Site maintenance is running; thus you cannot login or sign up! We'll be back soon.

মাহবুবুন নূর মেহেদী

১০ বছর আগে লিখেছেন

ভোক্তা অধিকার কে ভোগ করে

১৫ মার্চ, ১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসে ভোক্তাদের নিরাপত্তার অধিকার, তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার, পছন্দের অধিকার এবং অভিযোগ প্রদানের অধিকার বিষয়ে বক্তৃতা দেন। যা পরবর্তী সময় ভোক্তা অধিকার আইন নামে পরিচিতি পায়। এরপর ১৯৮৫ সাল থেকে জাতিসংঘ ১৫ মার্চকে ভোক্তা অধিকার দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। বাংলাদেশেও এই দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়।

বাংলাদেশে ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন করা হয়। তবে আইন প্রণয়নের চার বছর অতিক্রান্ত হলেও ভোক্তারা এ আইনের সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে পারেননি। তাই বন্ধ হয়নি ভেজাল, নকল পণ্য ও ওষুধ বিক্রয়, ওজনে কারচুপি, অতিরিক্ত মূল্য আদায়, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বিক্রয়সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি।

রাজধানীর বাজারগুলোর বেশিরভাগেই নেই মূল্য তালিকা। আর মূল্য তালিকার অবস্থান এমন জায়গায় যে, ভোক্তারা সহজে যেন তা দেখতে না পারেন। আবার অনেক বাজারে তালিকায় জিনিসের নাম থাকলেও দাম নেই অথবা তালিকার দাম অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে না পণ্যগুলো। অনেক বিক্রেতাই ওজনে কম দেন। এক্ষেত্রে ওজন পরিমাপের যন্ত্রটিতে তারা ত্রুটি করে রাখেন যাতে ভোক্তারা ধরতে না পারেন। এছাড়া শাকসবজি ও ফলমূলে রঙ ও কেমিক্যাল ব্যবহার নিত্যনৈমেত্তিক ব্যাপার। বাজারগুলোয় গরুর নামে মহিষ কিংবা ছাগলের নামে ভেড়া এবং ফরমালিনযুক্ত মাছ বিক্রি হচ্ছে। দেশের সব জায়গায় প্রায় একই অবস্থা।

বেকারিগুলোয় খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। নষ্ট হওয়া খাবারগুলো বারবার ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া এসব খাবারের গায়ে মূল্য বা উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ নেই। শুধু বেকারির ক্ষেত্রে নয় বরং অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের প্যাকেটজাত খাবারের ক্ষেত্রেও অনেক নিয়ম মানছে না।

রেস্টুরেন্টের খাবারের মান ও খাদ্য উৎপাদনের পরিবেশ নিয়েও নানা অভিযোগ আছে ভোক্তাদের। অনেক রেস্টুরেন্টে একদিনের খাবার পরের দিন বিক্রি হচ্ছে। অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি ভেজাল খাবার উৎপাদন করছে তারা। অনেক রেস্টুরেন্ট দখল করে আছে ফুটপাত।

সুপার মল ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ধার্যকৃত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করছে। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের দাম ও মান নিয়েও প্রশ্ন আছে? আমদানি পণ্যের মূল্য নির্ধারণে নেই বাধা।

শুধু খাবারেই নয়, ওষুধের দোকানগুলোতে বিক্রেতারা খেয়াল খুশিমতো ভোক্তার কাছ হতে টাকা নিচ্ছেন। এছাড়া ভেজাল বা কম দামি ওষুধ বেশি দামে বিক্রির প্রবণতা তো আছেই। এক্ষেত্রে এগিয়ে ক্লিনিকগুলো। বেশির ভাগ ক্লিনিকে সেবার মূল্য তালিকাও দেখতে পাওয়া যায় না। এছাড়া সেবার নামে রোগীদের হয়রানি, টাকার লোভে অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ক্ষতিকর ওষুধ প্রদান করছে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলো।

ভোক্তা অধিকার আইনে এসব অনিয়মকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। অপরাধভেদে অনূধর্ক্ষ ১০ লাখ টাকা ও সর্বোচ্চ ৫ বছর বা উভয় শাস্তির বিধান আছে। তবে যথাযথ আইন প্রয়োগের অভাবে অপরাধীরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোয় ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।

অধিকাংশ ভোক্তাই নিজের অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞাত। বিক্রেতারাও জানেন না এই আইন ও শাস্তি সম্পর্কে। এ ব্যাপারে সরকারি প্রচারণাও কম। তবে আইন প্রয়োগ শেষ কথা নয়, জনগণের সচেতনতাই এই অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারে। তবেই স্বার্থক হবে ভোক্তা অধিকার দিবস।


১৫ মার্চ ২০১৪ আলোকিত বাংলাদেশ এ প্রকাশিত।

Likes Comments
০ Share

Comments (0)

  • - ইকবাল মাহমুদ ইকু

    অনেক ভালো লাগলো ... সত্য ঘটনা খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন :) 

    - নুসরাত জাহান আজমী

    কি ভাগ্য, একেবারে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচেছিলেন তিনি।

    - আলমগীর সরকার লিটন

    আজিজ দাদা

    শুভ কামনা জানাই--------

    Load more comments...