Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

Kazi Md. Obaydul Hoq

৮ বছর আগে লিখেছেন

ক্লাইমেট চেঞ্জ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে সবাই চিন্তিত! প্রশ্ন হল আপনি কি করছেন??(পর্ব ১)

বর্তমানে ক্লাইমেটচেঞ্জ কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন সারা বিশ্বেই আলোচিত একটি বিষয়।বাংলাদেশ দুর্যোগে আক্রান্ত হবার লিস্টে সাবার শীর্ষে।এক গবেষনায় দেখা গেছে,বাংলাদেশের উপকূলে প্রতিবছর ১৪ মিলিমিটার করে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। গত ২০ বছরে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ সেন্টিমিটার। ১৯৯০-২০০৯ সালের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে,বিশেষ করে সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম,কক্সবাজার ও টেকনাফের সমুদ্র উপকূলের পানি মেপে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। গবেষকদের ধারণা- ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে পানির উচ্চতা আরো বেড়ে যাবে এবং বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে। বিশ্বে আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ ৪৫ জনের মধ্যে ১ জন জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। ফলশ্রুতিতে সেখানে প্রতি ৭ জনে ১ জন উদ্বাস্তু হবে। উদ্বেগজনক তথ্য এই যে, ১৭ ভাগ এলাকা সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে কুতুবদিয়া এলাকার ২০ হাজার মানুষ মূল ভূখন্ড ত্যাগ করে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, প্রতিদিনই মানুষ নদী ভাঙ্গন তথা জলবায়ু পরিবর্তনের খারাপ শিকার হয়ে ঢাকায় এসে বস্তি গড়ছে। এখন এই দূর্যোগ যেহেতু বন্ধ করা যাবে না,তার সাথে মানিয়ে চলা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই।আমাদের সরকার জাতীয় ভাবে এবং আন্তর্জাতিক মহল নানা ভাবে দূর্যোগের ক্ষতক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য নানা ধরনে গবেষনা এবং দিক নির্দেষনা দিচ্ছে।আজকে আমি এখানে ক্লাইমেট চেঞ্জের এর সমস্যা নিরসনে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কি করতে পারি,অথবা কি করা সম্ভব তা নিয়ে কিছু আলোচনা করব।

১.আমাদের বাসায় প্রতিটি রুমেইতো বাতি! কি বাতি ব্যবহার করেন?এখন অবশ্য বেশিরভাগ  বাসাতেই সিএফ এল বাতি ব্যবহার করা হয়,তবে আপনি যদি LED বাতি ব্যবহার করেন ,তাহলে পরিবেশ এবং অর্থ কি পরিমান সাশ্রয় হবে তা নীচের ছবিগুলো দেখলেই অনুমেয়।একটা ব্যক্তিগত উদাহরন দেই,আমি একজন কে চিনি যার তিন রুমের বাসা,কিচেন বাথরুম সব মিলিয়ে ১০০ ওয়াট বাতিও ব্যবহার করতে হয় না।আপনি যদি বাসার সবগুলো বৈদ্যতিক বাতি পরিবর্তন করে LED বাতি ব্যবহার করেন তাইলে গতমাস থেকে এই মাসে ৭০% বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।


২. সোলার সামগ্রি ব্যবহার করুন।বর্তমানে সরকার নানা পর্যায়ে সোলার পন্য ব্যবহারের ক্ষত্রে ভর্তুকি দিচ্ছে।সুযোগটি সময় থাকতে ব্যবহার করুন।আর পরিবেশ বান্ধব এই প্রযুক্তি প্রথম এ কিছুটা ব্যববহুল মনে হলেও সামগ্রিক ভাবে চিন্তা করলেই আসল অবস্থাটা অনুধাবন করা যাবে।বিদ্যুৎ ব্যবহারে ক্ষেত্রে সরকার নানা সময় নানা প্রকার নিয়ম কানুন তৈরি করে।এডজাস্ট করা ছাড়া বিকল্প নাই,তাই এইসব থেকে মুক্তির একমাত্র চাবিকাঠি হল সৌরপ্রযুক্তি।বাসার ছাদের উপরের অংশটি কাজে লাগানো যায়,দীর্ঘ পথ বেয়ে আসতে বিদ্যুতে যে অপচয় হয় তা থেকেও নিস্তার পাওয়া যায় এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে।

 

