্ধু হইবেন আমার। তয় প্রেম টেম করুম না। মাইয়াদের লগে প্রেম-টেম করা ভালা না। প্রেম-টেমের থাইকা বন্ধু অওয়া বেশি ভালা।
বর্ষাঃ রুদ্র এই কথাগুলো কোথা থেকে শিখেছো বা জেনেছো?
রুদ্রঃ ক্যান আফা আপনি বই পড়েন না, আমি তো আরমান ভাইয়ের বই পইড়া এইগুলো শিখছি। তার বইয়ের নাম কি দিসে হুনবেন ?
বর্ষাঃ কি নাম দিয়েছে রুদ্র ?
রুদ্রঃ
স্পর্শের অনুভব আফা। তয় বইয়ের কথাগুলো খুব অনুভতির।
বর্ষাঃ খুব পাকা পাকা কথা শিখেছো দেখি তুমি।
রুদ্রঃ আফা হগলতেই তো পাঁকা পাঁকা কতা কয়। কেউ মনের ভেতর লুকাইয়া রাখে মনের কথাগুলা, কেউ ডাইরেক্ট কইয়া ফালায়। ডাইরেক্ট কওনটা আমার খুব ভালা লাগে। তুতুমুতু করতে ভালা লাগে না। মনের ভেতর আটকা থাকলে পরান ধরপর করে শুদু।
বর্ষাঃ খুব পেঁকেছো তুমি দেখছি। তা তুমি কি এমন কাউকে দেখেছো বা পেয়েছো যে ডাইরেক্ট কথাগুলো বলতে চাও।
রুদ্রঃ মেলা খুঁজেছি পাই না, তয় পাইয়া গেছি মনে ওয়।
বর্ষাঃ তাই নাকি ? তাহলে তো তোমার কপালা ভাল দেখছি।
রুদ্রঃ কপাল ভালা না মন্দ হেডাই তো বুঝতাছি না।
বর্ষাঃ ক্যান রুদ্র?
রুদ্রঃ যদি পায়ের চটি আমার মুখে লাগে। তয় কি করুম, হেডাই ভাবতাছি। তয় যদি এমন হয়, খোদার কসম
তার একদিন কি আমার একদিন।
বর্ষাঃ কি করবে তুমি ?
রুদ্রঃ কিছু কতা কইয়া দিমু। যে কতা গুলা তার সব সময় কানের কাছে ভাসবো।
বর্ষাঃ রুদ্র ভয় নেই তোমার, ভালো কথা বললে কেউ খারাপ কথা বলে না। যদি তুমি ভালভাবে বোঝাতে পারো, তবে সে অবশ্যই বুঝবে। আর যদি না হয় তাহলে তোমাকে বোঝাবে। এটাই ভাল মেয়েদের কাজ। (রুদ্র মাটির দিকে খেয়াল করে রয়েছে। মনে হয় কিছুই শুনেনি। আবার সব কথাই শুনেছে।)কি রুদ্র তুমি এভাবে চুপ হলে কেন ? ও মা একি ? তোমার চোখে পানি কেন ? মনের কথা বলবে আর এমন করে এখনি কাঁদছো? তুমি কথা না বললে কিন্তু আমি আর এখানে বসে থাকবো না। তোমার কথাও শুনবো না। (দুটি হাত দিয়ে রুদ্র চোখের পানি মুছে নিয়ে বর্ষার সামনা সামনি হলো।)

রুদ্রঃ আফা, মনের কথাগুলা নিয়া নয়, ভয় পাই। এখান যেভাবে তার সাথে চলি, কতা কই, আর আমার কতা যদি সে না মানে, তয় তার লগে কি এখনকার মতো কথা কওন যাইবো।
বর্ষাঃ এটাই তো ভাল একটি কথা বলেছো। সে ভাল হলে অবশ্যই বলবে। তোমার ভয় নাই। তা এবার বলো দেখি সেই মেয়েটির নাম কি ? তবে আগের বারের মতো কিন্তু ছেলের নাম বলবে না।

