Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

নুরউদ্দীন রিয়াজ

৭ বছর আগে লিখেছেন

স্মৃতিকুঠীর

হাতুড়ির ঝংকার চলে সারাদিন,
রাতের বেলায়,
এক পাল কুকুরের হুংকার।
মধ্যরাতে,
ব্যালকনিতে ঢুলি।
তিনতলা দালান;
সামনে সরু গলি
নিচ তলায় আটজন,
মিলেমিশে থাকে সব,
করে গাদাগাদি।
দোতলাতে বাড়িওয়ালার বাস,
তেতলাতে থাকি শুধু,
আমি আর,
হরিজন দাস।
আমাদের ঘরটি ঠিক সিঁড়ির পাশে।
দরজার ওপাশে আধখানা ছাদ।
একঘরে দুজনার
দিনগুলি আঁটা।
তিনতলা বলি, তবে;
আসলে, চিলেকোঠা।
নোনা ধরা দেয়ালের,
ঘেমে ওঠা স্বভাব।
হতশ্রী দেয়ালের-
আলগা সব চুন সূড়কি সরিয়ে,
রক্ষে যে করেছি;
খবরের কাগজে মুড়িয়ে।
একই থালা, একই বাটি,
একই কড়াই, একই বটি।
ভাগাভাগি করি দুজনাতে,
ভ্রাতৃত্ব একাকার-
দারিদ্রের হুমকির ধ্বনিতে।
ধুলোজমা চশমার কাঁচ,
শার্টের কোনা দিয়ে বুলিয়ে;
পৃথিবীকে দেখি রোজ,
কথা বলি প্রতিদিন, কাঁদি আর-
হাসি মাথা দুলিয়ে।
আমি খুব ব্যস্ত।
ব্যস্ত, বলে ব্যস্ত?
আমি ডাক আপিসের কেরানী।
নেই কোনো পরিবার,
নেই পাশে প্রেমময়ী রমণী।
ঘর ভাড়া তিন হাজার,
মাইনে, তাও তিন হাজার,
অর্ধেকে হয় পনেরোশ;
বাকি দিয়ে সারামাস,
ইতিউতি চারপাশ,
সাথে থেকে বাড়িওয়ালার রোষও।
দুটো শার্ট, দুটো প্যান্ট,
একটি স্যান্ডোগেঞ্জি,
আর প্রতিদিন, একই অন্তর্বাস।
বছর ঘনিয়ে এলো,
টেনে ধরি নতুনের রাশ।
পুরাতনই ভালো।
নতুন কিছু?
এ যে অভিলাষ নয়;
এ শুধুই দরিদ্রের উচ্চাভিলাষ।
সকালের নাস্তা,
দুপুরের ভুড়িভোজ,
স্বপনেতে দেখি এটা সেটা।
ভূরিভোজ?
প্রতিদিন একই পদ,
আলু আর ডাল-ভাত,
কোনোমতে বাঁচি আধপেটা।
ভালো ছিলাম; যাই ছিলাম।
দিনগুলি চলে যেত অবিরাম।
কিন্তু এখন?
মাইনেটা তিন মাস ঘুরিয়ে,
অবশেষে চাকরীটা হারিয়ে;
হারিয়েছি সম্মান-লাজ।
আছে শুধু অলসতা,
আর আছে,
বেকারের কপালের ভাজ।
বাড়িওয়ালা ক্রুদ্ধ,
থাকি ঘরে বদ্ধ।
অপমান লাগে না আর গায়ে।
এভাবে আর কতোদিন?
কে? কবে? কোন দিন?
রাখে মোরে নিজ অন্ন খেয়ে।
ঘটি-বাটি সব কিছু,
ফেলে দিয়ে,
চলে এলুম।
বিদায়ে, আজ মাথা নিচু।
দূরেতে... continue reading
Likes Comments
০ Shares