৩.ঢাকায় সম্ভবত এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যে প্রতিদিন সামর্থ্যনুযায়ী ডিজেল  পেট্রোল কিংবা গ্যস চালিত যানবাহন ব্যবহার করে না।ফুয়েল চালিত এইসব যানবহনে না উঠে সাইকেল ব্যবহার করুন।এই  সাইকেল ব্যবহারের কারনে পরিবেশ দূষন যে পরিমান কমালেন,সেটাই আপনার শহরের প্রতি আপনার কন্ট্রিবিউশান ।শারীরিক যে সুবিধাটা আপনি পেলেন,সেটা ত আপনি নিজেই বুজতে পারছেন,আমি আর কি বল্ব।বাসার প্রত্যেকের আলাদা গাড়ি থাকলেই কি তা নিয়ে বের হতে হবে,পরিবেশের অবস্থা,ভাবিষ্যতের কথা চিন্তা করুন,ইন্ডিভিজুয়াল গাড়ি বের করে জ্বালানি,ট্রাফিক সব কিছু বাড়োটা বাজানোর দরকার কি?

 

৪. নতুন জিনিস্পত্র ব্যবহার কমিয়ে আনুন।খুবি হাস্যকর কথা বললাম তাই না।কিন্তু আপনি যদি সামান্য সচেতন হন,চিন্তা করে ব্যবহার করেন তাইলে এটি মেনে চলা সম্ভব।পরিবেশবান্ধব জিনিষ্পত্র কিনুন।অফিসে কাগজের খাম পেলেন,তা অন্যকাজে আবার ব্যবহার করুন।আপনার চারপাশের গাছ কেটেই ত এই কাগজ তৈরি করা হয়েছে।পেপ্সির যে বোতল টি পেলেন,তা অন্য কাজে লাগান।এখন্ত বাগান পর্যন্ত নির্মান করা হয়।আইস্ক্রিমের যে কৌটা,মোবাইলের কভার ইত্যাদী আমাদের চারপাশে কি পরিমান আবর্জনা তৈরি করছে,একবার ভেবে দেখেছেন।

 

৫.যুক্তরাষ্ট্রে  Energy-Efficient Appliances  সুংক্রান্ত নীতিমালা গ্রহন করার কারনে জাতীয় পর্যায়ে ৫৬% বিদ্যত ব্যবহার কমেছে যা দিয়ে ওদের ৫০টি স্টেট এর মধ্যে ১২ টি স্টেট এ সারা বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।তাই আমাদের এম্নিতেই বিদ্যুতের ঘাটতি অপরিসীম।বর্তমান সরকার বিদ্যুতের সামগ্রিক অবস্থা বিচার করে অনেক উদ্যোগ গ্রহন করেছে যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।আমরা নাগরিক হিসেবে যার যা সামর্থ্য তা অনুযায়ি কাজ করা উচিত।বর্তমানে রাইস কুকার,ইলেক্ট্রির ওভেন ব্যবরিত হচ্ছে প্রচুর পরিমানে।তা আস্তে আস্তে কমিয়ে আনতে হবে।ভর্তুকি দিয়ে তৈরি বিদ্যুৎ দিয়ে রাস্তা কিংবা ফুটপাতের দোকানে সিংগারা সমুচা গরম রাখার জন্য নয়,অচিরেই ব্যবস্তা নিতে হবে।



.ঢাকায় ময়লা জমা করার জন্য কয়েক্টি  ডাম্পিং স্টেশান আছে ।মিথেন সহ নানা গ্রিন হাউজ গ্যস তৈরি হবার কারখানা বলা হয় এইসকল  ডাম্পিং স্টেশানগুলোকে।তাই আপনি যত বেশি ময়লা তৈরি করবেন,সেখান থেকে তত বেশি গ্রিন হাউজ গ্যস উতপন্ন হবে।আবার কিছু ক্ষেত্রে আবর্জনা আগুনে পোড়ানো হয়  পরবর্তিতে সেখান থেকেও নানারকম বিষাক্ত গ্যস নির্গত হয়,যা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর অন্যতম কারন।এতক্ষন যা বললাম তা হল শতভাগ সচেতন নাগরিক এর জন্য।আর যারা যত্রতত্র ময়লা ফেলেন,পরিবেশের কি ভয়ংকর অবস্থা হচ্ছে একবার চিন্তা করুন।তারপরে আছে এই ময়লা পরিবহন।কত লোক এইসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত,এক বার কি ভেবে দেখেছেন,কি করছি আমরা! অতএব প্লাস্টিকের ব্যগ ব্যবহার না করে পাটজাত দ্রব্য ব্যবহার করুন।পরিবেশ দূষনের হাত থেকে নিজে বাচুন ভাবিষ্যট প্রজন্ম ত আমার আপ্নারই পরবর্তি বংশধর,ওদের জন্য কি সামান্য চিন্তাও হয় না!!




