ক নিশ্চিন্তপুর। মেহেরপুরের মৃতপ্রায় ভৈরব নদীর ওপর পিঠ ঠেকিয়ে কোনোমতে দাঁড়িয়ে আছে। বছর বছর নদীর খামখেয়ালি চলনের সাথে সাথে পাল্টে যায় গ্রামটির ভূগোল। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে, কচি হাতে আঁকা একটি নদী-গ্রাম। সাপের মতো লিকলিকে দেহ নিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে, গ্রামটিও অতি উৎসাহের সাথে বাকে বাক মিলিয়ে খানিকটা পথ হেঁটে পিছুটান মেরেছে। অন্যদিকে নিরন্তর মাঠ। যতদূর চোখ যায় ধানী জমি, যেখানে আকাশ-মাটি এক হয়েছে বলে গ্রামের মানুষ মনে করে, সেখান থেকে ভারত দেশের শুরু। ওদিকটাতে গ্রামটা আরেকটু হাতপা ছড়াতে পারত, কিন্তু কেন জানি তার যত চাপ এই নদীটার দিকেই। ফলে ওদিকে আয়তনে না বেড়ে নদী যেখানে যেখানে কোমর বাঁকিয়েছে সেখানে সেখানেই নতুন করে বসতি হয়েছে। নদী একটু আড়মুড়া কেটেছে তো বেদখল হয়েছে তার শরীরের খানিকটা। এই অতি নদীপ্রেমই যে নদীধংসের কারণ হচ্ছে, সে কথা ওদের কে বোঝাবে! নদীর সঙ্গে উঠোন মিশিয়ে ভ্যাদা কবির ভিটে বাড়ি। কয়েকপুরুষ থেকে তাদের বাস এখানে। কাগজে কলমে সে একদাগে দু’বিঘা জমির মালিক। কিন্তু কাঠা সাতেক নদীর চর দেখিয়ে দখল করে রেখেছে বিল্লাহ চেয়ারম্যান। বিল্লাহ চেয়ারম্যান নির্বাচিত চেয়ারম্যান না, তার সাতপুরুষে কেউ চেয়ারম্যান ছিল কিনা সন্দেহ। বছর বিশেক আগে একবার চেয়ারম্যানের ইলেকশন করেছিল বিল্লাহ, ভোট যা পেয়েছিল তা মুখে বলবার না। সেই থেকে তার নামের শেষে চেয়ারম্যান শব্দটা কে বা কারা যেন লেপে দিয়েছে, সঙ্গে একটা বায়বীয় ক্ষমতাও। ভ্যাদা কবির অবশ্য জমি হারানো নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আশেপাশের তিনগাঁয়ে একজনই কবি, সে হল ভ্যাদা, তাকে জমিজমা নিয়ে ভাবলে চলবে কেন! তাছাড়া ছেলেপুলেও হয়নি যে উত্তরসূরি নিয়ে ভাবতে হবে। আছে একখান বৌ- মিছরি সুন্দরী। দেখতে উঠের মতোন, গা-গতরে শ্রী-এর ছিটেফোঁটাও নেই, নামের শেষে তবুও বাপ-মা...
continue reading
Comments (0)
সুন্দর লেখা........