রুদ্রঃ না, আফা আর কমু না। হাছা কতাই কমু। আপনের ব্যাগ থেকে ঐ পানি বোতল দিবেন। খুব তিয়াস পাইছে। একটু গলা ভিজাই। (বোতলের মুখ খুলে গলগল করে ৫০০ মিলিঃ বোতলের প্রায় শেষ করে দিলো।)
বর্ষাঃ একি তুমি সব পানি খেয়ে নিলে।
রুদ্রঃ আফা আছে তো একটু।
বর্ষাঃ আচ্ছা বলো, তোমার সেই মেয়েটির নাম।
রুদ্রঃ সত্যি কমু আফা, অভয় দেন।
বর্ষাঃ দিলাম, কোন ভয় নেই বলতে পারো। (অনেকক্ষন চোখ বন্ধ করে রয়েছে রুদ্র।) কি রুদ্র তুমি বলবে না? আমি উঠলাম।

(তবুও রুদ্রের মুখে কথা ফোটে না, বর্ষা এক পা দু করে কয়েক কদম এগিয়েছে। বর্ষা তার আপন গতিতে চলতে থাকে। না বলা কথাগুলো বলা হলো না রুদ্রের। অনুভবেই রয়ে গেল রুদ্রের ভালবাসা নামক সেই বর্ষা। যেন আষাঢ়ের বানে ভাসিয়ে নিয়ে গেল রুদ্রের দেহ মন।)

মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দ্যাখে ঘুমের গভীর আবেশে, দৃশ্যমান প্রতিটি স্বপ্ন¨ মানুষকে করে তুলে উৎফুল্ল, শিহরিত এবং কোন না কোন সময় বেদনাহত। অথচ এসব দৃশ্যমান প্রতিটি স্বপ্নেই রয়েছে কোন না কোন অজানা কথা……….যা হৃদয়কে প্রলম্ভিত করে তোলে।

নীল আকাশ কালো হয়ে গেছে
অবিশ্রান্ত বৃষ্টি আর বিকেলের এক ঝলোক রোদ
বিষন্নতা যেন প্রকৃতির কোল জুড়েছে,
কেন যেন প্রিয় হারানোর আর্তনাদ
প্রকৃতির এমন বেদনা যেন ভাষাহীন অন্ধকারে বৃষ্টিপাত।

বৃষ্টি কি শুধুই আনন্দের ?
নাকি দু
জনার অনুভূতি
জানি বৃষ্টি কাঁদতে জানে,
জানে কাঁদাতে তাই আকাশ কাঁদে
কাঁদি আমরাও নিয়ে আনন্দ বেদনার অনুভূতি
ঠিক তুমিও তাই, আষাঢ়ের বর্ষা।

তোমার প্রতিটি বেদনাই আমার নিকট অকৃত্রিম সুখ
যখন বুঝতে পেরেছি, জানতে পেরেছি তুমিই আমার ভালবাসা
ঠিক তখন থেকেই বৃষ্টিকে স্পর্শ করি অনুভব করি তোমার স্পর্শ
তোমাকে দেখি অধির আগ্রহে আমার পানে চেয়ে থাকো
বুঝে পারি তোমার মন খারাপ,
আমার মতো তুমিও কাঁদো কিন্তু
জানি তোমার কান্না ঐ আকাশ থেকে ঝরে পড়া জলরাশি
আর আমার তোমাকে না পাওয়ার বেদনা, বলতে না পেরে গ্রহণ করেছি যন্ত্রণা।

৩ Likes ২ Comments ০ Share ৪১৭ Views

Comments (2)

  • - মাসুম বাদল

    আমার/আমাদের কিসের লজ্জা ! লজ্জাই তো আমাদের দেখে লজ্জা পায় ।

     

     

    emoticonsemoticonsemoticons

    - চারু মান্নান

    আমরা সব ক্রান্তিকালরে বেহুদা