7. গরম পানি ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন।শীতকালে গোসলের সময় গরম পানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।গিজার ব্যবহার যদি করতেই হয় তবে সেটা কমিয়ে আনুন।গোসল করা সময় দীর্ঘস্থায়ী করবেন না।আমার জন্য বলছি না!!ঘরের যে থালা বাসন থাকে ,তা পরিস্কার করতে অবশ্যই ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন,এছারা যেসব কাপড় গরম পানিতে ধোয়া হত,তা দিনে দিনে কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে।আর শীতের সময় প্রত্যেকদিন গোসলের দরকার কি!!

8.বিভিন্ন স্তরে প্যকেজিং করা পন্য ব্যবহার করা যাবে না।এটা সত্যি আপনি সচেতন বলে তা ডাস্টবিন এ ফেলবেন।কিন্তু তারপরে সেই প্লাস্টিক প্যকেটটির কি হবে?সম্প্রতি এক গবেষনায় দেখা গেছে,বিশ্বে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে বর্তমান পর্যন্ত যে পরিমান প্লাসটিক পন্য উতপাদন হয়েছে তা দিয়ে খুব সহজেই সারা বিশ্ব র্যরপিং করা যাবে,বুঝতেই পারছেন কি ভায়াবহ অবস্থা!

9.সাম্প্রতিক এক গবেষনায় দেখা গেছে উন্নত বিশ্বে প্রতিটি পরিবার যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তার ৪৫ % র বেশি ব্যবহার হয় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন তথা এয়ার কন্ডিশনিং এ।যদিও আমাদের দেশে বর্তমানে এত টা নয়।তবে শুরু হয়েছে।এসি এখন আর বিলাশিতা নয়।ক্লাইমেইট চেঞ্জের কারনে গ্রীষ্মে আমাদের ঢাকা তে যে তাপমাত্রা হয়,আরব দেশেও তা হয় না।বিশ্বাস না হলে আগামী গ্রীশ্মে চেক করে দেখবেন।রকেট সাইন্স নয়,গুগুলে ক্লিক করলেই দেখা যাবে।যখন আমাদের দেশে ৩৭ তখন সৌদি আরবের রিয়াদে ৩৪,অথবা ইরাকের বাগদাদে ৩২।তাই এখন আমাদের দেশে এসির ব্যবহার অনেক বেড়েছে।এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সারা রাত ধরে চলার কারনে ভোরের দিকে কম্বলের প্রয়োজন হয়,যা সত্যই সত্যি আপচয় ছাড়া কিছু নয়।তাই  Programmable Thermostat  ব্যবহার করতে হবে যেন একটা সয়ংক্রিউভাবে রাত বারার সাথে সাথে কমে আসে। ১৯৭৮ এর এক  "Energy Savings through Thermostat Setbacks"এক গবেষনায় দেখা গেছে Programmable Thermostat  এ যদি প্রতি রাতের ৮ ঘন্টায় ১ তাপমাত্রা কমানোর কমান্ড দেয়া হয় তাহলে তা বিদ্যুৎ ব্যবহারে ১% সাশ্রঅয় হবে।অর্থাৎ আপনি যদি ১০ ডিগ্রি কমিয়ে আনার কম্নড চালু করেন তাহলে তা ১০% বিদুয় সাশ্র করবে।

 10. সুইচ অফ।আমরা সুইচ একবার অন করলে অফ করতে ভুলে যাই।আর গ্যসেল চুলা হলে ত কথাই নাই।.একটি ম্যচ এ কাঠি বাচানোর জন্য সারারাত ধরে চুলা জালিয়ে রাখি।এই অভ্যাসটি একবারেই পরিত্যজ্য।


তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট

Likes Comments
০ Share

Comments (0)

  • - পিয়ালী দত্ত

    sundor

    - মাসুম বাদল

    খুব খুব ভাললাগা জানালাম...!!! 

    • - গোখরা নাগ

      bhalo legeche, bhai... emoticons